নচিকেতা মানেই জীবনমুখী গান। তিনি মানেই অতীত বা সাম্প্রতিক যে কোনও সমস্যা বা বিতর্ক নিয়ে সুরেলা প্রতিবাদ। সাধারণ মানুষের অনেক না বলা কথা, অনেক অব্যক্ত জ্বালা-যন্ত্রণা উঠে আসে নচিকেতার গানে।
সম্প্রতি একটি লাইভ শো করছিলেন নচিকেতা চক্রবর্তী। সেখানেই এক শ্রোতা তাঁকে হিন্দি গানের জন্য অনুরোধ করে বসেন। আর তাতেই হঠাৎ চটে যান তিনি। মেজাজ হারিয়ে (বা স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে)ওই শ্রোতাকে পাল্টা নচিকেতার প্রশ্ন, “বাংলার মাটিতে বসে হিন্দি, লজ্জা করে না তোমার?... ছাগল! এই কথাটা বিহারে গিয়ে বলতে পারবে... বাংলা শুনব? হাড় গুড়ো করে দেবে।” এর পরই অন্য শ্রোতাদের বলেন, “এ-ও বাঙালি। বুদ্ধি নেই... বলদ। এদের বলে না বলে পার পেয়ে যায়। আমি নচিকেতা রে...”। চটে গিয়ে ওই শ্রোতাকে প্রকাশ্যে 'বলদ' বা 'ছাগল'— কিছুই বলতে বাকি রাখেননি তিনি। ভিডিওটি ডঃ গর্গ চট্টোপাধ্যায় ফ্যান ক্লাব নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট হওয়ার পরই ভাইরাল হয়ে যায়। নচিকেতার এই ভিডিও নিয়েই জোর চর্চায় মেতে উঠেছেন নেটিজেনরা।
প্রায় তিন দশক ধরে বাংলার সঙ্গীত-প্রেমী মানুষকে অসংখ্য মন ছুঁয়ে যাওয়া গান উপহার দিয়েছেন তিনি। আট থেকে আশি— সব বয়সের মানুষই তাঁর সুরেলা মতামতে প্রভাবিত হয়েছেন। দেশজুড়ে তাঁর অসংখ্য ভক্ত। অনেকে আবার এমনও আছেন যাঁরা তাঁর একটাও লাইভ গানের অনুষ্ঠান মিস করেন না। কারণ, এই লাই অনুষ্ঠানগুলিতে গানের পাশাপাশি নচিকেতার ধারালো, চাঁচাছোলা বক্তব্য, নির্ভিক মতামত বাড়তি পাওনা। তাঁর গানের কথার মতোই তীক্ষ্ণ, সুস্পষ্ট তাঁর ‘বাণী’।
নিজের চাঁচাছোলা, সপাট মন্তব্যের জন্য অনেকবার বিতর্কেও জড়িয়েছেন তিনি। অনেকেই তাঁর মতামতকে সমর্থন জানিয়েছেন, কেউ কেউ শিল্পীর এ ভাবে মেজাজ হারানোটা মানতে পারছেন না। তবে নচিকেতা বোধহয় এ সব নিয়ে ভাবেন না। তিনি যা ভাবেন, তা তাঁর অগনিত ভক্তদের ভাবতে বাধ্য করে, বেসুরোকেও গান গাইয়ে ছাড়ে। সেই জন্যই তিনি বলতে পারেন, “আমি নচিকেতা রে...”