ভারতীয় সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মান পাচ্ছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার আরেক বঙ্গসন্তানের হাতে উঠবে। দাদাসাহেব ফালকে পাচ্ছেন, জেনে রীতিমতো বাকরূদ্ধ প্রবীণ অভিনেতা। মিঠুনের কথায়, 'আমার না কান্না পাচ্ছে, না হাসি পাচ্ছে। আমার বলার ভাষা নেই।'
'ফুটপাথ থেকে উঠে আসা একটা ছেলেকে আজ এত বড় সম্মান'
ভারতীয় সিনেমায় ব্যাপক অবদানের জন্য মিঠুন চক্রবর্তীকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। ভারতীয় সিনেমার এটাই সবচেয়ে বড় সম্মান। সংবাদ সংস্থা ANI-কে মিঠুন বললেন, 'ফুটপাথ থেকে উঠে আসা একটা ছেলেকে আজ এত বড় সম্মান। আমার বলার কোনও ভাষা নেই। আমি না খুশিতে কাঁদতে পারছি, না হাসি পাচ্ছে। আমি বাকরূদ্ধ।' দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় উত্তর কলকাতার সেই উত্তপ্ত দিনগুলির কথাও মনে করালেন মিঠুন। বললেন, 'কলকাতার যে সরু গলি থেকে আমি উঠে এসেছি, ফুটপাথে লড়াই করে, আমি ভাবতেও পারছি না। আমি এই পুরস্কার উত্সর্গ করছি আমার পরিবার ও গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা আমার ভক্তদের।'
#WATCH | Kolkata: On being announced to be conferred with the Dadasaheb Phalke award, Actor and BJP leader Mithun Chakraborty says "I don't have words. Neither I can laugh nor cry. This is such a big thing... I could not have imagined this. I am extremely happy. I dedicate this… pic.twitter.com/tZCtwLSyxV
আরও পড়ুন
— ANI (@ANI) September 30, 2024
মিঠুনকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের শুভেচ্ছা জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এক্স হ্যান্ডেলে লিখলেন, 'ভারতের সাংস্কৃতিক আইকন মিঠুন চক্রবর্তী।'
Delighted that Shri Mithun Chakraborty Ji has been conferred the prestigious Dadasaheb Phalke Award, recognizing his unparalleled contributions to Indian cinema. He is a cultural icon, admired across generations for his versatile performances. Congratulations and best wishes to… https://t.co/aFpL2qMKlo
— Narendra Modi (@narendramodi) September 30, 2024Advertisement
মৃণাল সেনের হাত ধরে শুরু হয়েছিল মিঠুনের কেরিয়ার
বিখ্যাত চিত্র পরিচালক মৃণাল সেনের হাত ধরে শুরু হয়েছিল মিঠুনের কেরিয়ার। প্রথম ছবি 'মৃগয়া'-তে অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন। মৃগয়া-র পরেও মিঠুনের স্ট্রাগল কিন্তু থামেনি। উত্তর কলকাতার দাপুটে যুবক গৌরাঙ্গ চক্রবর্তীকে জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরেও বলিউডে সিনেমা পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। ধীরে ধীরে একের পর এক কাজ পেতে শুরু করেন তিনি। গৌরাঙ্গ থেকে হয়ে যান মিঠুন। হিন্দি, বাংলা সহ একাধিক ভাষায় তাঁর সাবলীল অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করে দেয়। মুম্বইয়ে তাঁর শুরুর জীবনের স্ট্রাগল, ফুটপাথে রাত কাটানো থেকে একেবারে সাফল্যের শীর্ষে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ বর্তমানে বিজেপি নেতা। মিঠুনের কেরিয়ারে মোট ৩টি জাতীয় পুরস্কার রয়েছে। ১৯৮৯ সালে একসঙ্গে ১৯টি ছবি মুক্তি পায় মিঠুনের। যা লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে রয়েছে। বলিউডে সেই রেকর্ড এখনও অটুট।
রাশিয়ায় অতিজনপ্রিয় বলিউড ছবি ডিস্কো ডান্সার
৮০ দশকের একেবারে শুরুতে যখন বলিউডে অবাঙালি নায়করা রাজ করছেন, তখন মিঠুনের আত্মপ্রকাশ খানিকটা রূপকথার মতোই। ১৯৮২ সালে মিঠুনের 'ডিস্কো ডান্সার' বক্স অফিসে দুর্দান্ত ব্যবসা করে। ওই ছবি থেকেই মিঠুন খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সুদূর রাশিয়াতেও। আজও রাশিয়ায় অতিজনপ্রিয় বলিউড ছবি ডিস্কো ডান্সার। ১৯৯০ সালে অগ্নিপথ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেতার পুরস্কার হিসেবে ফিল্মফেয়ার পান তিনি।
নদী থেকে সাগর ছবির হাত ধরে বাংলা সিনেমায় ডেবিউ হয় মিঠুনের
উত্তর কলকাতায় বসন্ত কুমার চক্রবর্তী ও শান্তিরানি চক্রবর্তীর পুত্র মিঠুন পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক হন। ছাত্রজীবনে জড়িয়ে পড়েছিলেন নকশাল আন্দোলনে। ভাইয়ের অকাল মৃত্যুর পরে নকশাল আন্দোলন ছেড়ে দেন তিনি। সিনেমায় কেরিয়ার গড়তে পাড়ি দেন মুম্বই। ১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের মৃগয়া ছবিতে নজর কাড়েন মিঠুন। ১৯৭৮ সালে নদী থেকে সাগর ছবির হাত ধরে বাংলা সিনেমায় ডেবিউ হয় মিঠুনের।