Star Theatre: স্টার অবশেষে 'বিনোদিনী মঞ্চ', মুখ্যমন্ত্রীকে কী বললেন মঞ্চের 'নটী' সুদীপ্তা?

Star Theatre: শহরে রয়েছে শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, গিরিশ মঞ্চ, রবীন্দ্রসদন। কিন্তু ১৪০ বছর ধরে লড়াই করেও স্টার থিয়েটার তাঁর নামে হয়নি। ১৮৮৩ সালে এই থিয়েটার গিরিশ ঘোষ গড়ে তুললেও এই নাট্যমঞ্চের নেপথ্যের কারিগর বিনোদিনী দাসী। আর এতগুলো বছর পর অবশেষে স্টার থিয়েটারের নাম বদলে করা হল 'বিনোদিনী মঞ্চ'।

Advertisement
স্টার অবশেষে 'বিনোদিনী মঞ্চ', মুখ্যমন্ত্রীকে কী বললেন মঞ্চের 'নটী' সুদীপ্তা?মমতাকে কী বললেন সুদীপ্তা?
হাইলাইটস
  • এই ঘোষণার পর আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না মঞ্চের বিনোদিনী দাসী তথা সুদীপ্তা চক্রবর্তী।

শহরে রয়েছে শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, গিরিশ মঞ্চ, রবীন্দ্রসদন। কিন্তু ১৪০ বছর ধরে লড়াই করেও স্টার থিয়েটার তাঁর নামে হয়নি। ১৮৮৩ সালে এই থিয়েটার গিরিশ ঘোষ গড়ে তুললেও এই নাট্যমঞ্চের নেপথ্যের কারিগর বিনোদিনী দাসী। আর এতগুলো বছর পর অবশেষে স্টার থিয়েটারের নাম বদলে করা হল 'বিনোদিনী মঞ্চ'। সন্দেশখালির সভা থেকে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ঘোষণার পর আবেগ ধরে রাখতে পারছেন না মঞ্চের বিনোদিনী দাসী তথা সুদীপ্তা চক্রবর্তী। কোথাও গিয়ে এটা যেন তাঁরও জয় বিনোদিনীর এই লড়াইয়ে। bangla.aajtak.in-কে জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া।

স্টার থিয়েটার অবশেষে বিনোদিনী মঞ্চ, কেমন অনুভূতি? আবেগ ধরা গলায় সুদীপ্তা বলেন, 'খুবই খুশি। আমরা প্রায় ২ বছর ধরে গলা ফাটাচ্ছি মঞ্চে, বিনোদিনী অপেরার প্রত্যেক শো-এর শেষেই চিৎকার করি যে আজ পর্যন্ত কেন হল না? সবার নামে হল আছে বিনোদিনীর নামে হল হতে কোথায় অসুবিধা? আমাদের তো গিরিশ মঞ্চ, শিশির মঞ্চ, মধুসূদন মঞ্চ, রবীন্দ্রসদন সবই যদি থাকতে পারে তাহলে বিনোদিনী মঞ্চ কেন থাকবে না? বিনোদিনীকে তো কথা দেওয়া হয়েছিল তাঁর নামেই হলটা হবে, এই কথাতে রাজি হয়েই উনি গুরমুখ রায়ের কাছে গিয়েছিলেন। গুরমুখ রায় বলেছিলেন তিনি টাকা দেবেন হল করার কিন্তু তাঁর বিনোদিনীকে চাই। উনি তো সেই শর্তেই রাজি হয়েছিলেন। তারপরে তো তাঁকে প্রতারণা করে স্টার থিয়েটার নাম হয়। এরপর স্টার যখন পুড়ে গেল, যখন নতুন করে গড়ে তোলা হল তখন নাম হতে পারত বিনোদিনী থিয়েটার, তখনও কেন হল না? তখন যে হল না এখনও কেন হল না?'

ছবি সৌজন্যে: ফেসবুক

অভিনেত্রী বলেন, 'সেই সময় না হয় অনেকেই যুক্তি দিয়েছিলেন যে বিনোদিনী বারবণিতা, ওঁনার নামে থিয়েটার হলে কোনও ভদ্রলোকেরা নাটক দেখতে আসবেন না। আর ২০২৩-২৪-এ দাঁড়িয়েও যদি আমরা এটা ভাবি, তাহলে কি আমরা একটুও পাল্টালাম না। এইসব নিয়ে আমরা প্রত্যেক নাটকের শোয়ের শেষে দর্শকদের সরাসরি প্রশ্ন করেছি আমি নিজে। আমাদের ৩১টা শো হয়ে গেছে বিনোদিনী অপেরার এবং প্রত্যেক শোয়ে দর্শক তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন যে তাঁরা চান বিনোদিনীর নামে থিয়েটার হোক। তবে এত বছর পর এই বার্তা যেখানে পৌঁছানোর কথা সেখানে পৌঁছানো গেছে।' কিন্তু এতটা দেরি কেন? সুদীপ্তা বলেন, 'কেউ ভাবেনি এটা নিয়ে, কারোর মনে হয়নি যথেষ্ট প্রয়োজনীয়। প্রথম কথা অনেকেই তো আমরা ইতিহাস জানি না, আর জানলেও এড়িয়ে চলি। এই সবের জন্যই এতটা দেরি হল।' 

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কী বলবেন? গলায় উচ্ছাস নিয়ে সুদীপ্তা বলেন, 'আমি মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। অবশেষে এটা হচ্ছে এটা জেনে আমি যারপরনাই খুশি। যদিও এটা পরিচালকের যোগ করা কিন্তু সেটা তো আমার মুখ থেকেই দর্শক বারে বারে শুনেছে, তাই আমার কষ্টের জায়গা কোথাও গিয়ে একটা থেকেই গিয়েছে। আজকে আমি ছোটদের ওয়ার্কশপ করাচ্ছিলাম সেখানেই খবরটা পেলাম এবং সত্যি কথাই প্রত্যেক শোয়ে এটা বলার সময়ই গলা ধরে আসে, চোখে জল চলে আসে এটা ভেবে যে এই অন্যায়টা এত বছর ধরে হয়েই চলেছে একজনের ওপর। বিনোদিনীর নামে একটা মঞ্চ করতে এত সমস্যা, আসলে পুরুষতান্ত্রিকতা তো মজ্জায়।'  তবে এর সঙ্গে সুদীপ্তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি দাবিও রেখেছেন। অভিনেত্রী বলেন, ' একথাও আমাদের নাটক শেষে বলি, স্টারে কিন্তু এখন সিনেমা দেখায়, নাটক আর হয়না। তাই আমার দাবি রইল, স্টার থিয়েটারে নাটক মঞ্চস্থ হওয়া শুরু হোক। তবেই এই নামকরণ সার্বিক সার্থকতা পাবে।'

শেষে অভিনেত্রী এটা বলতে ভুললেন না এটা শুধু তাঁদের নয়, গোটা আঙ্গিক দলের জয়। এটা অবন্তী চক্রবর্তী, নীল মুখোপাধ্যায়, তথাগত প্রত্যেকে তাঁরা গলা ফাটান অভিনয়ের শেষে। সবার জয়। সুদীপ্তা বলেন, 'এটা তো আমি একা দায়িত্ব নিয়ে করি না, সেটা তো পরিচালক চেয়েছেন বলে এভাবে নাটকটা শেষ হয়েছে। প্রত্যেকটা শোয়ে এটা আমরা করি। এটা যে অবশেষে হল সত্যিই দারুণ ব্যাপার।'   

POST A COMMENT
Advertisement