বিপদ পিছু ছাড়ছে না 'কাঁচা বাদাম' গায়ক ভুবন বাদ্যকরের| নিজের গ্রাম ছেড়ে পালাতে হয়েছে গায়ককে। নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও এখন ভাড়া বাড়িতে থাকছেন। থাকতে হচ্ছে মাসে ২৭০০ টাকা ভাড়ায় দুবরাজপুরে। যা নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি। কতদিন এভাবে ভাড়াবাড়িতে থাকতে পারবেন, নিজেও জানেন না। এমনিতেই এখন তাঁর গান কপিরাইটের জেরে প্রচারিত হচ্ছে না। ফলে আয় কার্যত নেই বললেই চলে। ছেলের রোজগারে সংসার চলছে। সেই আয়ও সীমিত। ফলে ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ভুবন।
কেন নিজের বাড়ি ছাড়তে হয়েছে ভুবনকে?
বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লক্ষীনারায়নপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামে ভুবন বাদ্যকরের বাড়ি| কাঁচা বাদাম গান হিট হওয়ার পর বেশ কিছু টাকা রোজগার করেন| মাটির ঘরের জায়গায় গড়ে তোলেন পাকা বাড়ি| তবে মাস পাঁচেক আগে সেই সাধের বাড়ি ছেড়ে পালাতে হয় ভুবন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের।
ভুবনের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিচিতি পাওয়ার পর থেকেই ভুবনের বাড়িতে চাঁদার জুলুম শুরু হয়| কখনও মেলা, খেলা ইত্যাদির নামে গায়কের বাড়িতে হানা দিত 'লোকজন'| কথায় কথায় ৫০০, ১০০০ টাকা চাওয়া হত| সেই টাকা না দিলেই 'সাদা সরল' ভুবনকে ভয় দেখানো হত| কয়েক মাস আগে চাঁদাজুলুম এই পর্যায়ে পৌঁছয় যে, নিজের গ্রাম ছেড়েই পালিয়ে যান ভুবন| ঘর ভাড়া করে থাকতে শুরু করেন দুবরাজপুরে| এখনও সেখানেই থাকছে ভুবনের পরিবার।
এই নিয়ে ভুবন বলেন, 'বেশ কয়েকমাস হল গ্রাম ছেড়ে চলে এসেছি| দুবরাজপুরে ভাড়া বাড়িতে থাকছি| মাসে মাসে অনেকটাকা ভাড়া দিই| এখন তো রোজগার নেই| ভাড়া কদিন টানতে পারব জানি না| বাড়ি বানিয়েছি গ্রামে| সেই বাড়িতেই থাকতে পারছি না| বাদাম গান আমাকে পরিচয় দিয়েছে, আবার এই গানের কারণেই এখন বাড়িছাড়া।'
ভুবনের পরিবারের আর এক সদস্য জানান, চাঁদা না দেওয়ায় দু একবার এমনও হয়েছে যে, ভুবনের মোবাইল নিয়ে পালিয়েছে| সেই মোবাইল পরে তারা ফেরত দিয়েছে ঠিকই তবে আতঙ্ক যায়নি।
যদিও আরও কয়েকমাস পর বাড়ি ফেরার ইচ্ছে ভুবনের| জানালেন, এভাবে ঘরভাড়া দিয়ে তিনি বেশিদিন থাকতে পারবেন না| তাই ভাড়াবাড়ি ছাড়তেই হবে| তখন নিজের গ্রামেই যাবেন।
প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় রমরমিয়ে চলছিল 'বাদাম' গান। হঠাৎ সেই গান উধাও হয়ে যায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম থেকে।বাংলা.আজতক.ইন-কে ভুবন জানান, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। গোপাল নামে কোনও এক ব্যক্তি তাঁকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে বলেছিলেন যে তাঁদের চ্যানেলে গানটি চালাবেন। সেই মতো টাকাও নেন তিনি।তবে পরে ভুবন দেখেন, বাদাম গানটি কোথাও পোস্ট করলেই কপি রাইটে আটকে দেওয়া হচ্ছে| অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁকে জানাননি যে, কপি রাইট কিনে নিচ্ছেন। তবে কিছু কাগজপত্রে সই করিয়ে নিয়েছিলেন। ভুবনের কথায়, 'আমি অশিক্ষিত মানুষ। আমার অত লেখাপড়া জানি না। আর সেই সুযোগেই আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।' গোপাল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছেন ভুবন।
আরও পড়ুন- ভুবনের 'কাঁচা বাদাম' গানের কপিরাইট চুরি? আইনের খুঁটিনাটি