'হু ইজ কেকে' বিতর্কের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে গান গাইতে উঠলেন রূপঙ্কর বাগচি (Rupankar Bagchi)। কলকাতার একটি হলে গাইলেন। তাঁকে ঘিরে ছিল পুলিশি নিরাপত্তা। শুধু নিজে গাইলেনই না দর্শকের অনুরোধও রাখলেন। মুখে স্বস্তির হাসি নিয়ে রূপঙ্কর জানালেন,'ধন্যবাদ এই অনুরোধটা প্রয়োজন ছিল।'
নেট মাধ্যমের ভাইরাল ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, রূপঙ্কর গাইছেন, 'আমার মতে তোর মতন কেউ নেই'। যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে কেকে মৃত্যু পরবর্তী অধ্যায়ে যা ঘটল। গানটি সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের 'হেমলক সোসাইটি'-র। সুর দিয়েছেন অনুপম রায়। গল্পে অবসাদ থেকে জীবনে ফিরেছিলেন নায়িকা কোয়েল মল্লিক। এ দিন অন্ধকার থেকে মঞ্চের আলোয় ফিরলেন রূপঙ্করও। তাঁকে গানের অনুরোধ করেন দর্শকরা। সেই অনুরোধ রেখেছেন গায়ক।
ফেসবুক লাইভে রূপঙ্কর প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেকে-কে নিয়ে বাংলায় যতটা আবেগ বাঙালি শিল্পীদের নিয়ে নেই কেন? সেই সঙ্গে কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন,'হু ইজ কেকে ম্যান?' ওই দিনই কলকাতায় নজরুল মঞ্চে পারফরম্যান্সের পর মৃত্যুর হয় কেকে-র। তার পর থেকে সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের রোষানলে গায়ক। তাঁকে লক্ষ্য কটূক্তি, কটাক্ষ উগড়ে দেন তাঁরা। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ গায়ক-পত্নীর।
আরও পড়ুন- 'বিয়ের ৮ বছরেও স্ত্রী-সুখ পাইনি', অভিযোগ MP-র; ১৫ কোটি দাবি অভিনেত্রীর
শুক্রবার বিকেল ৫টায় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে দুঃখপ্রকাশ করেন রূপঙ্কর। কোনও প্রশ্নোত্তরের উত্তর দেননি। খালি বিবৃতি পাঠই করেছেন। তিনি জানান,'প্রয়াত কেকে-র পরিবারের কাছে নিঃশর্ত দুঃখপ্রকাশ করছি। আমার যে ভিডিয়োটি গত ক'দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ও তার বাইরে এত বিরামহীন উত্তেজনার উপাদান হয়েছে, এখানে পৌঁছনোর আগে সেটি আমি ফেসবুক থেকে ডিলিট করলাম। কেকে আজ যেখানেই থাকুন, ঈশ্বর যেন ওঁকে শান্তিতে রাখেন।'
তিনি আরও বলেছিলেন'আমার সঙ্গীতজীবনে এই রকম বিভীষিকার মুখোমুখি হতে হবে ভাবিনি। যেখানে ওড়িশায় বসে-করা একটা ভিডিয়ো পোস্ট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে, যা আমার গোটা পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম আতঙ্ক, দুর্ভাবনা এবং মানসিক নিপীড়নের মধ্যে। যেখানে আমার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা রক্ষায় পাহারা দেবে টালা থানার পুলিশ। নিয়ত হুমকি এসেই যাবে আমার স্ত্রীর ফোনে।'
বাংলার অন্য গায়কদের কথা ভেবেও ওই মন্তব্য করেছিলেন বলে দাবি রূপঙ্করের। তাঁর কথায়, 'কেকে-কে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনও বিদ্বেষ নেই। আমি শুধু ওঁর কনসার্ট নিয়ে তৈরি-হওয়া উন্মাদনা দেখে বলেছিলাম, বাঙালি গায়কদের জন্যও আপনারা একই রকম দরদ দেখান। গায়ক হিসেবে আমার কোনও হতাশা নেই। তবে বাঙালি গায়ক হিসেবে সমষ্টিগত বিপন্নতা রয়েছে। দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারত যে ভাবে তার শিল্পীদের স্বার্থরক্ষার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমরা যেন দ্বিধাগ্রস্ত। শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীত সবেতেই প্রাদেশিক পারফর্মার যেন কঠিন খাদের ধারে এক অস্তিত্বের সঙ্কটে দাঁড়িয়ে। তাই আমি একার কথা বলতে চাইনি। সমষ্টির কথা বলতে চেয়েছিলাম।'
আরও পড়ুন- '১৭ বছরেই কুমারীত্ব হারাই,' কাকার কুকর্ম ফাঁস করলেন অভিনেত্রী