
পহেলগাঁও হামলার পর থেকে দেশবাসীর একটাই দাবি ছিল উচিৎ শিক্ষা যেন পায় হামলাকারীরা। আর ৬ মে ভারত প্রথম প্রত্যাঘাত করে পাকিস্তানের ওপর। প্রতিবেশী দেশের ৯টি জায়গায় হামলা করে জঙ্গিদের ঘাঁটি উড়িয়ে দেয়। অপারেশন সিঁদুর-এর পরই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঘাত-প্রতিঘাত শুরু হয়ে যায়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কাশ্মীর সহ উত্তর ভারতের একাধিক এলাকায় হামলা চালানোর চেষ্টা করা হলেও তা ব্যর্থ করে ভারত। দেশের পক্ষ থেকে ক্রমাগত পাকিস্তানের ওপর আঘাত হানা হচ্ছে। এর আগে ১৯৯৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কারগিল যুদ্ধ হয়েছিল। আর এই যুদ্ধের সময় চর্চায় ছিলেন বলিউড অভিনেত্রী রবীনা ট্যান্ডন।
পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের অন্যতম পছন্দের নায়িকা ছিলেন রবিনা। আর তাই কয়েক জন ভারতীয় সেনা মস্করা করে তাঁদের প্রধানমন্ত্রীকে এই উপহার পাঠিয়েছিলেন। কারগিল যুদ্ধ চলাকালীন ভারত রবীনা ট্যান্ডনের পক্ষ থেকে একটি মিসাইল ফেলেছিল পাকিস্তানের ওপর। কারগিল যুদ্ধের সময় একাধিক ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছিলেন। সেই শহিদ হওয়া ভারতীয় সেনাদের পার্থিব দেহ দেশে পাঠানোর জন্য পাকিস্তানি সেনারা মজা করে শর্ত রেখেছিল যে এই দেহের বদলে ভারত যেন তাদের রবীনা ট্যান্ডন ও মাধুরী দীক্ষিতকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়। এর আগে অবশ্য পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ রবীনার জন্য নিজের অনুভূতি উজাড় করেছিলেন।
সেই সময় নওয়াজ শরিফ ভারত সফরে এসেছিলেন। আর রবীনার প্রতি নওয়াজ শরিফের অনুভূতির সুযোগ নেয় ভারতীয় এয়ার ফোর্স। তারা রবীনার নামে একটি মিসাইল পাঠিয়ে দেয় প্রতিবেশী দেশে। কারগিল যুদ্ধের সময় পাকিস্তানে হামলা চালানো এই ভারতীয় মিসাইলে লেখা ছিল, রবীনা ট্যান্ডনের তরফ থেকে নওয়াজ শরিফের জন্য। এর সঙ্গে ছিল হৃদয়ের ছবি, যেখানে তার এপার ওপার হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনার বেশ কয়েক বছর পর অভিনেত্রী প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। রবীনা এক্স হ্যান্ডেলে বলেছিলেন যে তিনি এই বিষয়ে অনেক পরে জেনেছিলেন।
কয়েক বছর পরে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে তিনি বলেন, ‘এই বোমার কথা আমি তখন জানতাম না। অনেক পরে জানতে পারি।’ কিন্তু তাঁর প্রতিক্রিয়ায় দেশপ্রেমের কথাই ফুটে ওঠে। যুদ্ধ, হানাহানি, রক্তপাতের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘গোটা পৃথিবীকে আমি একটাই উপদেশ দিতে চাই, যে সমস্যা ভালবাসা এবং কথোপকথন দিয়ে মেটানো যায়, তার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন নেই। রক্তের রং কাঁটাতারের এ পারেও লাল, ও পারেও। কত কত মা তাঁদের সন্তানকে হারিয়েছেন যুদ্ধে। সেই ঘটনাগুলিকে গর্বের চোখে দেখা উচিত নয়।’’ একইসঙ্গে রবিনা এ-ও জানান, যদি তাঁকে সীমান্তে দাঁড়াতে বলা হয়, তিনি সে কথা রাখবেন। বন্দুক হাতে।