
আর কিছুদিনের মধ্যেই মুক্তি পাবে আবার প্রলয় ওয়েব সিরিজ। এই সিরিজে অনিমেষ দত্ত হিসাবে যেমন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, তেমনি আরও এক ব্যক্তিকে নিয়ে এই মুহূর্তে চর্চা জোরদার। তিনি হলেন রাজ্যের সেচ ও জল দফতরের মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। দিনভর তাঁর ব্যস্ততা বলার মতো নয়। কিন্তু তিনি যে একজন নাট্যকর্মী, সেই পরিচয় খুব কমজনই জানেন। রাজনীতির পাশাপাশি অভিনয়ও তাঁর অন্যতম নেশা এবং পেশাও বটে। আবার প্রলয় সিরিজে ক্যামেরার সামনে আত্মপ্রকাশ করলেন নৈহাটির তৃণামূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmick)। সিরিজে একজন অসৎ পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পার্থ ভৌমিক। সেখান থেকে স্পেশ্যাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ অফিসার অনিমেষ দত্তের হাতে পড়ে কীভাবে তাঁর চরিত্রের বদল হলো, সেটাও উঠে আসবে গল্পে। রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত এই সিরিজ মুক্তির আগে bangla.aajtak.in-এর সঙ্গে ছোট্ট আড্ডা দিলেন মন্ত্রীমশাই।
আবার প্রলয়-এর অফার কীভাবে এল?
পার্থ ভৌমিক: রাজ চক্রবর্তী শুধু পরিচালক নন, আমার সহকর্মীও বটে। রাজ থিয়েটারে আমার কাজ দেখেছিল, সেটা দেখেই আমায় বলে যে একটা ওয়েব সিরিজ বেরোবে, আমায় সেখানে নিতে চায়। আমি তখন বললাম যে আমি জীবনে কোনওদিন কমিক চরিত্রে অভিনয় করিনি। থিয়েটারে যা করেছি সব সিরিয়াস চরিত্র। রাজকে বলি যে তাঁর কাছে যদি কোনও কমিক চরিত্র থাকে তবে সেটা আমাকে দিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে পারে। রাজ তাতেই রাজি হয়। তবে আমি এটা পারব কিনা সেটা নিয়ে নিজেরই একটি সন্দেহ ছিল, যদিও রাজ জানিয়েছিল যে এইসব দায়িত্ব তাঁরই। আসলে রাজের সেই যোগ্যতা রয়েছে কার মধ্যে থেকে কতটা অভিনয় বের করে আনবে। আমি যতটুকু করেছি পুরোটাই রাজের জন্য। রাজ যেভাবে বলেছে, যতটুকু করতে বলেছে, ততটাই করেছি।
এই সিরিজে তো অসৎ পুলিশ অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করছেন
পার্থ ভৌমিক: একজন পুলিশ অফিসার, যে সুন্দরবনে যেখানে পাচার হয়, সেখানে সে নিজেকে গড্ডালিকা প্রবাহে নিয়ে গিয়েছিল, যে ভাবত এইসব কর্তব্য-দায়িত্ব পালন করে কী হবে, আসি যাই মাইনে পাই মনোভাব ছিল তাঁর। এরপরই অনিমেষ দত্ত (শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়) আসার পরে বুঝতে পারে যে একজন পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব কী এবং তাঁরা সেই দায়িত্বটা পালন করে।
ট্রেলারে আপনাকে বেশ কিছু আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে,?
পার্থ ভৌমিক: ওটা তো প্রথমের দিকে। আর ওই ভাষাগুলো তো আমি বলিনি, চরিত্রটা বলেছে। ওই করালী বলে যে পুলিশ অফিসার সে বলেছে। আমি তো তখন চরিত্র।
চরিত্রের খাতিরে যে গালি-গালাজ, আপত্তিকর ভাষা বলতে হয়েছে, সেটায় কী আপনার বাস্তবের মন্ত্রী-বিধায়কের ইমেজে প্রভাব পড়বে বলে মনে হয়?
পার্থ ভৌমিক: কেন পড়বে, লোকে তো যাঁরা শিক্ষিত-বুদ্ধিমান লোক, তাঁরা তো বুঝবেন যে এই কথাগুলি করালী নামের চরিত্রটা বলছে, পার্থ ভৌমিক বলছে না। যদি তারা পার্থ ভৌমিক ভাবে, তাহলে বুঝতে হবে আমি চরিত্রটা ভালো করে করতে পারিনি। আর যদি করালীকে ভাবে তাহলে বুঝব আমি চরিত্রটা ভালো করে করতে পেরেছি। এখন দেখার লোকে ওটাকে করালী ভাবে না পার্থ ভৌমিক ভাবে।
আপনার তো ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়
পার্থ ভৌমিক: শাশ্বত বলেছে যে আমার এই কাজ করার পরে এত ডাক আসবে যে আমি আদৌও রাজনৈতিক কাজ করার সময় পাবো। কিন্তু আমি তো আগেই ঘোষণা করে দিয়েছি যে ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন শেষ না হলে কিচ্ছু বলব না। আমার কাছে প্রচুর প্রস্তাব এসেছেও, কিন্তু আমি সব না করে দিয়েছি।
বড় কোনও ব্যানারের ছবির অফার যদি আসে?
পার্থ ভৌমিক: আমি ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিছুই করব না তা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছি।
আবার প্রলয়-এর শ্যুটিং ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, কীভাবে সামলালেন?
পার্থ ভৌমিক: আমি আমার রাজনৈতিক কাজ, মন্ত্রীত্বের কাজের সঙ্গে কোনও অ্যাডজাস্ট করি না। আগে এই কাজ হবে তারপর সময় থাকলে বাদবাকি কাজ। আসলে রাজ আমাকে অ্যাডজাস্ট করেছে, আমি অ্যাডজাস্ট করিনি।