দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে সঙ্গীতজগতের প্রয়াতদের স্মরণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাদা করে বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করলেন। সেই সঙ্গে মমতা জানান,'আপনারা কি ভাবেন ইংরেজি গান জানি না! হিন্দি গান মুখস্ত নেই! সব জানি। তা সত্ত্বেও বাংলা গান ভালবাসি। লোকগীতি. রবীন্দ্র সংগীত বা দ্বিজেনগীতি আবার হান্ড্রেড মাইলসও ভালবাসি।'
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন,'বাপ্পি লাহিড়ি অনেক ছাত্র-যৌবনদেব মন কেড়েছিলেন। যে গানগুলি আজকালকার ছেলেমেয়েরা পছন্দ করে। তাছাড়াও 'মঙ্গলদীপ জ্বেলে' গানটা বাপ্পিদা গেয়েছিলেন। আমার সঙ্গে দেখা হলেই বাপ্পিদা বলতেন মমতা তুমি দু'টো গান লিখে দাও না আমি গাইব। আমি একটা গান দিয়েও ছিলাম। হয়তো সময় করে উঠতে পারেননি। সন্ধ্যাদিও আমায় খুব স্নেহ করতেন।'
এর আগে সন্ধ্যা মুখোপাধ্য়ায়ের প্রয়াণের পর তাঁর সঙ্গে আত্মিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরেছিলেন মমতা। তিনি বলেছিলেন,'ছেলেমানুষের মতো ছিলেন সন্ধ্য়াদি। আমায় যখনই ফোন করতেন, একটা গান শোনাও বলতেন। বলতাম, দিদি আপনি গানের দিশারি, আমি আপনার সামনে কখনও গাইতে পারি? তা-ও তিনি ছাড়তেন না। তাই ফোনেই গান শোনাতে হত।'
বাংলার ভাষা শিশুদের শেখানোর জন্য মা-বাবার দায়িত্ব মনে করিয়ে দেন মমতা। বলেন,'সব ভাষাকে অভিনন্দন জানাব। সারা পৃথিবীর ভাষা সমৃদ্ধ হোক। ভাষার অবলুপ্তি না হয়ে যায়! আমি সব ভাষাকে ভালবাসি। তবে যে ভাষায় মা বলতে শিখেছি সেটাকে তো জানতে হবে। আমি লক্ষ্য করে দেখছি, আমরা নিজেরাই বাংলা ভাষা শেখার জন্য ভাষাকে উৎসাহ দিই না।' ইংরেজি জানতে হবে কিন্তু বাংলাও জানা দরকার।' নিজের লেখা একটি কবিতাও পড়েন,'একুশ আমাদের মনে করিয়ে দেয় অনেক দিনের কথা একুশ মানে মনের কথা একুশ মানে মাটির ভাষা...'
ভাষা দিবস উদযাপনে বাম সরকার কিছুই করত না বলে দাবি করেন মমতা। তাঁর কথায়,'সব ভাষা রয়েছে আমার উত্তরীয়তে। একুশ নিয়ে দু-তিনটে কবিতা আছে। একটা ২১ জুলাই একুশ বছর পার হওয়ার পর লিখেছি। তখন রাজ্য সরকার ভাষা দিবস পালন করত না। আমি সাংসদ তহবিলের টাকা দিয়ে ভাষা শহিদের স্মরণে মূর্তি তৈরি করেছিলাম। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর একুশে পার্ক তৈরি হয়েছে। সেখানে যোগেনদার একটা ট্যাচু আছে।'
বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। সেই উপলক্ষে এক মাস ধরে উৎসব উদযাপনের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। এ দিন মমতা বলেন,'আমাদের দুর্গা বাংলার মাটি দিয়ে তৈরি হয়। তাকে হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কো। আমরা রেড রোডে কার্নিভাল করেছি। এবার দুর্গাপুজোর শুরুতেও র্যালি করব শেষেও। পয়লা সেপ্টেম্বর আর একটা র্যালি করব। এক মাস আগে থেকে করলে ক্লাবগুলিও উৎসাহ পাবে।'
আরও পড়ুন- ভাইপোর পর অর্জুনের ছেলেও তৃণমূলে? জ্যোতিপ্রিয়-মন্তব্যে জল্পনা