মা শব্দটার মধ্যে লুকিয়ে আছে অপরিসীম শক্তি। অপার মহিমা। মাকে নিয়ে সবারই এক অদ্ভুত ভাললাগা জড়িয়ে আছে। কত রকমের গল্প মিশে আছে মাকে ঘিরে।
এবারের পুজোয় নিজের মাকে নিয়ে কলম ধরেছেন বাংলার গুণী শিল্পীরা। এঁদের মধ্যে আছেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা এবং পরিচালক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, সুদীপ্তা সরকার, রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়, কনিনীকা, তৃণা সাহা, কবি এবং গীতিকার শ্রীজাত, সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর।
সেলিব্রেটিদের মায়েদের গল্প বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে "এটা আমার মা'। বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব প্রাঙ্গনে এই বই লঞ্চ করলেন আরও একজন অভিনেত্রী বাসবদত্তা।
এই বইতে তৃণা লিখেছেন, “যখন খুব ছোট ছিলাম, শাড়ি, সালোয়ার পরতে ভালবাসতাম। মা তখন বলত, কী পরিস! বুড়োদের মতো, আন্টিদের মতো, বয়স্কদের মতো…। এখন আমি ততটাই উল্টো। এখন আমার ওগুলো পরতে একদম ভাল লাগে না। সাজতেও ভাল লাগে না। মা এখন আবার আমার সেই ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছে। আমাকে সাজাতে চায়।”
সোহিনীর সরকার স্মৃতিচারণ করেছেন, “মফস্বল থেকে এসে অভিনয় করার মতো আনকনভেনশাল কাজ করার সাহস মা আমার মধ্যে বুনে দিয়েছিল। আর নিজের পায়ে বাঁচার ইচ্ছে তৈরি করে দিয়েছিল মা।” সাধারণ থাকার পাঠ রূপঙ্করের পাওয়া মায়ের কাছ থেকেই। যা তাঁর আজীবনের পাথেয়। মেয়েকেও তিনি সেই শিক্ষাই দেন। আবার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় মায়ের মধ্যে দেখেছিলেন স্নেহ এবং হার না মানা মনোভাব।
কনীনিকা মাকে স্যাক্রিফাইস করতে দেখেছেন। তিনি লিখেছেন, “জানি না, মায়ের মতো কোনওদিন হতে পারব কি না। সেটা হওয়া কঠিন। কারণ আজকালকার মেয়েরা নিজেদের দিকটা একটু হলেও বোঝে। সব দিক বুঝে এগোতে হয়। আমাদের মায়েদের সময়টা ছিল, নিজের জীবনের সব কিছু স্যাক্রিফাইস করে অন্যদের ভাল রাখার প্রচেষ্টা। সেটা আমাদের জেনারেশনে হয়তো আমরা একটু বদল নিয়ে এসেছি।”
সুদীপ্তার কথায় আবার উঠে এসেছে অন্যকে ভাল রাখার মায়ের অনন্ত প্রয়াস। তিনি শেয়ার করেছেন, “আমি জন্মদিনে একবার মাকে দুটো মিনে করা বালা দিয়েছিলাম। মা তাতেই আঁতকে উঠেছিল। ‘তুই এত টাকা খরচা করে ফেললি?’ মায়ের জীবনে কোনওদিন ভাল পরব, ভাল খাব, ভাল থাকব… নিজের জন্য কোনও দিন ভাবতে শিখলেন না।”