Rudranil Ghosh on The Kerala Story : ধর্মান্তকরণ তো হয়, 'The Kerala Story' ব্যান করে এই সত্যিটা চাপা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী : রুদ্রনীল

'The Kerala Story'- ব্যান ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত শিল্পী-সাহিত্যিকরা। ছবির এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অকপট অভিনেতা-বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ।

Advertisement
ধর্মান্তকরণ তো হয়, 'The Kerala Story' ব্যান করে এই সত্যিটা চাপা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী : রুদ্রনীল   রুদ্রনীল ঘোষ
হাইলাইটস
  • 'The Kerala Story'- ব্যান ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার
  • সরকারের এই সিদ্ধান্তে দ্বিধাবিভক্ত শিল্পী-সাহিত্যিকরা

'The Kerala Story'- ব্যান ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তে দ্বিধাবিভক্ত শিল্পী-সাহিত্যিকরা। ছবির এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অকপট অভিনেতা-বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ। 

প্রশ্ন : 'The Kerala Story'- এই রাজ্য়ে ব্যান হয়েছে। কী বলবেন ? 

রুদ্রনীল : শুধু ছবি কেন। এই রাজ্য সরকার সবই ব্যান করছে। এরাজ্যে পরীক্ষা ব্যান হয়েছে। যাঁরা চাকরি করছেন তাঁদের ডিএ ব্যান হয়েছে। আবাস যোজনা-সহ যত প্রকল্প আছে, সব অধিকার থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। তাঁদেরও তো সামাজিকভাবে ব্যানই করা হচ্ছে। এটা আসলে ব্যান-এর সরকার। যখনই কোনও সত্যি কথা বলা হবে, তখনই এই সরকার ব্যান-এর পথে হাঁটবেন। এটাই এদের নীতি। 

প্রশ্ন : এ তো আপনি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন, সিনেমা-র ব্যান...

রুদ্রনীল : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি বলেছেন, এই রাজ্যে 'The Kerala Story' চললে নাকি শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ হবে। কোনও রাজ্যে তো শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার প্রশ্ন উঠছে না। তাহলে এ রাজ্যে কেন ? আসলে মজার বিষয় হল, এই সরকার তো নিজেরাই সাধারণ মানুষের জীবন অশান্তিতে ভরিয়ে রেখেছে। নিজেদের নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে অশান্তি বাঁধায়। হিন্দু-মুসলিম এখানে বিষয় নয়। এই সরকার সাধারণ মানুষকে ভয় পায়। তারা চায় না, মানুষ সত্যিটা জানুক। পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যাগুরুদের ভোট তৃণমূলের থেকে সরে গেছে। কারণ, এই রাজ্যের সংখ্যাগুরুরা শিক্ষিত। তারা দুধ কা দুধ আর পানি কা পানি বোঝে। এখানকার সংখ্য়ালঘুরা আবেগপ্রবণ। এতদিন পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস তাঁদের সেই আবেগকে হাতিয়ার করে ভোট পাচ্ছিল। কিন্তু, এখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি। তাঁরা এখন শিক্ষক, ডাক্তার, আইনজীবী হতে চাইছে। এই চাওয়াটা তৃণমূলের পছন্দ নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এখন ভয়। আপনারা সাগরদিঘি নির্বাচন দেখুন। সেখানে সংখ্যালঘুরা কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তৃণমূলের থেকে।   

প্রশ্ন : তাহলে এই সিনেমা নিয়ে বিতর্ক কেন ? 

রুদ্রনীল : বিতর্ক তো এই সরকার বানানোর চেষ্টা করছে। এই সিনেমা তো কোনও বিশেষ ধর্মকে লক্ষ্য করে নয়। ছবিতে দেখানো হয়েছে ধর্মান্তকরণের বিষয়টা। ধর্মান্তকরণ তো হয়, 'The Kerala Story' ব্যান করে এই সত্যিটা চাপা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। একটি জঙ্গি সংগঠন ধর্মান্তকরণ করে থাকে। এটা তো ঐতিহাসিক সত্যি। সবার জানা। তাহলে সেই সত্যিটা সামনে আনলে ক্ষতি কী। মানুষ চাইলে দেখবে ইচ্ছে হবে দেখবে না। কিন্তু সেটা একটা সরকার, দল কীভাবে ঠিক করে দিতে পারে ? কিন্তু, এভাবে তো মানুষকে আটকানো যাবে না। এখন তো সিনেমা দেখার হাজারটা উপায় রয়েছে। মানুষ দেখবে। মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে আটকাবেন ? 

Advertisement

    
প্রশ্ন : 'The Kerala Story'-র উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তো সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে মামলা হয়েছে ? 

রুদ্রনীল : সেটাই তো স্বাভাবিক। কত ছোটোখাট বিষয়ে সাধারণ মানুষকে কোর্টে যেতে হচ্ছে তাদের অধিকারের জন্য। ছবি নির্মাতারাও যাবেন, সেটাই কাম্য।প্রায় প্রতিদিনই রাজ্য সরকার কোর্টে থাপ্পড় খাচ্ছে, এক্ষেত্রেও তাই হবে। সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিয়েছে, দেশের সব রাজ্যে রমরমিয়ে ছবিটি চলছে। এই রাজ্যে কেন চলবে না, সেটাই তো অবাক করার মতো ঘটনা। 

প্রশ্ন : ছবিটি ব্যান করার ফলে এরপর কি এই রাজ্যের পরিচালক-প্রযোজকরা এমন ছবি করার আগে দশবার ভাববেন

রুদ্রনীল : এটা আজ থেকে তো নয়। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাই তো করছে। প্রযোজন-পরিচালকরা ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকেন। আমার মতো অভিনেতার কাজ দেড় বছর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ, আমি তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওপেনলি কথা বলি। তাই আমি কাজই পাইনি। সব পরিচালক-প্রযোজক-টেলিভিশন চ্যানেল আমাকে নিয়ে কাজ করতে ভয় পেত। কিন্তু আমি তো ফিরে এসেছি। আমাকে ছাড়া সিনেমা ব্যবসার একটা দিক অসম্পূর্ণ। এটা তো সবাই মানে। কিন্তু আমাকে এতদিন বসিয়ে দেওয়া হল। 

প্রশ্ন : কিন্তু এখনও তো অনেক পরিচালক-প্রযোজককে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় দেখা যায় ? 

রুদ্রনীল : হ্যাঁ। তাঁরা যান। কারণ, বাধ্য হয়ে যেতে হয়। তাঁরা ভয় পান। তাঁদের জীবন-জীবিকার তাগিদে যান। এই তো শান্তিনিকেতনে কয়েকজন বুদ্ধিজীবী গিয়ে বসে থাকলেন। অথচ এই মানুষগুলো চুপ থাকেন যখন আমাদের কোনও বিজেপি কর্মীকে খুন করা হয়। তখন তাঁরা প্রতিবাদ করেন না। বিজেপি কর্মীরা কি মানুষ নন ? এই শুভবুদ্ধি সেই সব তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের কবে আসবে ? 

প্রশ্ন : সিনেমার প্রসঙ্গে ফিরে আসি। এই ব্যানের ফলে রাজ্য রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে ? 

রুদ্রনীল : আমার মনে হয় না প্রভাব পড়বে। কারণ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও এখন বুঝে গেছে যে, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। আর আইনের ঊর্ধ্বে তো কেউ নয়।  এক বা দুজন মানুষ খারাপ হলে তো সেই সম্প্রদায়ের সবাইকে দোষ দেওয়া যায় না।  
 

 

POST A COMMENT
Advertisement