
Avatar: The Way of Water Review: বহু প্রতীক্ষিত হলিউড ছবি 'অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার ' (Avatar: The Way of Water of Water), যার জন্য সবাই অপেক্ষা করছিল, ১৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার অসংখ্য সিঙ্গল স্ক্রিন আর মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে। ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া অবতার ছবিটি দর্শকদের কাছ থেকে অফুরন্ত ভালবাসা পেয়েছিল। যে কারণে ১৩ বছর পর 'অ্যাভেটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার' ছবির দ্বিতীয় অংশ নিয়ে সবার মধ্যেই যথেষ্ট কৌতুহল ছিল। এই ছবিতে পাঁচটি উপাদানের আভাস দিয়েছেন পরিচালক। আর ছবিতে পাঁচটি উপাদানের উল্লেখ করা মাত্রই এই ছবির সঙ্গে ভারতীয় সমাজ-দর্শণ-সংস্কৃতির সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন দর্শক থেকে সমালোচকরা।
'অবতার'-এ (Avatar: The Way of Water of Water) জেমস ক্যামেরন (James Cameron) ২১৫৪ সালে প্যান্ডোরার কাল্পনিক জগতের সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করিয়েছেন। যেখানে নীল রঙের মানুষের জনবসতি, তাঁদের সমাজ-সভ্যতা দেখানো হয়েছে। ক্যামেরন যার নাম রেখেছেন নাভি। এরা দেখতে মানুষের মতো হলেও, এরা মানুষ নয়। একই সঙ্গে ছবির দ্বিতীয় পর্বে জলের নিচের অজানা এক স্বপ্নের জগৎ দেখিয়েছেন পরিচালক। 'অবতার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার'-এ দেখানো হয়েছে কীভাবে নাভিরা জলে বাস করে আর গভীর জলের প্রাণীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে, মিলেমিশে এক বৃহৎ সংসার গড়ে তুলেছে।
'অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার' (Avatar: The Way of Water of Water)-এর গল্প:
জেমস ক্যামেরন (James Cameron) সুলির পরিবার ও প্যান্ডোরা গ্রহে তাদের জীবনযাপনের পরবর্তী অধ্যায় তুলে ধরেছেন। কিন্তু এই পর্বে আকাশবাসীরা সুলির পরিবারকে আবার খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু করেছে। এখন সুলির পরিবারে তার ৪ সন্তান রয়েছে, দুই ছেলে আর দুই মেয়ে। কিন্তু এখন পুরনো শত্রুরা ফিরে এসেছে এবং আকাশবাসীরা তাদের আক্রমণ করেছে। এই অবস্থায়, তার পরিবারকে রক্ষা করার জন্য, সুলি এবং তার পরিবার তাদের নির্দিষ্ট এলাকা ছেড়ে উপকূলীয় এলাকার অন্য গ্রামে চলে যায় এবং সেখান থেকে তাদের জলযাত্রা শুরু হয়।
জঙ্গলের এই 'নাভি'রাই এখানে উপকূলীয় উপজাতির অংশ হয়ে উঠেছে এবং জল-জগতের মুখোমুখি হয়েছে। নিজের পরিবারকে বাঁচাতে একজন বাবা যা যা ত্যাগ করতে পারেন, যতটা কঠিন লড়াই চালাতে পারেন, এই গল্পেও প্রতি ছত্রে ছত্রে সেটাই ফুটে উঠেছে। পরিবারের গুরুত্ব, বন্ধনের শক্তি এই গল্পে অন্য আঙ্গিকে তুলে ধরা হয়েছে।
'অ্যাভাটার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার' (Avatar: The Way of Water of Water)-এর ভিজ্যুয়াল এফেক্ট:
জেমস ক্যামেরনের (James Cameron) চলচ্চিত্রটি প্রথমবারের মতো একটি ভিজ্যুয়াল মাস্টারপিস হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ, প্রথম ছবিটি এমন প্রত্যাশা জাগিয়েছিল, যে দ্বিতীয় ছবিটির পর্বের (Avatar: The Way of Water of Water) মুক্তির খবরেই অনেকে আগাম বুকিং শুরু করে দেন। ছবির প্রতিটি দৃশ্য দেখে আপনি সেই গ্রহের সৌন্দর্যে, সেই অজানা জগতে হারিয়ে যাবেন। কোথাও কিছুই কাল্পনিক বলে মনে হবে না। ভিএফএক্স-এর দুর্দান্ত কাজে 'অ্যাভাটার ২' আবার একটি স্বপ্নময় অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করতে চলেছে। ছবির অ্যাকশন দৃশ্যগুলো অসাধারণ। জলের নিচের লড়াই হোক বা হাওয়ায় উড়ে যাওয়া পাখির সঙ্গে নৌকার লড়াই— প্রতিটি দৃশ্যই দর্শকের মন জয় করে নেবে।
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি দর্শক 'অবতার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার' ছবিটির ভিএফএক্স-এর কাজে মুগ্ধ, বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। যাঁরা আগামী দিনে দেখবেন বলে ভাবছেন, এই ছবিটি দেখার পর দর্শকদের সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে। এই জগতটি পঞ্চতত্ত্বের একটি উপাদানের উপর ভিত্তি করে দেখানো হয়েছে। ভারতীয় পৌরাণিক গ্রন্থে জলে বসবাসকারী বিভিন্ন ধরনের প্রাণীর বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ক্যামেরনের ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, তিনি অবতার ছবিটি ভারতীয় প্রাচীন দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করেছিলেন। বলিউড অভিনেতা গোবিন্দাও বছর খানেক আগে একটা সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, তাঁর মুখে অবতার শব্দটা শুনেই এই ছবির নাম রাখেন ক্যামেরন।
এই ছবিটি ৩৮০০টিরও বেশি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে, যা এটিকে হলিউডের সবচেয়ে বড় রিলিজ করে তুলেছে। সেই সঙ্গে ছবিটি নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট কৌতুহল ও উৎসাহ তৈরি হয়েছে দর্শকের মনে। তবে ছবিটি কিন্তু ৩ ঘণ্টা ১৩ মিনিটের। এতক্ষণ হলে দর্শকদের বসিয়ে রাখাটা বেশ বড় চ্যালেঞ্জ। জেমস ক্যামেরনের (James Cameron) কাল্পনিক জগৎ মানুষের মনে তার গভীর ছাপ রেখে যেতে সফল হচ্ছে। ভারতে 'অবতার: দ্য ওয়ে অফ ওয়াটার'-এর অগ্রিম বুকিং চলছে। অগ্রিম বুকিংয়ের দিক থেকেও ছবিটি ২০ কোটিরও বেশি ব্যবসা করেছে।