Sahitya Aajtak Kolkata 2024: কবিতার ভাষা আলাদা? শ্রীজাত চান, 'কবিতায় উঠে আসুক সারাদিনের ভাষা'

Sahitya Aajtak Kolkata 2024: শহর তিলোত্তমায় শুরু হয়ে গিয়েছে সাহিত্য আজতক। সাহিত্য থেকে রাজনীতি সব বিষয় নিয়ে ধুন্ধুমার আলোচনা হবে দুদিন ধরে। আর সাহিত্য আজতক-এর প্রথমদিনেই রবীন্দ্রনাথ ও তারপর এই বিষয় নিয়ে আড্ডা জমিয়ে দিলেন কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement
কবিতার ভাষা আলাদা? শ্রীজাত চান, 'কবিতায় উঠে আসুক সারাদিনের ভাষা'মঞ্চে উপস্থিত শ্রীজাত
হাইলাইটস
  • শহর তিলোত্তমায় শুরু হয়ে গিয়েছে সাহিত্য আজতক।

শহর তিলোত্তমায় শুরু হয়ে গিয়েছে সাহিত্য আজতক। সাহিত্য থেকে রাজনীতি সব বিষয় নিয়ে ধুন্ধুমার আলোচনা হবে দুদিন ধরে। আর সাহিত্য আজতক-এর প্রথমদিনেই রবীন্দ্রনাথ ও তারপর এই বিষয় নিয়ে আড্ডা জমিয়ে দিলেন কবি শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। কবি জানালেন, কবিতার ভাষা হওয়া উচিত সারাদিনে যে কথা বলা হয় সেটাই। আর তা করতে গিয়ে বহু সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল শ্রীজাতকে। 

শৌভিক গুহ ঠাকুরতার সঙ্গে মঞ্চে এই কবিতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে শ্রীজাতকে জিজ্ঞেস করা হয় যে তাঁর কবিতায় ভাষার আমূল পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে এবং কবি যে ভাষায় কবিতা লিখেছেন তা খুবই সহজ ভাষায়, যা নতুন প্রজন্মকে কানেক্ট করতে পারে সরাসরি। এই প্রসঙ্গে শ্রীজাত বলেন, এর আগেও আমার বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আমি পথ খুঁজছিলাম, পথ পেয়ে গেলে লেখা আর হত না, লেখান থামিয়ে দিতে হত। ২০০২-০৩ সালে আমারও মনে হচ্ছিল যে আমি তো বড় বড় কবিদের পড়ছি, কিন্তু আমি যেটা লিখছি সেটা কি আমার কবিতা হচ্ছে। যদি আমার লেখা না হয়, সেটাকে মহৎ হতে হবে না। শিল্পে মহত্বের শর্ত নিয়ে শিল্প করতে এলে আমার মনে হয় সেটা একটা ফাঁদ। আমি তো রবীন্দ্রনাথ নয়, আমি যখন লিখব এবং সেটা পরবর্তী সময়ে পড়ব যেন মনে হয় নতুন কিছু লিখছি। আমি ভাল লিখি, খারাপ লিখি, মানুষ সেটা বর্জন করলেও সেটা যেন আমার লেখা হয়। সেটা যেন আর কারোর লেখার ছায়া না হয়। কারোর প্রভাব যেন না হয়, সেটা সচেতনভাবে আমার মাথায় ছিল। 

শ্রীজাত এও বলেন, আমার যেন কোথাও গিয়ে মনে হয়েছিল যে বাংলা কবিতায় বেশি করে সারাদিনকার ভাষা উঠে আসা দরকার। যে ভাষায় আমি কথা বলি, যে ভাষায় আমি বাজারে যাই মাছ কিনতে, যে ভাষায় আমি অফিসে আমার সহকর্মীর সঙ্গে তর্ক করি, যে ভাষায় আমি ফোনে বন্ধুর সঙ্গে ঝামেলা করি, সেই ভাষাটা যদি আমি কবিতায় না লিখতে পারি, তাহলে আমার নিজেকে ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছিল। আমার খালি মনে হচ্ছিল যে আি কেন কবিতা লেখার সময় অন্য মানুষ হয়ে যাব। আমার জীবন যা আমার যাপন যা আমার মৌখিক ভাষা যা, আমার কবিতা কেন তারচেয়ে বাইরে কথা বলবে। এইটা লিখতে লিখতেই যখন একটা পাণ্ডুলিপি তৈরি হল, আমি খুব ভয়ে ভয়েই সেটা জমা দিলাম। যখন সেই বইটা প্রকাশ পেল তখন যাঁরা বয়ঃজৈষ্ঠ ছিলেন, তাঁরা অনেকেই সমালোচনা করেন এই ভাষা নিয়ে। এই লেখাকে খুব বেশি প্রশ্রয় তাঁরা দেননি, আমি নাকি বাংলা কবিতার সর্বনাশ করছি। এরপরও আমার ভাষা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে, তবে আমার এটা মনে হয়েছে, যে ভাষায় আমি বাঁচতে পারি সেই ভাষায় না লিখতে পারি তাহলে লেখার দরকার নেই।

Advertisement

এই আলোচনায় শ্রীজাত আলোকপাত করেন জীবনানন্দ ও রবীন্দ্রনাথের পর তাঁদের প্রভাব পরবর্তী কবিদের ওপর। শ্রীজাত বলেন যে তাঁর জীবনানন্দের প্রভাব ধারণ করতে গেলে যোগ্যতা লাগে, সেটা শ্রীজাতর নেই। কবি এও জানান যে শ্রীজাত হয়ে জীবনানন্দের যোগ্যতা ধারণ করা যায় না। জীবনানন্দের পরবর্তী কবিদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল তাঁর ধাঁচ থেকে বের হওয়ার জন্য। আধুনিক ও অত্যাধুনির কবিতার জন্মই দিয়েছেন জীবনানন্দ। রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে শ্রীজাত জানান যে তিনি গীতবিতান পড়ার পর অনেকদিন কিছু লিখতে পারেননি। কবি এও জানান যে তিনি যতবার লিখতে গিয়েছেন ততবার তাঁকে তাড়া করেছে রবি ঠাকুরের গান।  

  

POST A COMMENT
Advertisement