scorecardresearch
 

Uttam Kumar: জীবনের শেষ দৃশ্যেও উত্তম বুঝতে দেননি হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে

আজ ২৪ জুলাই মহানায়ক উত্তম কুমারের ৪২তম মৃত্যু বার্ষিকী। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে যান তিনি। ৪২ বছর পরেও উত্তম-ক্যারিশমা সমান ভাবে বাঙালির মননে গেঁথে রয়েছে। তাঁর উপস্থিতি, তাঁর অভিনয়, তাঁর আকর্ষণ সব কিছু যেন আজও বাঙালির কাছে অমলিন। এমন আকস্মিক ভাবে তিনি যে চলে যাবেন তা কেউ কল্পনাও করেননি।

Advertisement
উত্তম কুমার, নীচে শেষ দৃশ্যে উত্তম উত্তম কুমার, নীচে শেষ দৃশ্যে উত্তম

আজ ২৪ জুলাই মহানায়ক উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) ৪২তম মৃত্যু বার্ষিকী। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চলে যান তিনি। ৪২ বছর পরেও উত্তম-ক্যারিশমা সমান ভাবে বাঙালির মননে গেঁথে রয়েছে। তাঁর উপস্থিতি, তাঁর অভিনয়, তাঁর আকর্ষণ সব কিছু যেন আজও বাঙালির কাছে অমলিন। এমন আকস্মিক ভাবে তিনি যে চলে যাবেন তা কেউ কল্পনাও করেননি। আড়াইশো-র বেশি সিনেমায় অভিনয় করা উত্তম নায়ক হিসাবেই থেকে গিয়েছেন।

হার্ট অ্যাটাক হলে কেউ ঝিমিয়ে পড়েন, কেউ যন্ত্রণায় কাতড়াতে থাকেন, কিন্তু উত্তম কুমার ক্যামেরার সামনে তখন জীবনের শেষ শট দিচ্ছেন। ২৩ জুলাই ১৯৮০, সলিল দত্ত পরিচালিত ওগো বধূ সুন্দরী ছবির শেষ দিনেক শুটিং চলছিল তখন। সে দিন একটু বেশিই অন্যমনস্ক ছিলেন উত্তম। প্রথম কারণ ছিলেন অবশ্যই সুপ্রিয়া দেবী। দ্বিতীয় কারণ তাঁর সাধের টেপ রেকর্ডার চুরি যাওয়া। এই দুইয়ের অনুপস্থিতিতে বিহ্বল ছিলেন। যখন শুটিংয়ের জন্য ময়রা স্ট্রিটের বাড়ি থেকে বার হতেন, সুপ্রিয়া দেবী দরজায় দাঁড়িয়ে থাকতেন, যত ক্ষণ উত্তম কুমারের গাড়ি একেবারে চোখের আড়ালে চলে না যেত। সে সময় সুপ্রিয়া দেবী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ফলে দিনটা স্বাভাবিক নিয়মে শুরু হয়নি মহানায়কের।

প্রতি দিন অবসর সময়ে নিজের বক্তব্য ভালোলাগা, খারাপলাগা সব ধরে রাখতেন টেপ রেকর্ডারে। শুটিংয়ে যাওয়ার সময় লক্ষ্য করেন গাড়িতে তাঁর টেপ রেকর্ডারটি ছিল না। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তার হদিশ মেলেনি। এ ঘটনা তাঁকে ভীষণ ভাবে আঘাত করেছিল। সারা দিন সেভাবে কিছু মুখেও তোলননি সে দিন। চূড়ান্ত পেশাদারি ঢঙে ক্যামেরার সামনে শুটিং করলেও ভেতর থেকে যেন অল্প অল্প করে ভেঙে যাচ্ছিলেন। কিন্তু এমনই তাঁর সাবলীল অভিনয় দেখে কে বুঝবে, তিনি একগুচ্ছ দুশ্চিন্তা নিয়ে শুটিং করতে এসেছেন।

Advertisement

ছবির শেষ দৃশ্য শুটিং হয়। ছবিতে উত্তম কুমারের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করছিলেন সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়। রাগ করে তিনি বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছেন, এমন ছিল দৃশ্য। ছবিতে দাড়ি কামাতে কামাতে বার বার স্ত্রীকে আটকানোর চেষ্টা করছেন। শেষমেশ না পেরে তিনি সুর চড়ান। এ ভাবেই শেষ হবে দৃশ্য। শেষ সংলাপ বলার সময়ই বুকের মাঝে হাত চলে যায় উত্তমের। সে সময় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু তাঁর সংলাপ বলার ভঙ্গি, অভিনয়, স্বরক্ষেপণ শুনে কারও বোঝার সাধ্য ছিল না। মাত্র এক দিনের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যায়। ২৪ জুলাই মধ্য কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে ময়রা স্ট্রিটের বাড়িতে আর ফেরা হয়নি তাঁর।

 

Advertisement