ফেসবুকে এখন কেকে ভক্তদের আক্রমণের মুখে রূপঙ্কর বাগচি। ফেসবুক লাইভে তাঁর 'হু ইজ কেকে ম্যান?' মন্তব্যের জন্য কটাক্ষ, কটূক্তি, অভিসম্পাত এমনকি হুমকি পর্যন্ত পেতে হচ্ছে গায়ককে। এনিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন রূপঙ্কর। শুক্রবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান,'নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। ফেসবুক থেকে ওই ভিডিও ডিলিট করলাম। আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কেকে যেখানেই থাকুন ঈশ্বর যেন তাঁকে শান্তিতে রাখেন।'
তাঁকে বিভীষিকর মুখে পড়তে হয়েছে বলেও দাবি করেন রূপঙ্কর। তিনি বলেন,'সঙ্গীতজীবনে কখনও এমন বিভীষিকার মুখোমুখি হইনি। যেখানে ওড়িশায় বসে করা একটি ভিডিয়ো পোস্টে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার গোটা পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক, দুর্ভাবনা এবং মানসিক নিপীড়নের মধ্যে। বাড়ি পাহাড়া দিচ্ছে টালা থানার পুলিশ।' তিনি যোগ করেন,'গায়ক হিসেবে দেশেবিদেশে ভালবাসা পেয়েছি। স্বীকৃতি পেয়েছি নানা স্তরে। মুহূর্তের অসতর্কতা। এমন আবেগ, এত ঘৃণা, এতো আক্রোশ, এতো বিরুদ্ধতা- বক্তব্য ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে না পারায়!'
'হু ইজ কেকে?' বিতর্কিত ভিডিওয় শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবেননি রূপঙ্কর। বরং সতীর্থ বাঙালি গায়কদের কথাও তুলে ধরেছেন বলে এ দিন ব্যাখ্যা দেন। তাঁর কথায়,'কেকে-র সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও বিদ্বেষ নেই। ওঁর কনসার্ট নিয়ে উন্মাদনা নিয়ে বলতে চেয়েছিলাম বাঙালি গায়কদের নিয়েও দরদ দেখান। ব্যক্তিগত হতাশা নেই। সমষ্টিগত বিপন্নতা রয়েছে। দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারত শিল্পীদের স্বার্থরক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমরা যেন দ্বিধাগ্রস্ত! প্রাদেশিক পারফর্মার অস্তিত্ব সংকটে দাঁড়িয়ে। আমি একার কথা বলতে চাইনি। সমষ্ঠির কথা বলতে চেয়েছিলাম। সহযোদ্ধাদের ট্যালেন্ট জাতীয় পর্যায়ের। এককভাবে ইস্যুকে দেখিনি। এটা নিছক প্রতীকী ছিল। লক্ষ্য কখনও কেকে ছিলেন না। কে জানত চরম দুর্ভাগ্য ওঁত পেতে রয়েছে! কলকাতার মঞ্চে গাইতে এসে যেভাবে প্রাণ হারালেন সেটা ভীষণ হৃদয়বিদারক।'
'হু ইজ কেকে ম্যান'? ফেসবুক লাইভে এসে তাঁর এই মন্তব্যের পর শুরু হয়েছিল বিতর্ক। তিনি দাবি করেছিলেন,'কেকে-র মতো বম্বে শিল্পীর চেয়ে বাংলার শিল্পীরা অনেক ভাল গান করেন।' ঘটনাচক্রে ওই দিনই কেকে-র অকস্মাৎ মৃত্যু হয়। রূপঙ্কর কেকে ভক্তদের নিশানায় চলে যান। কটাক্ষ, কটূক্তি তো আছেই খুনের হুমকি পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন রূপঙ্করের স্ত্রী। এর মাঝেই ভাইরাল হয় কেক প্রস্তুতকারী সংস্থার হয়ে রূপঙ্করের একটি 'জিঙ্গল'। শুক্রবার তারা জানিয়েছে, রূপঙ্করের কথা সমর্থন করছেন না। জিঙ্গল নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন- গান গেয়ে ওঠার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে সব শেষ, ওই সময় কী ঘটেছিল?