পদ্মভূষণ সম্মান পাচ্ছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। পদ্মভূষণ দেওয়া হচ্ছে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ঊষা উত্থুপকেও। প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার পদ্ম পুরস্কারের প্রাপকদের নাম ঘোষণা করা হল। পদ্ম বিভূষণ পাচ্ছেন অভিনেত্রী বৈজয়ন্তী মালা, অভিনেতা চিরঞ্জীবী, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডু-সহ ৫ জন।
লোকসভা নির্বাচনের আগে মিঠুনকে পদ্মভূষণ সম্মান প্রদান রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। ২০২১ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মিঠুন। যদিও ভোটে লড়েননি তিনি। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে মিঠুনকে এই সম্মান প্রদান তাই আলাদা নজর কেড়েছে। মিঠুনকে পদ্মভূষণ প্রদান করা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, 'অভিনয়ের স্বীকৃতিতে পদ্মভূষণ নয়। তা হলে ২০১৪-এর পর যে কোনও সময় পেতেন। এখন এটা তৃণমূলের সঙ্গে বেইমানি করা আর কুৎসা করার পারিশ্রমিক। দলবদল করে, কৃতজ্ঞতার মোড়ক খুলে, ভাড়া করা নোটাঙ্কির পুরস্কার।'
এ বছর ৫ জনকে পদ্মবিভূষণ সম্মান দেওয়া হল। ১৭ জনকে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। পদ্মশ্রী পেয়েছেন ১১০ জন।
এ বছর পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে বাংলার 'গাছ দাদু' ওরফে দুখু মাঝিকে। পদ্ম সম্মান দেওয়া হচ্ছে দেশের প্রথম মহিলা মাহুত পার্বতী বড়ুয়াকেও। বাংলা থেকে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন বীরভূমের ভাদু শিল্পী রতন কাহার, কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সনাতন রুদ্রপাল, পুরুলিয়ায় ছৌ নাচের মুখোশ তৈরির কারিগর নেপালচন্দ্র সূত্রধরও।
পুরুলিয়ার সিন্দ্রি গ্রামের বাসিন্দা গাছ দাদু। জনজাতি পরিবেশবিদ হিসাবে গাছ দাদুর সুনাম রয়েছে। অনুর্বর জমিতে ৫ হাজারেরও বেশি কলা, আমের গাছ লাগিয়েছেন তিনি। রোজ সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়িয়ে গাছ লাগান তিনি। বৃক্ষরোপণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করাই তাঁর লক্ষ্য। 'রুকু মাটি দুখু মাঝি' তথ্যচিত্রেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। ১২ বছর বয়স থেকে সবুজায়নের জন্য কাজ করে চলেছেন তিনি। টাকার অভাবে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারেননি। তবে গাছ নিয়ে তাঁর ভালবাসা চিরকাল অটুট থেকেছে।
অন্য দিকে, দেশের প্রথম মহিলা মাহুত হিসাবে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন অসমের ৬৭ বছরের পার্বতী বড়ুয়া। প্রাণী কল্যাণে সামাজিক কাজের স্বীকৃতি হিসাবে তাঁকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। মানব সমাজ এবং হাতির সংঘাতের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে সাহায্য করেছেন পার্বতী। মাহুত হিসাবে সাধারণত পুরুষরা কাজ করেন। সেখানে এক জন মহিলা হিসাবে মাহুত হয়ে তাক লাগিয়েছেন তিনি। বাবার কাছ থেকে এই কাজ শিখেছিলেন পার্বতী। মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে মাহুত হিসাবে কাজ করে চলেছেন তিনি। হাতির হাত থেকে বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন পার্বতী। এছাড়া আরও ৩৪ জনকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন আদিবাসী, মৃৎশিল্পী, লোকশিল্পীরা। লোকসভা নির্বাচনের আগে আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিদের পদ্ম সম্মান আলাদা নজর কেড়েছে।