গত ৯ অগাস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটে গিয়েছে নির্মম এক ঘটনা। কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে প্রতিবাদে সরব হন আপামর বাংলা। আরজি করের আঁচ পৌঁছায় বাংলা পেরিয়ে দেশ ও আন্তর্জাতিক স্তরেও। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সরব হন টলিউড তারকারাও। যাঁদের মধ্যে ছিলেন অভিনেত্রী রূপা ভট্টাচার্য। আর আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ করতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে দেওয়া হল ধর্ষণের হুমকি। এই নিয়ে অভিনেত্রী খোলাখুলি কথা বললেন bangla.aajtak.in-এর সঙ্গে।
অভিনেত্রী বলেন, 'কম-বেশি আমাদের ট্রোলিং মানুষ করেই থাকেন। এইগুলোকে খুব একটা আমল দিই না। কিন্তু এই হুমকি, থ্রেট, ধর্ষণ করে দেওয়া হুমকি এগুলো শুরু হয়েছে গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে। ২২ তারিখ থেকে গতকাল (২৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত এই হুমকি আমি পেয়ে গেছি। ২২ তারিখ যখন হয় তখন আমি ২৩ তারিখে কলকাতা পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে অভিযোগ জানাই। কিন্তু এরপর হুমকি, অশ্লীল ভাষার প্রয়োগ আমার বিরুদ্ধে বাড়তেই থাকে। এরা কেউই আমার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে করছে না। কারণ আমার ফ্রেন্ডলিস্টে সে না থাকলে কমেন্ট করতে পারবে না। তারা আমার বন্ধুদের ওপেন প্রোফাইলে গিয়ে কমেন্টে আমায় ট্যাগ করে এইসব হুমকি দিচ্ছে।'
অভিনেত্রী জানান যে এরমধ্যে তিনি সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানান কিন্তু সেখান থেকে কোনও সাড়া না পেয়ে রূপা তাঁর সোশ্য়াল মিডিয়া পেজ থেকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে খোলা চিঠি লেখেন। রূপা বলেন, 'এরমধ্যে যথারীতি হুমকি, বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করে দেব, ধাক্কা মেরে সিঁড়ি দিয়ে ফেলে দেব এই ধরনের নানান ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি-কথাবার্তা চলছে। মানে লিখেই যাচ্ছে ক্রমাগত। পুলিশ-মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে লিখলেও ওরা বলছে যে পুলিশ আমাদের কিছুই করবে না, তুই-তোকারি করে কথাবার্তা বলছে আমার সঙ্গে।' এরই মাঝে রূপার কাছে সাইবার ক্রাইমের পক্ষ থেকে ইমেল আসে যেখানে বলা হয় যে তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার ম্যুর অ্যাভিনিউয়ের অফিসে এসে সশরীরে অভিযোগ জানাতে হবে। সেখানে গেলে তাঁকে পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়। ইতিমধ্যেই রূপা পাটুলি থানায় এই হুমকি নিয়ে এফআইআর দায়ের করেছেন।
পুলিশ-প্রশাসনের কাছ থেকে রূপা একটাই আবেদন করেছেন যে দোষীরা যেন কোনওভাবেই ছাড়া না পায়। কারণ তাঁকে ক্রমাগত এইসব হুমকি দেওয়া হয়েছে। রূপার কথানুযায়ী, এইসব দুর্বৃত্ত কোনওভাবেই অপরাধ করে যেন পাড় না পেয়ে যায়, এদের সাহসটাকে কোথাও বন্ধ করার জন্য শাস্তি দেওয়াটা খুবই জরুরি। অভিনেত্রীর একটাই আবেদন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে যদি এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে প্রশাসন যেন গুরুত্ব দিয়ে সেটাকে দেখেন। পাটুলি থানার পুলিশের পক্ষ থেকে অভিনেত্রীকে এই বিষয়ে যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।