সংবাদের শিরোনামে থাকেন মইনুল আহসান নোবেল। বাংলাদেশের এই গায়ক ওপার বাংলার পাশাপাশি, এবার বাংলাতেও দারুণ জনপ্রিয়। গানের রিয়্যালিটি শো 'সারেগামাপা'-এ অংশগ্রহণ করে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন তিনি। তবে এরপর থেকেই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রায়ই চর্চায় থাকেন শিল্পী। গত ২০মে থেকে সংশোধনাগারে গায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে অপহরণ এবং যৌন হেনস্থার অভিযোগ। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বাংলাদেশের আদালত নির্দেশ দিল, অভিযোগকারিণীকে বিয়ে করতে হবে তাঁকে। এর পর থেকে নতুন করে শুরু হয়েছে আলোচনা।
সম্পর্ক, বিয়ে, বিচ্ছেদ, মাদক, বিতর্কিত মন্তব্য ইত্যাদি বহু কারণে নোবেল আলোচিত। নোবেলের গানের থেকে মুখ ফিরিয়েছেন বহু শ্রোতা। মাস কয়েক আগেই তিনি নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। বলেছিলেন, সব ভুল শুধরে নেবেন। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা একেবারে উল্টো। গত মে মাসে, অপহরণ ও যৌন হেনস্থার অভিযোগে নোবলেকে গ্রেফতার করে স্থানীয় ডেমরা থানার পুলিশ।
নোবেলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছিলেন তাঁর পরিচিত এক মহিলা। যদিও গ্রেফতার হওয়ার পরই অভিযোগকারিণীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেন শিল্পী। শোনা যায়, তিনি নাকি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সেসময় বিয়ে সংক্রান্ত কাবিননামা তিনি আদালতের সামনে মজুত করতে পারেননি। গায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, গত নভেম্বর মাসে নিজের স্টুডিও দেখানোর নাম করে ওই মহিলাকে ডেকে নিয়ে যান নোবেল। এর পর তাঁর উপর অত্যাচার করা হয়। শুধু তাই নয়, তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, তাঁর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ডেমরা থানার পুলিশ আদালতকে লিখিত ভাবে জানিয়েছে, ২০১৮ সাল ফেসবুকের মাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে অভিযোগকারিণী পরিচয় হয়। সে সময় তিনি ঢাকার একটি কলেজের তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছিলেন। এরপর গত বছর ১২ নভেম্বর ডেমরা এলাকায় নোবেল নিজের স্টুডিও দেখানোর জন্য ডেকে নিয়ে যান তাঁকে। রাত ৮টার পর তিনি বেরিয়ে যেতে চাইলে, তাঁর মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন শিল্পী এবং পরে তা ভেঙেও ফেলেন।
নোবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এরপর ধর্ষণ করে সেই ভিডিও রেকর্ডিং করে, সেটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর পর সাত মাস ওই মহিলাকে জোর করে নিজের কাছে আটকে রাখেন বলেও অভিযোগ। নির্যাতনের সেই ভিডিওটি তত দিনে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে নির্যাতিতার বাবা-মা গিয়ে মেয়েকে নোবেলের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন। গত ১৯ মে নোবেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের হয়।
বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, নোবেলের আইনজীবী জসীমউদ্দিন জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন অভিযোগকারিণীও। অভিযুক্ত নোবেলের পক্ষ থেকে আদালতে লিখিত ভাবে বিয়ে করার অনুমতি চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের সম্মতিতেই বিয়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) নাজমিন আখতার অভিযোগকারিণীকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন নোবেলকে।
প্রসঙ্গত, এর আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলাদেশে বয়কটের ডাক দিয়ে বিতর্কিত পোস্ট করেছিলেন নোবেল। এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করায় ত্রিপুরা পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। শিল্পী নিজে না মানলেও, শোনা যায় তিনবার বিয়ে করেছেন তিনি। বহু অশান্তি- ঝামেলার পর তৃতীয় স্ত্রী মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাঁর। সালসাবিল নোবেলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেন।