নববর্ষের দিনই বলিউড সুপারস্টার সলমন খানের শিরে সংক্রান্তি। নিরাপত্তার কড়া ঘেরাটোপ থাকা সত্ত্বেও রবিবার ভোর ৪টে ৫০ মিনিটে গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে পর পর বেশ কয়েক বার গুলির শব্দ শোনা যায়। বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলেই অভিযোগ। এরপর বাইক আরোহী দ্রুত সেখান থেকে চম্পট দেয়। যদিও এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। তবে এই ঘটনার জেরে সলমন খানের নিরাপত্তা নিয়ে ফের বড়সড় প্রশ্ন উঠতে দেখা গেল।
সলমন খানের অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে কারা গুলি চালালো সেটা এখন তদন্ত সাপেক্ষ। কারণ দুই বাইক আরোহী শ্যুটার হেলমেট পরে এসেছিল তাই তাদের মুখ দেখা যায়নি। পুলিশের তদন্ত চলছে। এই ঘটনার পরই সলমন খানের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্ট রেইকিও করেছিল বিষ্ণোই গ্যাং। আসুন জেনে নিই যে সলমন খানের বিপদ কার থেকে আর কেন সলমনকে মুম্বই পুলিশ সুরক্ষা দিয়েছে?
বিষ্ণোই গ্যাং-এর নিশানায় সলমন
বেশ কিছু বছর ধরেই সলমন খানের ওপর নজর রাখছে বিষ্ণোই গ্যাং। লরেন্স বিষ্ণোই ও ভারত-কানাডার ওয়ান্টেড গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার বহুবার সলমন খানকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছে। বিষ্ণোই ও গোল্ডি অনেকবারই সলমনকে মারার জন্য শযুটার পাঠিয়েছিল। লরেন্স ঘনিষ্ঠ গ্যাংস্টার সম্পত নেহরা ২০১৮ সালে সলমনের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্ট রেইকি করতে এসেছিল। কিন্তু সল্লু মিঞার ওপর হামলা করার আগেই হরিয়ানা পুলিশ গ্রেফতার করে নেয় সম্পত নেহরাকে। তাকে জেরা করার পরই সলমনের ওপর হামলা করার পুরো পরিকল্পনা জানা যায়। বিষ্ণোই গ্যাং-এর নিশানায় সলমন খান রয়েছে এই বিষয়ে মুম্বই, দিল্লি সহ সব পুলিশ বিভাগ ও এজেন্সির জানা আছে। আর সেই কারণেই মুম্বই পুলিশ সলমন খানকে নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছে। অভিনেতা যেখানেই যায় না কেন তাঁর আঁটোসাঁটো সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকে।
পানভেল ফার্ম হাউসে ঢোকার চেষ্টা
এই বছরের জানুয়রিতে পানভেলে সলমনের ফার্ম হাউসে ঢোকার চেষ্টা করে দুজন। এই দুই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তার ছিঁড়ে ফার্ম হাউসের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। তখনই সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা ধরে ফেলে। দজনের কাছেই ভুয়ো আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে।
১৯৯৮ সাল থেকে হুমকি চিঠি পাচ্ছেন সলমন
সলমন খানের কাছে হুমকি চিঠি বহুবারই এসেছে। ১৯৯৮ সাল থেকে এটা হয়ে আসছে। সেই বছরই সলমন খানের বিরুদ্ধে কালো হরিণ শিকার করার মামলা দায়ের হয়। তখন থেকেই বিষ্ণোই সমাজের সঙ্গে সলমন খানের শত্রুতা তৈরি হয়ে যায়। লরেন্স পুলিশকে জানিয়েছিল যে তাদের সমাজে পশু বিশেষ করে কালো হরিণকে ভগবানের মতো মানা হয়ে থাকে। তারা কালো হরিণের পুজো করে। তাই যখন কালো হরিণ শিকার মামলা সলমন খানের নাম উঠে আসে তখন থেকেই অভিনেতা গ্যাংস্টারের নিশানায় পড়ে যায়। প্রকাশ্যেই সলমনকে হুমকি দিতে শুরু করে। সেইদিন থেকেই অভিনেতা বিষ্ণোই গ্যাংস্টারের তালিকায় চলে আসে।
গোল্ডি ব্রারের টার্গেটে সলমন
গত বছরের ১৮ মার্চ সলমন খানের কাছে হুমকি মেইলও আসে। যেখানে বলা হয় যে গোল্ডি ব্রার সলমনের সঙ্গে সামনে বসে কথা বলতে চায়। ১০ এপ্রিলে আবার হুমকি ফোন আসে। যেখানে বলা হয় যে ৩০ এপ্রিল সলমন খানকে মেরে ফেলা হবে। গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার আজতক-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিল যে সলমন তার টার্গেটে রয়েছে, সুযোগ পেলেই অভিনেতাকে মেরে দেওয়া হবে। এইসব কারণের জন্য এবং রবিবারের ঘটনাকে সামনে রেখে সলমন খানের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হল।