হিন্দি টেলিভিশনের পরিচিত মুখ শমা সিকান্দার। নিজের অভিনয় দক্ষতায় দর্শকদের মন জিতেছেন অভিনেত্রী। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সক্রিয় শমা । ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় ২.৮ মিলিয়ন। ৪ অগাস্ট তাঁর জন্মদিন।
ছোট পর্দায় একাধিক কাজ করলেও শমা লাইমলাইটে আসেন ২০০৩ সালে, 'ইয়ে মেরি লাইফ হ্যায়' ধারাবাহিকের মাধ্যমে। তবে তাঁর জীবন ও কেরিয়ার উত্থান-পতনে পূর্ণ। জীবনে বহু কষ্টের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। যখন তাঁর টেলিভিশন কেরিয়ার খুব ভালই চলছিল, সে সময় হঠাৎ কাজ থেকে বিরতি নিয়ে সকলকে অবাক করে দিয়েছিলেন শমা। দীর্ঘদিন তাঁকে পর্দায় দেখা যায়নি।
৬ বছর আগে শর্ট ফিল্ম 'সেক্সোহলিক'-র মাধ্যমে 'শোবিজ' জগতে ফিরে আসেন শমা। এই ছবিতে অনেক চুম্বন দৃশ্য ছিল, যা রীতিমতো চর্চায় আসে। ধারাবাহিকে একজন সহজ-সরল, সংস্কৃতিমনা চরিত্রে তাঁকে দেখা ফর, হঠাৎ তাঁর চেহারার রূপান্তর দেখে চমকে গিয়েছিলেন অনেকেই। শমার স্টাইল স্টেটমেন্ট সম্পূর্ণ বদলে যায় সেসময় থেকে।
যাকে একেবারে ট্রাডিশনাল ভারতীয় পোষাকে দেখে সকলে অভ্যস্ত ছিলেন, সে বিকিনিতে সামনে আসার পর হতবাক হন অনেকেই। এরপর শমার গ্ল্যামারাস লুক, নেটিজেনদের চর্চায় আসে। অনেকেই মনে করেন তিনি প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন। তবে এসব গুজব অস্বীকার করে,এগুলিকে ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন অভিনেত্রী। শমা বলেন, "এটি একটি কসমেটিক পদ্ধতি। আমি তখন ছোট ছিলাম, এখন বড় হয়েছি, তাই পরিবর্তন আসাটাই স্বাভাবিক"।
'সেক্সোহলিক'-র পর বিক্রম ভাটের ওয়েব সিরিজ 'মায়া'-তেও কাজ করেছেন শামা। এই সিরিজটিতেও ছিল তাঁর একাধিক সাহসী দৃশ্য। এই সিরিজে শাইনি আহুজার সঙ্গে দেখা যায় শমাও।
এক সাক্ষাৎকারে শমা বলেন যে, তিনি ১৪ বছর বয়সে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ তোলেন যে, একজন পরিচালক তাঁর উরুতে হাত রাখেন খারাপ ভাবে। কিন্তু পরে সে হাত সরিয়ে নেয়। ছোটবেলা থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করেন শামা।
পরিচালকের এই আচরণের পর তিনি খুব ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু অভিনেত্রীর প্রতিক্রিয়া পেয়ে, তাঁকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেন পরিচালক। শমা বলেন- 'সেই পরিচালক আমায় বলেছিলেন, তুমি মনে করো তারকা হতে পারবে? এখানে কেউ তোমায় ছাড়বে না। পরিচালক না হলে প্রযোজক বা নায়ক, কেউ বা অন্য কেউ তোমার সুযোগ নেবেই...।'
এই কথা শোনার পর, নিজেকে সামলাতে অনেকটা সময় লেগেছিল শমার। তখন তিনি বয়সে ছোট হলেও, তাঁর অনেক বড় বড় স্বপ্ন ছিল। এই উত্থান-পতনের সঙ্গে লড়াই করার সময়, শমা কোনও ভাবে কাজ পেতে সক্ষম হন। একাধিক প্রজেক্টে দেখা যায় তাঁকে। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কীভাবে হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি।
শামা বলেন যে, কর্মবিরতি নেওয়ার আগে তিনি বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং বিষন্নতা শিকার হয়েছিলেন। 'ইন্ডাস্ট্রির দ্বিমুখী দুনিয়ায় আমি ক্লান্ত;, বলেন অভিনেত্রী। তিনি আরও বলেন, নিজেকে খোঁজার জন্য তিনি অনেক দূর চলে গিয়েছিলেন এবং এতে তিনি সফলও হয়েছেন। তাঁর কথায়, 'এখন আমি সৎ জীবনযাপন করছি। এখন সব বুঝি'।