Ritwick Chakraborty Exclusive: 'রেপ কী গো?' ছোট্টো নূপুরের এই 'ছোট্টো প্রশ্নের' উত্তর কি দিতে পারলেন অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য?

Advocate Achinta Aich 2 : স্মার্ট অ্যাটিটিউড না থাকলেও, কেস সলভ করতে অত্যন্ত কূট বুদ্ধির অধিকারি। বাঘা বাঘা উকিলদের এমন প্যাঁচে ফেলতে পারেন, যে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সেকেন্ড চান্সই থাকে না।

Advertisement
'রেপ কী গো?' ছোট্টো নূপুরের এই 'ছোট্টো প্রশ্নের' উত্তর কি দিতে পারলেন অচিন্ত্য?ঋত্বিক চক্রবর্তী (ছবি: সংগৃহীত)

উকিল 'অচিন্ত্য আইচ'। নামটার সঙ্গে কমবেশি অনেকেই পরিচিত। উইটি অথচ, ক্ষুরধার। স্মার্ট অ্যাটিটিউড না থাকলেও, কেস সলভ করতে অত্যন্ত কূট বুদ্ধির অধিকারি। বাঘা বাঘা উকিলদের এমন প্যাঁচে ফেলতে পারেন, যে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সেকেন্ড চান্সই থাকে না। যারা জানেন তাঁরা আবারও প্রথম সিজনের নস্টাজিয়ায় ফিরে গিয়েছেন। আর যারা অচিন্ত্য আইচকে চেনেন না তাঁরা ভাবছেন, কোথায় গেলে দেখা পাবো তাঁর। 

হইচই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রয়েছে প্রথম সিজন। ১৫ অগাস্ট থেকে স্ট্রিমিং হবে 'অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য আইচ'-র দ্বিতীয় সিজন। এবারও সকলের নজর কাড়বেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। শ্যুটিং অভিজ্ঞতা, সিরিজের গল্প থেকে সামাজিক প্রেক্ষাপট - একগুচ্ছ প্রশ্নের 'অচিন্ত্যর স্টাইলেই' বাংলা ডট আজতক ডট ইন-কে উত্তর দিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।    

 

 Ritwick Chakraborty Advocate Achinta Aich 2

প্রথম সিজনের সাফল্যকে ধরে রাখতে, দ্বিতীয় সিজনেও সমান ভাবেই মন দিয়ে কাজ করেছেন সকলে। গোদা বাংলায় বলতে গেলে, গত কয়েক বছরের ট্রেন্ড ফলো করেই, প্রথম সিজনের মতো এবারও রহস্য-রোমাঞ্চের মোড়কেই সিরিজটি বানিয়ে ফেলেছেন পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। এই ধরনের কাজে তিনি সিদ্ধ হস্ত। তা সে একেন হোক বা অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য আইচ। 

এই সিরিজটিতে, রিলের অচিন্ত্যকে বাস্তবের মতো করে ফুটিতে তুলতে ঋত্বিক চক্রবর্তী কতটা একাত্ব হয়ে উঠতে পেরেছিলেন? প্রশ্ন করতেই, কিছুটা প্রফেশনালিজম এবং কিছুটা ভাল লাগা নিয়ে অভিনেতার উত্তর, প্রতি ক্ষেত্রে একটি কাজ করতে গেলে সবাইকে নিজের নিজের মতো করে সেরাটা দিতে হয়। অভিনয়ের ক্ষেত্রে, চরিত্রের সঙ্গে না মিশে গেলে কাজ ভাল হয় না। আর তাই সেই কাজই করছেন তিনি। সেই সঙ্গে, তিনি আবারও মনে করিয়ে দেন, এই সিজনেও অচিন্ত্য আইচের মুখে থাকছে একাধিক কমিক রিলিফ। দর্শকদের যা নির্দিষ্ট ভাবেই এক ঘেয়েমি থেকে মুক্তি দেবে। 

 

 Ritwick Chakraborty Advocate Achinta Aich 2

শচীন তেন্ডুলকর যেমন, ক্রিকেটের ঈশ্বর হলেও, প্রতিটি ম্যাচই তাঁকে নতুন প্রস্তুতি নিয়ে নতুন করেই শুরু করতে হত, ঠিক তেমনই প্রায় দু'দশকের অভিনয়ের অভিজ্ঞতা থাকলেও, এবারও অচিন্ত্য আইচকে স্ক্রিনে ফুটিতে তুলতে রীতি মতো কালঘাম ছুটেছিল ঋত্বিকের। তাঁর কথায়, আগে যা করেছেন, তা এখন অতীত। এটা নতুন চরিত্ব, নতুন চ্যালেঞ্জ।     

Advertisement

ঋত্বিক, নিজেই নাকি নিজের কাজের বড় 'ক্রিটিক'। কারণ, একটা কাজ করার পর, তাঁকে নাকি একাধিক খুঁতখুঁতেমি-তে পায়। তাই সেই কাজ আর দেখতে ভাল লাগে না কিছুতেই। তবে, কিছু ভুল ত্রুটি থাকলেও, সেটা নিজেই শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেন সেখান থেকেই। 

অভিনেতা না হলে, জীবনে কী হতেন ঋত্বিক? অচিন্ত্য আইচের মতো উকিল, না গোড়ার মতো প্রাইভেট ডিটেক্টিভ? অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল, কিন্তু, ঋত্বিক গোড়াই হতেন। কারণ, রহস্যের গন্ধ তাঁর ভালই লাগে। তবে, নিজেকে বর্ণনা করতে গেলে, তিনি মনে করেন না তাঁর গোড়ার মতো তীক্ষ্ণ বুদ্ধি আর অ্যানালিটিক্যাল ব্রেইন রয়েছে। 

 

 Ritwick Chakraborty Advocate Achinta Aich 2

তবে, এবারের সিরিজে কিন্তু গতবারের বাঘা উকিল সীতারাম গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোমুখী হতে হচ্ছে না অচিন্ত্য আইচকে। বরং, এখানে সীতারামই, তাঁর মেন্টর। দেশে নতুন আইন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। অচিন্ত্য যার গভীরে এখনও মনোনিবেশ করতে পারেননি। তাই, এবারের জটিল কেস সলভ করতে, সীতারাম ওরফে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের কাছেই ছুটতে হয়। 

উল্টো দিকে এবারের কেস আরও জটিল। নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুন। অর্থাৎ, পোকসো (POCSO) ধারায় মামলা। অচিন্ত্য আইচ-এর কাছে এই কেস এসেছে। অচিন্ত্যর সামনে কঠিন দ্বিধা, কারণ প্রতিপক্ষ প্রবল প্রতাপশালী পোকসো আইন বিশেষজ্ঞ নন্দিনী গঙ্গোপাধ্যায় ওরফে, সোহিনী সেনগুপ্ত। সমাজের অসমাজিক মন্তব্য, নিষ্ঠুর নজর, এবং আইনি ঘোরপ্যাঁচের বিপক্ষে গিয়ে কি এবারও ন্যায়ের পাশে থাকতে পারবে অচিন্ত্য আইচ?    

সিজন ওয়ানেও, যেমন গোটা ঘটনাটা শুধুমাত্র একটি কোর্টরুম ড্রামা হিসেবে আবদ্ধ ছিল না, ঠিক তেমনই এবারও একই ভাবে গল্পের বুনোট। অনেক ক্ষেত্রেই, এবারও সহকারী ভীমকে নিয়ে, কিছুটা ভিরমি খেতে হয়েছে অচিন্ত্যকে। বিশেষ করে যখন, কেসের সাবজেক্ট তাঁর সিলেবাসের বাইরে। 

এবারের গল্পটা এক ১৭ বছর বয়সী নাবালিকাকে নিয়ে। তার প্রতি হওয়া অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে। এখানেও, একজন অভিযুক্ত। যার হয়ে লড়েছেন অচিন্ত্য। অবশেষে তাঁকে নির্দোষও প্রমাণ করেছেন। কিন্তু, তারপরও, থেকে যাচ্ছে কিছু প্রশ্ন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, ধর্ষণ, খুন বা শ্লীলতাহানীর মতো ঘটনা আমরা আকছাড় শুনতে পাই। যার প্রভাব পড়ছে শিশু ও কিশোর মনেও। কারণ তাদের সঙ্গেও, অনেক সময়ই ঘটছে এই ধরনের ঘটনা। 'অ্যাডভোকেট অচিন্ত্য আইচ ২'- তেও এক নাবালিকা এই ঘটনার শিকার। এদিকে অভিযুক্তর ছোট্ট শিশুর মুখেও শোনা যাচ্ছে সেখানে, 'রেপ কী?'  

 

 Ritwick Chakraborty Advocate Achinta Aich 2

ছোট্টো মনের এই জিজ্ঞাসা যেমন ভাবিয়ে তুলেছিল রিলের অচিন্ত্যকে, তেমনই বাস্তবে বাড়িতে বাবা হিসেবেও এই অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে থাকতে চান ঋত্বক। তাঁর কথায়, "প্রতিটি অভিভাবকের উচিত, নিজের নিজের মতো করে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা। যাতে, ছোটো থেকেই, তাদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠে।"সেই সঙ্গে, এই ধরনের কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও যেন সঠিক বিচার হয়, সেটাই চান অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী।   

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৯ অগাস্ট, কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে, জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে গোটা দেশ থেকে পৃথিবীর একাধিক শহরের মানুষ। সকলেই নিজের নিজের মতো করে প্রতিবাদে সামিল হন। ঋত্বিক চক্রবর্তীকেও, এই বিষয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। তিনি মূলত, সমাজমাধ্যমেই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। যদিও, তাঁর এই প্রতিবাদের ধরন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন। ঘটনার এক বছর পর, আজতক বাংলাকে তিনি বলেন, "আমি আমার প্রতিবাদের ভাষা জানি। সবাইকে জবাব দেওয়ার জন্য আমি কিছু করি না। তাই কথা হবেই, আমি আমার মতো করে প্রতিবাদটা করতে জানি। তাই করব।" 

Advertisement

 

POST A COMMENT
Advertisement