বেঁচে থাকলে পরবর্তী সিনেমা হতো দেবী চৌধুরানী!
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস 'দেবী চৌধুরানী'কে চলচ্চিত্রে রূপায়িত করার প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। চিত্রনাট্য লেখার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। জীবিত থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেখান থেকে জলপাইগুড়িতে দেবী চৌধুরানীর মন্দির ও আশপাশের কিংবদন্তী এলাকাগুলি রেইকি করতে যাওয়ার কথা ছিল। তাঁর আচমকা জীবনাবসানে যা তাঁর সঙ্গেই কালের অতলে তলিয়ে যায়।
লিড ক্য়ারেক্টার-এ কাকে ভেবেছিলেন তিনি!
এমনকী দেবী চৌধুরানী ছবির লিড ক্যারেক্টার তিনি বেছে ফেলেছিলেন। চরিত্রের জন্য প্রাথমিকভাবে তিনি সোনম কাপুরকে নিতে চেয়েছিলেন। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি সে কথা জানিয়েছিলেনও। অনিল কাপুরের কন্যার ঋজু চেহারা তাঁর ছবিতে নিজের আঁকা দেবী চৌধুরানীর সঙ্গে সবচেয়ে ভাল মানানসই হবে বলে তিনি মনে করেছিলেন। তবে সোনমের সঙ্গে এ বিষয়ে তার কথা হয়েছিল কি না, তা অবশ্য আর জানা যায়নি।
দেবী চৌধুরানীর নামে সঙ্গে জড়িত এলাকাগুলি দেখে রাখতে বলেছিলেন
শিলিগুড়িতে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু দীপজ্যোতি চক্রবর্তীকে তিনি প্রাথমিকভাবে জায়গাগুলি দেখে রাখতে বলেছিলেন। চিত্রনাট্য তৈরির কাজ শেষ হলেই শিলিগুড়ি গিয়ে এলাকা দেখে আসার কথা ছিল ঋতুপর্ণ-র। একইভাবে দক্ষিণবঙ্গের যে সমস্ত এলাকা উপন্যাসে উল্লেখিত আছে, সেগুলো জায়গাও তিনি দেখতে যাবেন বলে কথা ছিল।
দীপজ্যোতিবাবুর দাবি
দীপজ্যোতিবাবু জানান, বেশ কয়েকটি সিনেমা নিয়ে তাঁর সঙ্গে মৃত্যুর কয়েক দিন আগেই কথা হয়েছিল। তার মধ্যে, দেবী চৌধুরানী তার পরবর্তী প্রজেক্ট ছিল। এই সিনেমাটি নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী ছিলেন। এই উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে এটি সর্বকালের সেরা সিনেমা হতে পারত। তবে ব্রজেশ চরিত্রের জন্য তিনি কোনও বাঙালি অভিনেতাকেই কাস্ট করতে চেয়েছিলেন বলে ইচ্ছেপ্রকাশ করেছিলেন।
মহাভারতেও ছিল টান!
পাশাপাশি মৃত্যুর আগে শেষ বহুদিন তিনি মহাভারত সঙ্গে নিয়ে ঘুমোতে যেতেন। সুযোগ পেলেই পড়তেন। মহাভারত বা তার কোনও অংশ নিয়ে বড় কোনও পরিকল্পনায় ছিলেন তিনি। যদিও এ বিষয়ে কখনও তিনি কোনও কথা জানাননি।
উত্তরবঙ্গে একাধিক ছবির শুটিং করেছেন তিনি
উত্তরবঙ্গে ঋতুপর্ণ ঘোষ বহু সিনেমার শুটিং করেছেন। খেলা, তিতলির বহু ছবির শুটিং হয়েছে পাহাড়-ডুয়ার্স-তরাইয়ে। আবার আরও একটা শুটিং শুরু করার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু শেষমেষ তা আর হল না।