১৯৮৩ সাল। স্থান- নেভিল গ্রাউন্ড, রয়্যাল টার্নব্রিজ ওয়েলস। ময়দানে দুই আম্পায়ার ব্যারি মেয়র এবং মারভিন কিচেন। টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতীয় দল জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৪ উইকেট ৯ রান। ময়দানে এলেন দলের অধিনায়ক কপিল দেব। কিছুক্ষণের মধ্য়েই স্কোর হয়ে গেল ১৭ রানে ৫ উইকেট। একপাশে দাঁড়িয়ে দলের অধিনায়ক দেখছেন দলের অসহায়তা। এই ম্যাচ হেরে গেলে ভারতের বিশ্বকাপের দৌড় শেষ হয়ে যেতে পারে। এরপর শুরু হল সেই লড়াই। যা ভারতীয় ক্রিকেটের চালচিত্র বদলে দিল।
কপিল দেবই ৮৩-র হিরো
বিশ্বের সর্বকালের ওয়ান-ডে ইনিংস খেললেন হরিয়ানা হ্যারিকেন। হয়তো তাঁর রান টপকে গিয়েছেন পরে অনেকেই। হয়েছে একদিবসীয় ক্রিকেটে দ্বিশতরানও। কিন্তু ইমপ্য়াক্ট-এ এটাই সর্বকালের সেরা। বিশেষ করে ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে এমন ইনিংস আর নেই। তিনি যখন শেষ করলেন তার নামের পাশে দেখাচ্ছে ১৩৮ বলে অপরাজিত ১৭৫ রান। দলের রানের পাশে ২৬৬/৮। কপিল দেব ভারতীয় দলের হয়ে এক দিবসীয় ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরিই শুধু করলেন না, তিনি হয়ে গেলেন সেই সময়ের বিশ্বের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত এক ইনিংসে রান সংগ্রাহক। দীর্ঘদিন যা অক্ষত ছিল।
পা-জির ১৭৫ এর অদৃশ্য দৃশ্য
তবে এসবই শুধুমাত্র স্কোর বুকে লেখা কিছু পরিসংখ্যান মাত্র। কারণ ইচ্ছে হলেও মাথা কুটে এত বছর সেই দৃশ্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। টিভি ক্রু এবং প্রচারকদের গোলমালে সেদিন ম্যাচ বয়কট করেছিলেন ভিডিওগ্রাফাররা। ফলে সেই ঐতিহাসিক ম্যাচ, যা ভারতের তিরাশির বিশ্বকাপ জয়ের টিউন তৈরি করে দিয়েছিল, তা আর কোনও দিনই চাক্ষুষ করার সৌভাগ্য হয়নি পৃথিবীবাসীর। সেই সময়ের জীবিত লোকেদের মনের মণিকোঠায় তা চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে গিয়েছে।
প্রথমবার ১৭৫ টিভির পর্দায়
সেই প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের ৩৮ বছর পর অবশেষে সেদিনকার ম্যাচের দৃশ্য চাক্ষুষ করতে পারবেন গোটা পৃথিবীর মানুষ। অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাতে ময়দানে নেমেছেন কবীর খান। না তিনি কোনও খেলোয়াড় কিংবা কােচ নন। তিনি তার নতুন ছবি ৮৩র মাধ্যমে সেদিনের ঘটনা কপিল দেবের মুখে শুনে এবং অন্যান্য জীবিত খেলোয়াড়দের কাছে জেনে রুপোলি পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে চলেছেন। তিনি ইতিমধ্যেই সিনেমার রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে। যারা দেখেছেন তারা বলছেন গায়ের লোম খাড়া করে দেওয়ার মত সিনেমা হয়েছে। বলছেন সবাই, আর একটা মাস্টার পিস বেরোলো কবীর খানের হাত দিয়ে।
সিনেমা রিলিজের আগেই সুপারহিট
১৯৮৩ সালে ক্রিকেটের ময়দানে ভারত যে ঐতিহাসিক জিত হাসিল করে ভারতকে নতুন ধর্ম উপহার দিয়েছিল, সেই তিরাশির বিশ্বকাপজয় নিয়ে সিনেমা করে তৈরি করেছেন পরিচালক কবীর খান। করোনার কারণে পিছিয়ে গিয়েছিল মুক্তি। অবশেষে ২৪ ডিসেম্বর সিনেমা হলে এই সিনেমাটি আসতে চলেছে। এরই মধ্যে কিছু লোক এই সিনেমাটি দেখে নিয়েছেন। তারা বলেছেন কবীর খানের এই ফিল্ম একটা মাস্টার পিস।
সবাই বলছেন মাস্টারপিস
পরিচালক কবীর খানের স্ত্রী মিনি মাথুর ইনস্টা স্টোরিতে অন্যান্যদের রিভিউ এবং স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। এদিকে ফিল্মের তারিফ হয়েছে। সিনেমা দেখার পরে তারিফ না করে থাকতে পারছেন না কেউই। ৮৩ দেখার পর সবার রিঅ্যাকশন ভালোই নয়। একটা মাস্টারপিস যেমন রণবীর সিংয়ের অভিনয় তেমনই সিনেমা ট্রিটমেন্ট খেলার ময়দানকে জীবন্ত করে তোলা কবীর খানের মুনশিয়ানা। যেমন তিনি করেছিলেন চক দে ইন্ডিয়া সিনেমাতে। যা গোটা দেশকে নয়া স্লোগান তুলে দিয়েছিল। ঠিক তেমনই এই সিনেমাটি গোটা দেশকে সম্মোহিত করে দেবে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
রণবীর-দীপিকার প্রশংসা
এত পজিটিভ রিভিউ দেখার পর যে কোনও কারুরই এই সিনেমা দেখার জন্য মন উচাটন হয়ে পড়বে। ৮৩ স্টারকাস্ট মুভি জোর প্রমোশন করছে। ৮৩-এর সমস্ত স্মরণীয় ঘটনা, কখনও না ভুলতে পারা মুহূর্ত জীবন্ত হয়ে উঠেছে সিনেমার প্রতিটি ছত্রে ছত্রে। ৮৩ তে রণবীর সিং, কপিল দেব এর ভূমিকায় ১০০ শতাংশ সফল বলেই মনে করছেন সবাই। সেখানে দীপিকা পাড়ুকোন, কপিল দেবের পত্নী রুমির ভূমিকায় যথাযথ বলে রিভিউতে উঠে এসেছে। সকলেই বলছে নেই ফিল্ম আরও একটি ব্লকবাস্টার হিট হতে চলেছে। শুধু হিন্দি নয় এই সিনেমাটি অন্য ভাষা গুলিতেও রিলিজ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।