scorecardresearch
 

Sahitya Aajtak Kolkata 2023: 'বাঙালির দুর্গার চেয়ে বেশি কালীবাড়ি গড়েছে,' মত শংকরের, নৃসিংহপ্রসাদের বক্তব্য, 'বাঙালি বরাবরই শক্তির উপাসক'

নৃসিংহপ্রসাদ অবশ্য শংকরের এই দাবি একেবারে খণ্ডন করেননি। বরং তাঁর মতে, বাঙালি বরাবরই শক্তির উপাসক। সে দুর্গাই হোক বা কালী। দুর্গারই তো আরেক রূপ কালী।  

Advertisement
শংকর ও নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি শংকর ও নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি

সাহিত্য আজতক কলকাতা ২০২৩ (Sahitya AajTak Kolkata 2023)-এর মঞ্চে 'বাঙালি দুর্গায় আছে, রামে নেই' শীর্ষক আলোচনায় পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি ও সাহিত্যিক শংকরের ভিন্ন মতই উঠে এল। শংকরের মতে, বাঙালি দুর্গার বেশি কালীবাড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত। নৃসিংহপ্রসাদ অবশ্য শংকরের এই দাবি একেবারে খণ্ডন করেননি। বরং তাঁর মতে, বাঙালি বরাবরই শক্তির উপাসক। সে দুর্গাই হোক বা কালী। দুর্গারই তো আরেক রূপ কালী।  

সাহিত্যিক শংকরের কথায়, 'স্বামী বিবেকানন্দ বাবা ওকালতি করতে মাঝে মাঝে উত্তর ভারত যেতেন। সেখানে কিন্তু উনি দুর্গাবাড়ির জন্য টাকা তুললেন। অবাক লেগেছিল, এতো দুর্গা দুর্গা কেন? বিবেকানন্দের বাবা বলেছিলেন, মা দুর্গাকে কেউ দেখবার নেই। মা দুর্গাকে কেউ দেখবার নেই। সবাই দুর্গা দুর্গা করলেও, মন্দির তৈরির সময় সবাই কালীবাড়ি করে। বাঙালির টান কিন্তু দুর্গার চেয়ে কালীতেই বেশি। সবই প্রায় কালী মন্দির।'

নৃংসিংহপ্রসাদের কথায়, 'বাঙালির কাছে শক্তিপুজোটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গিয়েছে বহুকাল আগেই। খ্রিস্টিয় ১২০০ বা ১৩০০ শতাব্দী থেকে বাংলায় দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গিয়েছে। তখন কিন্তু বাংলায় রামের কোনও উপাসনা ছিল না। রামনবমী একটা ছিল, সেটা কোনও মতে হত। তাও চৈতন্য মহাপ্রভু আসার পরে। ত্রয়োদশ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে অষ্টাদশ শতাব্দি পর্যন্ত বাঙালির ঘরে ঘরে দুর্গাপুজো প্রচুর রয়েছে। তার বহু প্রমাণ রয়েছে।'

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির কথায়, 'বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো এমন একটা উত্‍সব, বাঙালির দুর্গাপুজো কিন্তু আজ থেকে চালু হয়নি। এর শুরু বহুকাল আগে। ষোড়শ শতকে বাঙালির যে বিধি বিধান দেওয়া হয়, রঘুনন্দনের অষ্টাবিংশতি তত্ত্বে বলা আছে,  দুর্গার কথা লেখার সময় লেখা হয়েছে দুর্গোত্‍সববিধি। বাকি সব তিথি। কিন্তু দুর্গার সময় তা উত্‍সব হিসেবে বলা হচ্ছে। অর্থাত্‍ সব তিথি ছেড়ে দুর্গাপুজোকে আলাদা করে উত্‍সব আখ্যা দেওয়া হল।  আমরা যা যাকে অকাল বোধন বলছি, তা আসলে অকাল বোধন নয়। এটা ঠিক নয়। কৃত্তিবাসের জন্যই আমাদের এখানে অকাল বোধন এতো চলিত হয়েছে। অকাল বোধনের প্রশ্নটা অনেকটা, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহালয়ার মতো। মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপুজোর কোনও সম্পর্ক না থাকলেও, তা এমনই ক্লিক করে গেল, পরবর্তীকালে তা মহালয়া মানেই যে দুর্গাপুজো এসে গেছে। বীরেন্দ্রকৃষ্ণের জন্য যেমন মহালয়া বিখ্যাত হয়ে গেল, তেমনই কৃত্তিবাসের জন্যই অকাল বোধন চলিত হয়ে গেল। শরত্‍কালে পুজো হচ্ছে বলেই অকাল বোধন, তা কিন্তু নয়। আসলে রাবণকে বধের জন্য রাতে দুর্গার পুজো করেছিলেন ব্রহ্মা। রাতে সাধারণত পুজো হয় না। সেটাই আসলে অকাল বোধন।'

Advertisement

Advertisement