FIR Against Vivek Agnihotri: 'দ্য বেঙ্গল ফাইলস' ছবিটি মুক্তির আগেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ছবিটির ট্রেলার মুক্তি পাওয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ছবিটির গল্প সেই সময়ের যখন ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের আগুন মানুষকে পুড়িয়ে দিচ্ছিল। একই সঙ্গে, ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা থামাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বিখ্যাত বাঙালি যোদ্ধা গোপাল মুখোপাধ্যায়ের চরিত্র চিত্রায়ন নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। গোপাল মুখোপাধ্যায়ের নাতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়ের পরিচালক বিবেক রঞ্জন অগ্নিহোত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন।
আসলে, ছবির ট্রেলারে গোপাল মুখোপাধ্যায়কে 'এক ছিল কসাই গোপাল পাঁঠা' হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যার সম্পর্কে শান্তনু দাবি করেছেন যে এটি তার ঠাকুরদার চরিত্রের ভুল চিত্রায়ন। শান্তনু দাবি করেছেন যে তাঁর ঠাকুরদা পেশায় কসাই ছিলেন না, বরং, তিনি ছিলেন একজন কুস্তিগীর এবং অনুশীলন সমিতির একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। ১৯৪৬ সালে মুসলিম লিগের দাঙ্গা বন্ধে যিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
শান্তনু কী অভিযোগ করেছেন?
শান্তনু পরিচালক বিবেক রঞ্জন অগ্নিহোত্রীকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।যেখানে তার দাদার চরিত্র বিকৃতির অভিযোগে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে তার দাদা পেশায় কসাই ছিলেন না বরং একজন কুস্তিগীর ছিলেন এবং অনুশীলন সমিতির একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব ছিলেন যিনি ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগের দাঙ্গা বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
এবারের ১৬ আগস্ট ৮০ বছর পূর্ণ করল মূল সেই ঘটনার প্রেক্ষিত। বউবাজার ওয়েলিংটন স্কোয়ারের কাছে মলঙ্গা লেনের বুকে ঘটে গিয়েছিল সেই ঘটনা। স্বাধীনতার আন্দোলনে বাংলার বুকে ঘটে যাওয়া শেষ সংগ্রামে যে গোপাল অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন দেশের মানচিত্রকে অক্ষুণ্ণ রাখতে। শান্তনু বলছেন, ছেচল্লিশের সেই দাঙ্গার আগে কলকাতার নানা জায়গায় লিগ ভলান্টিয়াররা জড়ো হচ্ছিলেন। ১৬ আগস্ট শহিদ মিনারে তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টি ও মুসলিম লিগের নেতৃত্বে জনসভা হয়। সুরাবর্দি খাঁ সাহেবের সঙ্গে শোনা যায় সেখানে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও ছিলেন। দাবি ওঠে আগে লিগকে তাদের পাকিস্তান বুঝিয়ে দিতে হবে, তার পর ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে। কিন্তু লিগ ভলান্টিয়ারদের সশস্ত্র অবস্থায় দেখে জ্যোতিবাবু সভা ছেড়ে চলে যান। সভা শেষে ধর্মতলা চত্বরে যত অস্ত্রের দোকান ছিল সব লুঠপাট শুরু হয়। চলে খুন-রাহাজানি।
দাঙ্গাকারীদের ‘অ্যাকশন’ ছড়িয়ে পড়ে নারকেলডাঙা, কলুটোলায়। যে দাঙ্গা প্রতিরোধ করতে নিজের অনুগামীদের সংঘবদ্ধ করে হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন গোপাল। অগ্নিমন্ত্র দিয়ে বলেছিলেন, ‘লিগ দাঙ্গাকারীরা একজনকে মারলে, ১০ জনকে মারবে। কিন্তু নিরীহ কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা মহিলা মুসলিমদের কেশ ছোঁয়া যাবে না।’ সেই ঘটনা নিয়ে গোপালবাবুর পরিচয় বিকৃত করার অভিযোগ তুলেই সরব পরিবার।