scorecardresearch
 

Rwitobroto Mukherjee: আমি স্টারকিড নই, আমার বাবা স্টার নন: ঋতব্রত

Rwitobroto Mukherjee: সদ্যই সাবাশ ফেলুদা সিরিজে তোপসে চরিত্রে অভিনয় করে সকলের মন জয় করেছেন অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। শিশুশিল্পী হিসাবেই বাংলা সিনেমায় হাতেখড়ি হওয়া ঋতব্রত এখন যথেষ্ট পরিচিত এক মুখ। থিয়েটার থেকে শুরু করে সিনেমা সবেতেই তাঁর অভিনয় দর্শকদের মন জয় করছে।

Advertisement
ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়
হাইলাইটস
  • সদ্যই সাবাশ ফেলুদা সিরিজে তোপসে চরিত্রে অভিনয় করে সকলের মন জয় করেছেন অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। শিশুশিল্পী হিসাবেই বাংলা সিনেমায় হাতেখড়ি হওয়া ঋতব্রত এখন যথেষ্ট পরিচিত এক মুখ।

সদ্যই সাবাশ ফেলুদা সিরিজে তোপসে চরিত্রে অভিনয় করে সকলের মন জয় করেছেন অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। শিশুশিল্পী হিসাবেই বাংলা সিনেমায় হাতেখড়ি হওয়া ঋতব্রত এখন যথেষ্ট পরিচিত এক মুখ। থিয়েটার থেকে শুরু করে সিনেমা সবেতেই তাঁর অভিনয় দর্শকদের মন জয় করছে। ওপেন টি বায়োস্কোপ, জেনারেশন আমি, রক্ত রহস্য, পর্নোমোচী, দ্বিতীয় পুরুষ, দুর্গা সহায় সহ বেশ কিছু সিনেমায় ঋতব্রত ইতিমধ্যেই নিজের অভিনয় প্রতিভাকে তুলে ধরেছেন। বাংলা ডট আজতক ডট ইন-এর সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় ধরা দিলেন অভিনেতা। 


তোপসে বা তপেশ রঞ্জন মিত্রর চরিত্রে অভিনয় করলে, কেমন অভিজ্ঞতা?

ঋতব্রত: ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই ভালো অভিজ্ঞতা। আমি যখন থেকে বিভিন্ন ধরনের কিশোর চরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেছি, তখন থেকেই দর্শকেরা বা নির্মাতারা অনেকসময়ই আমাকে বলেছে যে তুই তোপসে করলে ভালো হয় বা তুমি কেন তোপসে কর না। এটা তো মৌখিকভাবে শুনেছি আর দেখা-সাক্ষাতেও অনেক সময়ই শুনেছি, এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেক ফ্যানপেজ থেকেও আমার ছবি এঁকে বলা হয়েছে যে বর্তমানের তোপসে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বহু মানুষ চেয়েছেন যে যাতে আমায় তোপসে হিসাবে তাঁরা দেখতে পারেন, সেটা আমার কাছে খুবই বড় পাওনা। যেখানে এক অভিনেতাকে তাঁর অভিনয় ও কাজের জন্য সাহিত্যের এক জনপ্রিয়, বাঙালিদের আবেগ যেটাকে বলা যায়, সেই সবটা নিয়েই একটা চরিত্র, সেখানে যখন দর্শকরা আমাকে দেখতে চান, সেটা সত্যিই খুব ভাল লাগে। যখন থেকে তোপসে চরিত্রে আমার নাম ঘোষণা হয়েছে, আমায় বহু মানুষ জানিয়েছেন যে তাঁদের অনেক দিনের শখ ছিল যে আমায় তোপসে চরিত্রে তাঁদের দেখার ইচ্ছা রয়েছে। সেই ইচ্ছাটা তাঁদেরও পূরণ হয়েছে। 

আরও পড়ুন

সত্যজিতের ফেলুদায় তোপসে ছিলেন সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়, এরপর অনেকেই এই চরিত্রে অভিনয় করেছে, কতটা চাপ ছিল?

Advertisement

ঋতব্রত: আমার ওপর কোনও চাপই ছিল না। চাপ তৈরি করে নেটিজেন নামে একজন উঠেছেন শুনলাম, তারা নেটে থাকেন। আমার আসলে এই শব্দটায় গুরুতর আপত্তি রয়েছে। নেটিজেন আবার কী, সিটিজেন যদি হন তবে সিটিতে থাকুন, নেটিজেন আবার কোথা থেকে এল। ইন্টারনেট হল সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল একটা জায়গা। ট্রোলিং নিয়ে আমার এতটাই আপত্তি রয়েছে যে আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ নই। আমার ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজ রয়েছে যেখানে শুধুমাত্র কাজের আপডেট থাকে। আর ন মাসে ছ মাসে আমার মা-বাবা অথবা আমার বা আমার কোনও বন্ধুর জন্মদিন থাকলে সেটার আপডেট থাকে। আমি ব্যক্তিজন জীবনের কোনও কিছুই প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে রাজি নই আর সেটা পছন্দও করি না। তো এই চাপটা তৈরি করেন নেটে যারা আছেন তারা বিভিন্নভাবে। শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের চরিত্র ৩৬০ জন অভিনেতা অভিনয় করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। কখনও পর্দায়, কখনও অডিওতে, সিরিজে, তারপরও যদি কোনও মৌলিক ছবিতে বা কোনও রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জীবনীতে এক্স নামের কোনও অভিনেতাকে অভিনয় করতে বলা হয়, তাঁর মাথাতে এই ৩৬০ জন অভিনেতার চাপ বর্তায় না। কারণ এটি একটি নতুন ছবি, নতুন স্ক্রিপ্ট, নির্মাতারা এটা নতুন আদলে তৈরি করতে চলেছে। এগুলো আসলে অশিক্ষা থেকে আসে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা নিয়ে তির্যক মন্তব্য করা হয়। আগে এতজন অভিনেতা অভিনয় করেছে আর আমি তারপর করছি, এ ধরনের কোনও চাপ আমার ওপর বর্তায় না। গ্যাংটকে গণ্ডগোল-সাবাশ ফেলুদা ২০১৭ সালের কনটেক্সে এটাকে গ্রহণ করা হয়েছে। একদম নতুন একটা দৃষ্টিভঙ্গী এসেছে এই সিনেমায়। আমার কাছে আমার পরিচালক যেভাবে বলছে, স্ক্রিপ্টে যেটা বলা হয়েছে সেটাই আমার কাছে প্রথম অগ্রাধিকার। বাকি চাপ আমার ওপর আসে না।  

তোপসে হওয়ার প্রস্তাব যখন অরিন্দম শীলের কাছ থেকে পাও কেমন লেগেছিল?

ঋতব্রত: কোভিডের সময় বা লকডাউনের সময় যখন সবে সাবাশ ফেলুদা নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে সেই সময় অরিন্দম শীল আমায় ফোন করেন এবং বলে যে আমার এরকম একটা ইচ্ছা রয়েছে, আমি যদি ফাইনালি ফেলুদাটা করতে পারি তা হলে তোকেই আমার তোপসে হিসাবে চাই। এটা একরকম চ্যানেল থেকেও আমায় বলা হয়েছিল যে আমি তোপসে চরিত্রটা করি। তো সেটা একটা খুবই আনন্দের ব্যাপার যে এই চরিত্রের জন্য, যেটা আগে বহু মানুষ অভিনয় করেছেন, খুবই জনপ্রিয় একটি চরিত্র, সাহিত্যের চরিত্র বিশেষ করে, এতটা প্রিয় মানুষের চরিত্র, সেখানে যখন নির্মাতারা ও দর্শকেরা, কোনও এক অভিনেতাকে, সেটা আমি আমার ক্ষেত্রে বলতে পারি আমি যখন থেকে টিনেজ রোল পেতে শুরু করেছি, পোস্ট দুর্গাসহায় ওই সময়টা থেকে, মানুষ দেখতে চেয়েছেন সেটা খুবই আনন্দের একটা ব্যাপার। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অফার এসেছে কিন্তু আমার করে ওঠা হয়নি। এবার আমি খুবই খুশি যে এবার আমার করা হল। কারণ আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি যে, আমার পড়াশোনাটা সেটা নিয়েই, আমি তুলনামূলক সাহিত্য় নিয়ে যাদবপুর থেকে স্নাতকোত্তর করছি, যে কোনও ধরনের সাহিত্য, শিল্প, আর্ট, শিল্পীদের কাজ বেঁচে থাকে হচ্ছে পরবর্তী সময়ে সেটা পুর্নগঠন হচ্ছে বা পুর্ননির্মিত হচ্ছে সেটার ওপর। এক্ষেত্রে বিবিসিতে হওয়া শার্লক হোমসের কথা বলতে হয়, যাকে গোটা বিশ্ব সমসাময়ির শার্লক হিসাবে গ্রহণ করেছেন, তাহলে আমরা কেন পারব না। আগামী প্রজন্মর হয়ত ফেলুদা পড়ার সময় থাকবে না, তাদের জন্য তো আজকের যুগের ফেলুদা করা যেতে পারে। সেই জায়গাটা থেকে আমার ভালো লাগছে যে আমার তোপসের মতো একটা চরিত্র করা হল। যেখানে ফেলুদা, গ্যাংটক রহস্য সবটাই রয়েছে আর যেখানে তোপসের মতো একটা নতুন অ্যাপ্রোচকে নিয়ে আসা হয়েছে। যে একজন কলেজ পড়ুয়া, যে পড়াশোনা করে, স্মার্ট একটি ছেলে, যে বিভিন্ন দক্ষতাকে নিজের মধ্যে আনতে চায় আবার ফেলুদার অনেক কিছু সে নিজে গ্রহণ করতে চায়। আমার খুব ভালো লেগেছে নতুন এই তোপসে চরিত্রে অভিনয় করতে। 

Advertisement

 

তোপসে হিসাবে তোমার নাম ঘোষণার পর ট্রোল হয়েছিলে?

ঋতব্রত: আমার কাজ যদি দর্শকদের ভালো না লাগে সেটা সমালোচনা করলে আমি মাথা পেতে নিয়েছি। কিন্তু প্রথম যখন ঘোষণা হল তখন অবধারিতভাবে ট্রোল হয়েছি। আসলে ট্রোলের লজিকটা খুব সহজ। ধর ঝন্টু বলে একটি ছেলে, ঝন্টুকে তাঁর বাবা প্রচণ্ড বকলো, তোকে যখন সবজিটা আনতে বললাম আনিস নি, তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। ঝন্টু খুব বিরক্ত হয়ে গেল, সে বাবার ওপরও চিৎকারও করতে পারছে আবার না মাকেও কিছু বলতে পারছে। তাঁর ফোনে একজিবি যে ডেটা বিনা পয়সায় পাওয়া যায় সারাদিন, সেটা ২০০ এমবি পড়ে আছে। এই ২০০ এমবিতে না গেম খেলা যায়, না অ্যাডাল্ট সিনেমা ডাউনলোড করা যায়, খুব বেশি হলে বান্ধবীর সঙ্গে চ্যাট করা যায়, এই ডেটাটা কী করে রাত এগারোটা বাজার আগে শেষ করব এই চিন্তা যখন ঘুরপাক খায়, তখন ওর মনে হল যাই ঋতব্রতর পোস্টে গিয়ে উল্টোপাল্টা কিছু লিখে দিয়ে আসি, সে গিয়ে একটা কিছু লিখে দিল। এরকম হাজার হাজার ঝন্টু আছে যারা ভাবে যাই একটু রাসকিন বন্ডকে গিয়ে গাল দিয়ে আসি। কিন্তু এই মন্তব্যে রাসকিন বন্ডের কি যায় আসলো, গোটা ব্রহ্মান্ডের কী যায় আসল, ঝন্টু কিন্তু জানেও না এই রাসকিন বন্ড কে, সে কী করেছে, রাসকিন বন্ড কেন রাসকিন বন্ড, ঝন্টুর কোনও যোগ্যতাই নেই রাসকিন বন্ডকে কিছু বলার। এই অশিক্ষাটা থেকে গেল ঝন্টুর মধ্যে আর এই অশিক্ষা নিয়েই ঝন্টু থাকবে সারাজীবন। এতে রাসকিন বন্ডের ওপর বা তাঁর বই লেখার ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না। ঝন্টু এটা করে যে সন্তুষ্টি লাভ করল এটা আমার ভালো লাগল, কারণ ও বাবাকে বা মাকে কিছু বলতে পারল না, কিন্তু কোথাও গিয়ে ওর ফ্রাসটেশনটা বেরোলো। এটাই ট্রোলিংয়ের বেসিক লজিক। এবার এটাকে যদি কাউন্টার করতে যাই, একেই এত ব্যস্ততা, পড়াশোনার চাপ, নাটক-থিয়েটার-সিনেমার চাপ, তার ওপর কোথাকার কোন ঝন্টু কী বলল তা নিয়ে এত মাথাব্যথার কিছু নেই। তবে দুঃখ লাগে যখন কাজটা শুরু হওয়ার আগেই কিছু চেনা মুখ ইউটিউবে এসে ডিমোটিভেট কথা বলে, কখনও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আবার কখনও নয়, তখন খারাপ লাগে, যা না করলেও হত, সেটা ওনারা শিখবেন কী শিখবেন না সেটা নিয়েও বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই আমার। 

অভিনেতাই কী হতে চেয়েছিলে?

ঋতব্রত: ছোট থেকে কোনও সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার ইচ্ছা ছিল। এই ধরো পাবলিক স্পিকিং এই ধরনের কিছু করা ইচ্ছা ছোট থেকেই ছিল, স্কুলেও করতাম বিভিন্নভাবে। গল্প বলার প্রতিযোগিতা, ডিবেট ইত্যাদি। এরপর অনেক ছোট থেকে থিয়েটারে যেহেতু যোগদান করি তো সেটা হয়েই যায়। তবে ইচ্ছেটা সজ্ঞানে বুঝতে পেরেছি বড় হওয়ার পর। তাই ছোট থেকেই ইচ্ছেটা ছিল সেটা বোঝার অনেক আগে থেকেই থিয়েটারে যোগদান করি। বাবাকে দেখতে থাকি স্ক্রিনে, বাবার বিভিন্ন গল্প শুনতে থাকি, চেনা-জানা মানুষকে চোখের সামনে দেখতে পাই। ইচ্ছেটা যে ছিল সেটা একটু বড় হওয়ার পর স্কুলে যেতে যখন শুরু করি তখন থেকে বুঝতে পেরেছি।


শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় যিনি জনপ্রিয় অভিনেতা, তোমার বাবা, স্টারকিড হওয়ার সুবিধা কী পেয়েছো?

Advertisement

ঋতব্রত: প্রথমত স্টারকিড কথাটাই ভুল, আসলে আমার বাবা স্টার নয়, প্রথমে যেটা বললে ওটাই। আমার বাবা একজন অভিনেতা, পরিচিত এক মুখ। স্টার বলি আমরা শাহরুখ খানকে, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় স্টার। আমার বাবা একজন অভিনেতা যিনি বহুবছর ধরে সিনেমায় কাজ করেছেন, তবে এক্ষেত্রে সুবিধাটা হল কাজ পেতে নয়, শেখার ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। আমি তো খুব অল্প বয়স থেকে থিয়েটার করছি, একটা নির্দিষ্ট শিক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি অনেক ছোট বয়স থেকে, সেখানে কী সিনেমা দেখব, কী ধরনের মিউজিক শুনব, কী ধরনের সাবজেক্ট পড়ব এই যে সিদ্ধান্ত নেওয়া সে বিষয়ে গাইডেন্স পাওয়া এটা আমার মনে হয় সকলের এই সুবিধাটা থাকে না। আমার মা-বাবা আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে, অনেককেই দেখি এই সিদ্ধান্তটাই নিতে পারেন না। ঠিক কোন পদক্ষেপটা নেব এক্ষুণি, সেই জায়গা থেকে মনে করি আমি ভীষণ লাকি, পরিবার আমাকে শিক্ষা দিয়েছে কীরকম সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেখানে আমি আমার বাবা ও পরিবারের দেওয়া শিক্ষাতেই অন্যকে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করি।

টলিউডে কী নেপোটিজম বা স্বজন পোষণ রয়েছে?

ঋতব্রত: টলিউড ইন্ডাস্ট্রি একেই এত ছোট ইন্ডাস্ট্রি, এখানে তো একেই কাজ হয় না, আর রিজিওনাল ইন্ডাস্ট্রিতে কথায় কথায় বলিউডের মত নেপোটিজম হয় না, কারণ আমাদের বলিউডের মতো অত টাকাই নেই, অত রিসোর্সই নেই। বলিউডে দুমাস ধরে যে শ্যুটিংয়ের লাক্সারিয়াস টা ওরা করতে পারে, এখানে তো ১২-১৪ দিনে শ্যুটিং শেষ করতে হয়। এখানে তো দৃষ্টিভঙ্গীটা এখানেই শেষ হয়ে যায় যে বলিউডে যেখানে শ্যুটিং শেষ হয় দুমাসে আমাদের এখানে সেটা ১২ থেকে ১৪ দিন, তাই আর কোনও আলোচনাই না আর ধোপে টেকে না। কারণ এই পরিকাঠামো দুটোই ভীষণ আলাদা। বলিউডে একটা বিজ্ঞাপনের যা বাজেট, সেই অ্যাডের বাজেটে এখানে দুটো ছবি হয়ে যাবে। বলিউডের মতো পরিকাঠামো এখানে নেই আর হওয়ার কথাও নয়। সবাইকে যে বলিউড হতে হবে কোনও মানে নেই। 

প্লেব্যাকও তো করলে, কেরিয়ারে তো আর একটা অধ্যায়ও শুরু হল

ঋতব্রত: হ্যাঁ, সুব্রত সেন দাই আমায় ডেকে বলেছিল। এমনিতে আমি গিটার বাজিয়ে গানটান করি, সেটা পরিচিত মহলে, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বা নিজে একা একা এইভাবে আমার প্র্যাকটিস। আমার যেহেতু প্রথাগত শিক্ষা নেই তাই আমি গানটা গাইতে চাই না। সুব্রত দা বলল আর সিনেমার যে সঙ্গীত পরিচালক আরব দা জানত আমি গান-টান করি। আর আমার প্রশিক্ষণ নেই বলে আমি এই দিকটা নিয়ে ভাবতেও চাই না। কিন্তু বলল যখন আমায় এটা করে বেশ ভাল লাগল। এমনিতে তো আমাদের নাটকে গান গাইতে হয়। তো সেটার একটা অভ্যাস আছে। সেই সবটা মিলিয়ে বেশ মজা লেগেছে। 

ঋদ্ধির সঙ্গে এখন কেমন বন্ধুত্ব, অনেকদিন হল দুজনকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে না?

ঋতব্রত: কোথায় দেখা যাচ্ছে না? আমাদের মধ্যে সবকিছু ঠিকঠাকই আছে। ব্যক্তিগত কিছু আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করি না তাই দেখা যায় না। এমনিতেও আমি ছবি তুলতে পছন্দ করি না। তবে ঋদ্ধির সঙ্গে মৈনাক ভৌমিকের গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ডে কাজ করেছি সেই সময় কিছু ছবি তোলা হয়েছিল, এছাড়া কিছু ফটোশ্যুটও হয়েছিল আমাদের। ঋদ্ধির জন্মদিনেও তো উইশ করলাম।  

অভিনয় জীবনে তোমার সবচেয়ে বড় সমালোচক কে

ঋতব্রত: বাবা এবং মা। সব কাজই দেখে আর সব কাজ নিয়ে ভীষণভাবে খোলামেলা আলোচনা হয়। আর ঝাড়খন্ডে থাকা দুই বোন, ওদের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী থাকে আমার কাজ নিয়ে, ওরাও সমালোচনা করে খোলামেলা ভাবে। ওদের সমালোচনা খুব জেনুইন, আরোপিত নয়। পরিবারই আমার সেরা সমালোচক। এছাড়া আমার কাছের বন্ধু যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও। 

Advertisement

ঋতব্রত কী প্রেম করছে

ঋতব্রত: এটা খুব কমন ব্যাপার। মানে আমি যাদের সঙ্গেই অভিনয় করেছি তাদের সঙ্গেই নাকি আমার সম্পর্ক রয়েছে। অনুষার (অনুষা বিশ্বনাথ)সঙ্গে এত কাজ করেছি বলে এটা এখন শোনা যাচ্ছে। আর আমরা দীর্ঘদিনের বন্ধু, খুব ক্লোজ বন্ধু আমরা, একই কলেজও আমাদের। আমি দীর্ঘ অনেকদিন প্রেম টেম করি না, আমি সিঙ্গল বহুবছর ধরে। স্কুলে একটা প্রেম ছিল যেটা কলেজে উঠে কেটে যায়, তারপর থেকে সিঙ্গল। 


সকালে উঠে প্রথম কাজ কী করা হয়?
ঋতব্রত: সকালে উঠে অনেকগুলো খাবার খাওয়ার থাকে মানে ধর লেবুর জল, ডাবের জল, এই পাতা ওই পাতা ইত্যাদি। সকালে উঠে এটাই প্রথম করা হয়। 

জিম যাও?
ঋতব্রত: না জিম যেতে পছন্দ করি না। ফ্রিহ্যান্ড বা যোগা করি বাড়িতেই। 

কী খেতে পছন্দ কর?
ঋতব্রত: আমি প্রচণ্ড খাদ্যরসিক। সব খাবারই খুব আনন্দ করে খাই তবে একটানা কোনও খাবার খেতে ভালোবাসি না। আমি বাড়ির খাবারও খাব আবার বাইরের খাবারও খাব, সবটাই ব্যালেন্স করে। 


ফেলুদা হিসাবে কাকে পছন্দ সৌমিত্র, সব্যসাচী নাকি পরমব্রত?

ঋতব্রত: তিনজনই খুব আলাদা সময়ের ফেলুদা। আমার প্রথম দেখা ফেলুদা হচ্ছে বেণু জ্যেঠু (সবস্যাচী চক্রবর্তী), টিভিতে তখন বোম্বাইয়ের বোম্বেটে দেখিয়েছিল, তখনই আমি ফেলুদার সঙ্গে অনস্ক্রিন পরিচিত হই। আর ছোট থেকে বেণু জ্যেঠুর সঙ্গে কাজ করেছি, অনস্ক্রিনে দেখেছি তাই ফেলুদা হিসাবে প্রথম চেনা হল বেণু জ্যেঠু। 


থিয়েটার নাকি সিনেমার পর্দা কোনটাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ কর?

ঋতব্রত: যেটাতে ভাল কাজ হবে সেখানে কাজ করব। ভালো কাজের কোনও ভেদাভেদ নেই। তাই অডিও, থিয়েটার, সিরিজ সব মাধ্যমেই ভাল কাজেরই কদর হয়। 

পরবর্তী কী কী কাজ হাতে রয়েছে?

ঋতব্রত: অনেকগুলি ছবি আছে হাতে। এরই মধ্যে রবীন্দ্র কাব্য রহস্যের পোস্টার বেরোল, মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া সুব্রত সেনের প্রজাপতিও আছে । বাকি প্রজেক্ট নিয়ে কথাবার্তা চলছে। 

এক কথায় যদি ঋতব্রতকে বিশ্লেষণ করতে বলা হয়?

ঋতব্রত: খুবই সাধারণ একটি ছেলে, জাস্ট আনাদর গাই। 

Advertisement