আবারও বিতর্কে জড়ালেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচি। পোস্ট অফিসে আধার কার্ডের কাজ করাতে গিয়ে সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে বাগ-বিতণ্ডায় জড়ানোর অভিযোগ ওঠে গায়কের স্ত্রী বিরুদ্ধে। আর সেই ঝামেলার মাঝে এসে গায়ক রূপঙ্কর পোস্ট অফিসের কর্মীদের প্রতি অশালীন ভাষা ব্যবহার করায় বিতর্কে জড়ান গায়ক। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল।
সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দেবারতী দেবী নামে এক মহিলা তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হয়েছে এই ভিডিও। যার ক্যাপশন বক্সে ভয়ানক অভিযোগ এনেছেন তিনি। সরকারি কার্যালয়ে গিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলার পাশাপাশি জোর জুলুম করার অভিযোগ এনেছেন ওই মহিলা তাঁর ভিডিওতে। এই ভিডিওর ক্যাপশন অনুযায়ী, গায়ক রূপঙ্কর বাগচি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে তাঁদের পোস্ট অফিসে আসেন আধারের কাজ করাতে। সেখানে গায়কের স্ত্রী চৈতালি বাগচি সরকারি কর্মীদের তৎক্ষণাত আধারের কাজ করিয়ে দিতে বলেন, অথচ সকাল থেকে অনেকেই আধার কার্ডের কাজের জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কিন্তু রূপঙ্কর বাগচীর স্ত্রী দাবি করেন যে তাঁকে এক্ষুণি কাজটা করে দিতে হবে। দেবারতী দেবী তাঁর ভিডিওর ক্যাপশনে জানিয়েছেন যে অন্যদের ছেড়ে গায়কের স্ত্রীর কাজ করা তাঁদের নীতিগতভাবে সম্ভব ছিল না।
দেবারতী দেবীর ভিডিওর ক্যাপশন থেকে জানা যায়, সেই সময় তাঁরা সেখান থেকে চলে যান এবং দুপুর দেড়টার পর ফের অফিসে আসেন এবং সেই সময় তাঁদের কাজ শুরু করেন অফিসের কর্মীরা। আর তাতেই নাকি গায়কের শৈল্পিক সত্ত্বায় আঘাত লাগে। জনৈক ভদ্রমহিলার কথায়, ‘ওঁনার স্ত্রী চৈতালি দেবীর বক্তব্য অনুযায়ী “মুড়ি মুড়কি এক করলে চলবে না, বুঝতে হবে কাকে আগে করতে হবে”, অর্থাৎ ওনারা দামী মুড়কি আর সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলি সস্তার মুড়ি।’ এরপরেই নাকি মেজাজ হারান রূপঙ্কর। আর অশালীন ভাষা প্রয়োগ করেন। গায়কের এহেনও ব্যবহারে পোস্ট অফিসের সকলেই মিলিতভাবে প্রতিবাদ জানাতেও দেখা যায় ভিডিওতে। এরপরই চৈতালি তাঁর গায়ক স্বামী রূপঙ্করকে নিয়ে সেখান থেকে সরে যান। তবে এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে। তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে গায়ককে।
bangla.aajtak.in-এর পক্ষ থেকে রূপঙ্করের সঙ্গে এই ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যোগাযোগ করা হয়। এই প্রসঙ্গে গায়ক বলেন, 'আমি এক সংবাদমাধ্যমের বন্ধুর কাছ থেকেই এই ভিডিও সম্পর্কে জানতে পারি। গত শনিবার আমি ও আমার স্ত্রী পোস্ট অফিসে গিয়েছিলাম আধার কার্ডের ছোট্ট একটা কাজ করাতে। আসলে গতবার আমার স্ত্রী ভুল ঠিকানার জন্য ভোট দিতে পারেননি, সেই আধার কার্ডের কাজকরানোর জন্য আমরা পোস্ট অফিস গিয়েছিলাম। আমি তখন গাড়িতেই ছিলাম, আমার স্ত্রী গিয়েছিলেন পোস্ট অফিসের ভেতর। প্রায় ৪৫ মিনিট কেটে যাওয়ার পর আমি পোস্ট অফিসের ভেতর যাই। ঢুকে দেখি যে পোস্ট অফিসের কর্মীদের সঙ্গে চৈতালির বাক-বিতণ্ডা হচ্ছিল। তখন আমি চৈতালিকে বলি কী হচ্ছে টা কী এবং তার সঙ্গে অশালীন একটি ভাষা। তখন ওখান থেকে সবাই চিৎকার করে বলেন আপনি অশালীন শব্দটি বললেন কেন? তখন আমি বলি যে আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি। তখন চৈতালি আমাকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি তখন ওঁনাদের বলার চেষ্টা করছিলাম যে আসলে আমি ঠিক কোন শব্দটা বলেছি।' রূপঙ্কর এও বলেন, 'আমার স্ত্রীকে সরকারি কর্মীরা বলেন যে এখন আধার কার্ডের কাজ হবে না, সকালে অনেক ভিড় থাকে। তখন চৈতালি বলে যে এখন তো সাড়ে বারোটা-একটা বাজে, ভিড় কম আছে, এখন করে দিচ্ছেন না কেন? কিন্তু তাঁরা তখনও করতে চাননি। সেই সময় চৈতালি বলেন যে রাইট টু ইনফরমেশন অ্যাক্টে আমার জানার অধিকার আছে এটা কেন হবে না। এই কথা শোনার পর অনেকেই রেগে গিয়েছিলেন, তাঁরা আমার স্ত্রীর সঙ্গে খারাপভাবে কথা বলেন এবং বলতেই থাকেন ক্রমাগত।' রূপঙ্কর এও জানান যে পোস্ট অফিসে এই আধার কার্ডের কাজের জন্য দালাল ধরা থাকে, হয়ত সরকারি কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের কোনও রকম যোগের জন্যই এই কাণ্ড ঘটেছে, যদিও তিনি এই বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানেন না।
প্রসঙ্গত, এর আগেও 'হু ইজ কেকে' বলা নিয়েও চরমভাবে ট্রোল হয়েছিলেন রূপঙ্কর বাগচি। কারণ এই মন্তব্যের পর পরই কলকাতায় লাইভ করতে এসে প্রয়াত হন জনপ্রিয় গায়ক কেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মন্তব্য করে ঘোরতর বিপদে পড়েছিলেন ‘ও চাঁদ তোর সঙ্গে যাব’ খ্যাত গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। অনেকেই তার এই মন্তব্যে ঔদ্ধত্য খুঁজে পেয়েছিলেন। যদিও রূপঙ্কর নিজের সাফাই গাইতে গিয়ে বলেন, তিনি এই কথা প্রয়াত গায়ক ‘কে কে’-কে অপমান করার জন্য বলেননি।