তথাগত মুখোপাধ্যায়পরিচালক-অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় যে পশুপ্রেমী, সে কথা অজানা কারোরই নয়। অবলা পশুদের ওপর যখনই কোনও অন্যায়-অবিচার হয়েছেন, রুখে দাঁড়িয়েছেন তিনি। নিজের বাড়িতেও রয়েছে তিনটে পোষ্য। তবে রাস্তার সারমেয়দের নিয়েও তাঁর চিন্তার শেষ নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় তথাগত মাঝে মধ্যেই অবলা প্রাণীদের নিয়ে একাধিক পোস্ট করেন। সম্প্রতি আরও একবার সোচ্চার হলেন তিনি। এবার সরব হলেন একটি ষাঁড়কে নিয়ে।
শহরের রাস্তায় অনেক সময়ই নজরে আসে ছোট ছোট গাড়িতে করে ভক্তরা দেব-দেবীর নামে পথচারীদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করছেন। সেরকমই এক দৃশ্য তথাগতর নজরে আসে। যোধপুর পার্কের রাস্তায় পরিচালক-অভিনেতা দেখতে পান একটি ছোট ম্যাটাডোর। যার মধ্যে একটি ষাঁড় খুবই কষ্টের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। ষাঁড়টির জন্য ওই জায়গাটি যথেষ্ট নয়, বলেই মনে হয়েছে তথাগতর। তিনি সেই গাড়িটর কিছু ছবি তুলে পোস্ট করেছেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। সঙ্গে লিখেছেন দীর্ঘ লেখা।
তথাগতর লেখা থেকে জানা যায় যে ছোট ম্যাটাডোরে কোনওমতে সামান্য জায়গা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ষাঁড়টি। অবলা প্রাণীটি ঘাড় পর্যন্ত ঘোরাতে পারছে না। তথাগত লেখেন, সামনের দিকে কিছু দেব-দেবীর মূর্ত্ আর ভয়ঙ্কর স্বরে মাইকে হিন্দিতে চিৎকার চলছে গো-মাতার জন্য কিছু দান করুন। এরপরই পরিচালক-অভিনেতা তাঁর প্রতিবাদী স্বরে লেখেন, প্রথমত, একটা ষাঁড়কে গাড়িতে ওইভাবে আটকে কষ্ট দেওয়ার জন্য মানুষ খুশি হয়ে গো মাতার জন্য কেন ভিক্ষা দেবেন স্পষ্ট নয়। পুরুষ ষাঁড় কে কষ্ট দিলে গো মাতার আনন্দের ব্যপারটা খুবই সন্দেহজনক। আর যে শব্দ আর তার অভিঘাতে ষাঁড় এবং রাস্তায় পথচলতি অজস্র ষাঁড়েদের শ্রবনযন্ত্রটা যে কাকুতি মিনতি করছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। এরপর তথাগত প্রশ্ন তোলেন, এখন প্রশ্ন হচ্ছে ধর্মের নামে পশুটিকে এইভাবে কষ্ট দিয়ে অর্থ রোজগারের যে প্রানান্তকর চেষ্টা তা বোধহয় এই দেশেতেই সম্ভব। আমি জানতে চাই এদেশে বাস করে এই প্রোপাগান্ডা মূলক অত্যাচারগুলো আটকানোর কি কোনো পথ নেই? নাকি আমরা অপেক্ষা করব কবে ষাঁড়টি নিজে অর্থ জোগাড় করে ওই গাড়িটি কিনে পেছনের অংশে একজন বলিষ্ঠ পুরুষকে আটকে রেখে কোনও নারী দেবতার নামে চাঁদা চাইতে বেরোবেন। লজ্জায় চোখ কান খোলা রাখাও দায় হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।
এর আগেও পারিয়া পরিচালককে রাস্তার কুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে দেখা গিয়েছে। তথাগত যখনই যেখানে অবলা প্রাণীদের ওপর অত্যাচার হতে দেখে, তিনি প্রতিবাদে সরব হন। তাঁর পরিচালিত পারিয়া ছবিটিও এইসব অবলা প্রাণীদের নিয়েই তৈরি। পারিয়া ২-এর শ্যুটিং শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা প্রযোজক না মেলায় এখন বিশ বাঁও জলে।