দু টাকায় ব্যাগভর্তি আনাজ। সঙ্গে আবার জ্যান্ত মাছ ! কর্মহীন পরিবারের সহযোগিতায় হরিণঘাটার সুকান্ত সংঘকে অনুপ্রেরণা যোগাতে হাজির চলচ্চিত্র অভিনেতা দেবরাজ মুখোপাধ্যায়।
মরশুমের ফল বিভিন্ন আনাস দিয়ে ঠাসা ভর্তি ব্যাগ। মূল্য? মাত্র ২ টাকা। তবে এখানেই শেষ নয়। সঙ্গে বাঙালির প্রিয় জ্যান্ত মাছ।
বাজারে প্রবেশ করতে গেলে অবশ্যই চাই, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, এবং মাস্ক ব্যবহার করে তবেই প্রয়োজন মাফিক বাজার ব্যাগ ভরানোর অবাধ সুযোগ! এই সবটাই আয়োজন করেছে, নদীয়ার হরিণঘাটা সুবর্ণপুর সুকান্ত সংঘর সদস্যরা।
বিগত এক মাসে, নৈশভোজের জন্য ১৩৭ টি পরিবারে, রাতের অন্ধকারে সকলের অজান্তে পৌঁছে দিয়েছে রুটি, তরকা, ফ্রাইড রাইস, মাংস , পরোটা. ডিম আলুর দম, অথবা ভাত মাছের ঝোল !
আর ওই পরিবার দেরই দিনের খাবার জোগাড় হিসেবে, সপ্তাহে একদিন রবিবার থাকছে এই স্বল্প মূল্যের বাজার! হ্যাঁ স্বল্প মূল্য! বিনামূল্যে নয়।
আয়োজকদের কথায়, অনেকেই প্রান্তিক হিসেবে জন্ম গ্রহণ করেননি! করোনা পরিস্থিতি তাদের কেড়ে নিয়েছে কাজ! বেরোজগার হয়ে, সংসার চালাতে বাধ্য হয়েছেন ব্যাগ হাতে সহযোগিতা নিতে আসতে। তাই তাদের প্রতি সম্মান জানাতে এবং মানসিক তুষ্টির কারণে ফ্রিতে নয়!
দুই টাকা মূল্যে ক্রয় করেছেন তারা। এতে একদিকে যেমন দানের ঔদ্ধত্য আমাদের মনে প্রশ্রয় না পায়, অন্যদিকে তারাও যেন হীনমন্যতায় ভোগেন।
টেবিলে সাজানো লোভনীয় আনাজ, ফলমূল, মুদি দোকানের বাজার সবটাই তুলে নিতে হচ্ছে নিজে হাতে! কারণ নিজের সমস্যার মতন অন্যের হাঁড়ির খোঁজখবর রাখতে আত্মনিয়ন্ত্রণের মূল্যবোধ তৈরি হবে সকলের।
কোনও সরকারি সহযোগিতা নয়, স্রেফ এলাকার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের সহযোগিতায়, এবং মহানুভবতায় হরিণঘাটা সুবর্ণপুর সুকান্ত সঙ্গে সদস্যরা বুঝিয়ে দিলো, "যদি হয় সুজন তেঁতুল পাতায় নজন"।
এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সাধুবাদ জানিয়েছেন টলিপাড়ার রুপালি পর্দার নায়ক-নায়িকা অনেকেই ! তবে অভিনেতা দেবরাজ মুখার্জি মানবিকতার সেরা নিদর্শন চাক্ষুষ করতে, ছুটে এসেছেন শুধু কলকাতা থেকে হরিণঘাটা।