'গঙ্গারাম' হয়ে বড় পর্দায় ফিরছেন সকলের প্রিয় কালিন ভাইয়া, অর্থাৎ বলিউড অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠি। ২৪ জুন মুক্তি পাচ্ছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'শেরদিল:দ্য পিলিভিট সাগা'। ছবিতে পঙ্কজ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নীরজ কবি এবং সায়নী গুপ্তা।
সত্য ঘটনার ওপর অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছে 'শেরদিল:দ্য পিলিভিট সাগা'। ২০১৭ সালে বাস্তব ঘটনা পড়ার পরে, এই গল্পটি লিখেছিলেন সৃজিত। অবশেষে ৫ বছর পর এই ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে, স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে পরিচালকের।
ছবির প্রচারে এই শহরে এসেছিলেন, কলকাতার জামাই পঙ্কজ ত্রিপাঠি। ঘুরে দেখলেন তিলোত্তমা। কলকাতার ফুচকা চেখে দেখার পাশাপাশি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে ফটো সেশনেও মাতলেন তিনি।
সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে পঙ্কজ ত্রিপাঠি বলেন, "আমার জীবনের বেশীরভাগ সময় গ্রামেই কেটেছে। এই ছবিতে যে সমস্যা দেখানো হয়েছে, তা আমি খুব কাছে থেকে দেখেছি বাস্তবে। বিহারের যে এলাকায় আমার বাড়ি, ওখানে জংলি পশু না আসলেও, নীল গাঈ আসত। 'শেরদিল'-এ কাজ করার পর জঙ্গল, প্রকৃতিকে নিয়ে আমি আগের থেকে অনেক বেশি সংবেদনশীল হয়েছি।"
অভিনয় জগতে পাকাপাকি পা রাখার আগে পেশায় শেফ ছিলেন পঙ্কজ ত্রিপাঠি। বাঙালি পরিচালকের শ্যুটিং ফ্লোরে, বাঙালি খাবার খেয়েছেন? এই প্রশ্ন শুনে হেসে অভিনেতার উত্তর, "শ্যুটিংয়ে সময় আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল খাওয়া- দাওয়া। আলো পোস্ত, চচ্চড়ি, কষা মাংস এই সব আমরা রোজ খেতাম।"
সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, "পঙ্কজজি খুব রসিক মানুষ- খাদ্যরসিক এবং রসিক দুটোই। ওঁর সঙ্গে আমার খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়েছে। ৮-১০ ঘণ্টা কাজের বাইরেও যে আমাদের দু' জনের পৃথিবী আছে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের কাজের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। কাজের বাইরে প্রকৃতি, রাজনীতি, জীবন, জীবনদর্শন, সঙ্গীত, খাওয়া- দাওয়া ইত্যাধি নানা বিষয় আলোচনা হত। কখনও মনে হয়নি আমি বোম্বের একজন সুপারস্টার কিংবা একজন এত গুণী মানুষের সঙ্গে কাজ করছি। মাটির মানুষ আমরা বলি বটে, কিন্তু উনি সত্যিই মাটির মানুষ।"
পরিচালক আরও যোগ করেন, "আমি খুব শহুরে মানুষ। পঙ্কজজি অন্য একটা ভারতবর্ষের খোঁজ আমায় দিয়েছেন, যেটা সম্পর্কে ওঁর সঙ্গে আলাপ না হলে আমার পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। সেই ভারতবর্ষটা উনি খুব ভাল করে চেনেন। যার ফলে, ছবিতেও কিছু কিছু জায়গায় এমন কিছু সংলাপ যোগ করেছেন, বা আমায় বলেছেন কোনটা কীভাবে করলে ভাল হবে। কারণ গ্রামে বা জঙ্গলে আসলে এভাবে হয়। উনি এইভাবে জীবনটা বেঁচেছেন। তাই ওঁর অভিজ্ঞতা থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি।"
গঙ্গারাম চরিত্র নিয়ে পঙ্কজ ত্রিপাঠি বললেন, "গঙ্গারাম একজন খুব সাধারণ মানুষ। যে নিজেকে গ্রামের প্রধান হিসাবে মনে করেন। যদিও সেটা নির্বাচিত নাকি নিজেই নিজেকে মনে করেন, সেটা বলছি না। একটা সমস্যা সমাধানে তার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে এবং সেই মতো এগোতে থাকে। গঙ্গারাম জীবনে কিছু একটা করে দেখাতে চায়। তার নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর ওপর ভিত্তি করে গল্প এগোবে...।"
উত্তরপ্রদেশ- নেপাল বর্ডারের কুখ্যাত টাইগার রিজার্ভ পিলিভিটের পাশের গ্রামের বাসিন্দা গঙ্গারাম। সেই গ্রামেই বাঘের দাপটে ক্ষেতের জমি নষ্ট হওয়া থেকে মৃত্যু আতঙ্ক গ্রামবাসীদের তাড়া করে বেড়াত। বাঘের আক্রমণের শিকার পরিবারকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সরকারি প্রকল্পের অর্থ থেকে বঞ্চিত ছিল গ্রামবাসীরা।
এই সমস্যা থেকে সমাধানে মাঠে নামেন গঙ্গারাম। এখানেই উঠে এসেছে তার সাহসিকতার কাহিনী। এভাবেই এগোবে 'শেরদিল:দ্য পিলিভিট সাগা'-র গল্প।