scorecardresearch
 

শুভক্ষণে স্মরণ, আজকের দিনে অস্কার পেয়েছিলেন সত্যজিৎ

অর্ধের শহর তখন ঘুমিয়ে। যে ক'জন হাতে গোণা মানুষ এ বিষয়ে খোঁজখবর রাখতেন, তাঁরাও বোধ করি সময় মতো জানতে পারেননি। কারণ তখন স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং ইন্টারনেটের রমরমা ছিল না। পরে বেলা বাড়াতে ধীরে ধীরে সকলে খবর জানতে শুরু করেন, বিশ্ব সিনেমার একনিষ্ট পূজারি তাঁর পূজার শ্রেষ্ঠ অর্ঘ্য পেয়েছেন। দেরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পেয়েছেন।

Advertisement
অস্কার হাতে সত্যজিৎ রায় অস্কার হাতে সত্যজিৎ রায়
হাইলাইটস
  • ১৯৮৩ সালে প্রথমবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার অ্যাটাক হয় ১৯৯২-তেই।
  • নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এমনকী কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। সে কষ্টের চেয়ে যদিও মনোকষ্ট আরও বেশি ছিল সত্যজিতের মনে।
  • কত কাজ বাকি পড়ে রয়েছে। সিনেমাকে, শিল্প-সংস্কৃতিকে কত কিছু দেওয়া বাকি রয়ে গিয়েছে।

১৯৯২ সালের ৩০ মার্চ। আমেরিকায় যখন লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট বিভাগে সত্যজিৎ রায়ের নাম ঘোষণা হল, তখন কলকাতায় তারিখ পাল্টে গিয়েছে। পৃথিবী একপাক ঘুরে ফের একটা দিন ঘোষণা করেছে তিলোত্তমার বুকে। অর্ধের শহর তখন ঘুমিয়ে। যে ক'জন হাতে গোণা মানুষ এ বিষয়ে খোঁজখবর রাখতেন, তাঁরাও বোধ করি সময় মতো জানতে পারেননি। কারণ তখন স্যাটেলাইট চ্যানেল এবং ইন্টারনেটের রমরমা ছিল না। পরে বেলা বাড়াতে ধীরে ধীরে সকলে খবর জানতে শুরু করেন, বিশ্ব সিনেমার একনিষ্ট পূজারি তাঁর পূজার শ্রেষ্ঠ অর্ঘ্য পেয়েছেন। দেরি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পেয়েছেন।

সত্যজিৎ তখন মৃত্য শয্যায়। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার অ্যাটাক হয় ১৯৯২-তেই। তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এমনকী কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। সে কষ্টের চেয়ে যদিও মনোকষ্ট আরও বেশি ছিল সত্যজিতের মনে। কত কাজ বাকি পড়ে রয়েছে। সিনেমাকে, শিল্প-সংস্কৃতিকে কত কিছু দেওয়া বাকি রয়ে গিয়েছে। আর তিনি কিনা শারীরিক কষ্টে হাসপাতালের বেডে। হীরক রাজার দেশের সংলাপে তিনি যেমন লিখেছিলেন, 'এ ভাবে সময় নষ্ট, বড় কষ্ট।'

সেই কষ্টে খানিক স্বস্তি দিয়েছিল সোনালী রঙের ট্রফিটা। হলিউডের সর্বকালের অন্যতম সেরা অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন সত্যজিৎ রায়ের নাম ঘোষণা করেন। লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট। সত্যইই অ্যাচিভমেন্টই বটে। কী সমস্ত পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে। শুধু ছিল না অস্কারটাই। মৃত্যুর মাত্র ২৩ দিন আগে অস্কারও ধরা দিল। সত্যজিৎ নিঃসন্দেহে সম্মানীত  হয়েছিল। কিন্তু একই সঙ্গে সম্মানীত হয়েছে ওই সোনালি রঙের ট্রফিটাও। বহু বিভাগে এই পুরস্কার বহু মানুষের হাতে ধরা দিয়েছে। কিন্তু প্রায় সাড়ে ছয় ফুট লম্বা শালপ্রাংশু ঋজু মানুষ তো সারা বিশ্বে একজনই ছিলেন, যিনি শত প্রতিবন্ধকতা নিয়েও সিনেমায়, সাহিত্যে, প্রচ্ছদে, সঙ্গীতে গোটা সাংস্কৃতিক জগতে তাঁর অসীম সৃষ্টির ভাণ্ডার উজাড় করে দিয়েছিলেন।

Advertisement

 

Advertisement