২০১৮ সালে জিরো সিনেমা বক্সঅফিসে ফ্লপ হওয়ার পর বড়পর্দা থেকে কার্যত বিদায় নিয়েছিলেন বলিউডের কিং খান শাহরুখ খান। কেন তিনি রূপোলী পর্দায় ফেরত আসছেন না সে নিয়ে জল্পনা কল্পনা ছিল প্রচুর। তবে ২০২০ সালের শেষের দিক থেকেই শোনা যাচ্ছিল যে এবার বড় ধামাকা নিয়ে বড়পর্দায় ফিরতে চলেছেন শাহরুখ খান। সেই জল্পনাই সত্যি হয়ে দেখা দিল। দীর্ঘ চার বছর বিরতির পর এবার সিনেমায় ফিরছেন শাহরুখ। আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালনায় পাঠান সিনেমায় একেবারে অন্য অবতারে দেখা যাবে তাঁকে। বুধবার, ২৫ জানুয়ারি সারা দেশজুড়ে মুক্তি পেতে চলেছে পাঠান।
পাঠান-এর গান নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে
পাঠান ট্রেলারের আগে এর গান বেশরম রঙ মুক্তি পায়, এই গানের একটি দৃশ্য নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শাহরুখ খানের বিপরীতে থাকা দীপিকা পাড়ুকোন এই গানের একটি দৃশ্যে গেরুয়া রঙের বিকিনি পরেছিলেন। আর এই রঙ নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। গানের এই দৃশ্যটি নাকি ধার্মিক চিন্তাধারাকে আঘাত করেছে বলে তা নিয়ে আলোচনা-চর্চা শুরু হয়ে যায়। এই গান ও পাঠান সিনেমা নিয়ে বিতর্ক যেন থামতেই চায় না। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে একাধিক সংগঠন এই সিনেমার বিরোধ করতে শুরু করে দেয়। এমনকী এই সিনেমা বয়কট করার জন্য আবেদনও করা হয়। কিন্তু এখন শাহরুখ ভক্তদের জন্য বড় খবর অপেক্ষা করছে।
বজরং দল বিরোধিতা করবে না
পাঠান-এর বিরুদ্ধে কিছু শহরে প্রতিবাদ জানানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে থাকা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরং দল গুজরাতে এই সিনেমার বিরোধিতা করবে না বলে জানিয়েছে। গুজরাতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ক্ষেত্র মন্ত্রী অশেক রাবল আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি জারি করেছেন। নিজের বিবৃতিতে তিনি পাঠান সিনেমায় কিছু দৃশ্যের পরিবর্তন নিয়ে সেন্সর বোর্ডের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন যে এখন সিনমো দেখবেন কি দেখবেন না তা জনতার ওপর নির্ভরশীল। অশোক রাবল তাঁর সরকারি বিবৃতিতে বলেন, 'হিন্দি সিনেমা পাঠানকে নিয়ে বজরং দলের বিরোধিতা করার পর সেন্সর বোর্ড সিনেমা থেকে অশ্লীল গান ও কুরুচিপূর্ণ শব্দকে সরিয়ে দিয়েছে, যা ভালো খবর। ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষার এই সফল সংগ্রাম করার জন্য আমি সমস্ত কর্মী ও সমগ্র হিন্দু সমাজকে অভিনন্দন জানাই।'
দর্শকদের ইচ্ছা তাঁরা দেখবেন কি দেখবেন না
মন্ত্রী এরপর আরও বলেন, 'পাশাপাশি আমি সেন্সর বোর্ড, প্রযোজক ও সিনেমা মালিকদের কাছে অনুরোধ জানাই যে, চলচ্চিত্র শিল্পের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে তারা যদি সময়মতো ধর্ম, সংস্কৃতি ও দেশপ্রেমের কথা মাথায় রেখে এ ধরনের বিষয়ের বিরোধিতা করেন, তাহলে বজরং দল ও হিন্দুসমাজের কোনও আপত্তি থাকবে না।' এই বিবৃতি শেষ করার আগে মন্ত্রী এও জানান যে এই সিনেমা দেখতে যাওয়া বা না দেখতে যাওয়া পুরোটাই গুজরাতের নাগরিকদের ওপর ছাড়লাম। এরপর ভারত মাতা কি জয় ও জয শ্রী রাম বলে মন্ত্রী তাঁর বিবৃতি শেষ করেন।
আরও পড়ুন: Pathaan movie: 'পাঠান' বিতর্কেই টিকিটের চড়া দাম, শো হাউজফুল
বিজেপি নেতাদের সতর্ক করেন নরেন্দ্র মোদী
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই শাহরুখ খান ও পাঠান নিয়ে কড়া দাওয়াই দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি দুই দিনের জন্য দিল্লিতে বিজেপির কার্যনির্বাহী বৈঠক বসেছিল। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রচারের রোডম্যাপ থেকে শুরু করে দলীয় কর্মীদের মনোবল জোগানো হয় এই বৈঠকে। বৈঠকের শেষদিনে প্রধানমন্ত্রী মোদী সম্প্রতিই সিনেমা নিয়ে বিতর্ক ও সেই বিতর্কে বিজেপি নেতাদের সামিল হওয়া নিয়ে সতর্ক করেন। সূত্রের খবর, এ দিন প্রধানমন্ত্রী বিজেপি নেতাদের সতর্ক করে বলেন, 'কিছু সিনেমা নিয়ে কয়েকজন এমন মন্তব্য় করেন, যা সারাদিন টিভি ও সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়। এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজন নেই, সিনেমা নিয়ে এমন মন্তব্য করবেন না।'
২৫ জানুয়ারি মুক্তি পাবে পাঠান
প্রসঙ্গত, ২৫ জানুয়ারি পাঠান মুক্তি পেতে চলেছে এবং দর্শকেরা চড়া দামে অ্যাডভান্স টিকিট বুকিং করছেন জমিয়ে। পাঠান মুক্তির আগে মন্ত্রীর এই বিবৃতি এই সিনেমা দেখতে যাওয়া দর্শকদের আরও অনুপ্রাণিত করবে।