'দ্য বেঙ্গল ফাইলস' বিতর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন সিনেমাটির অন্যতম মুখ্য চরিত্রে থাকা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, তিনি কোনও ইতিহাসবিদ নন, একজন অভিনেতা মাত্র। কোনও গল্প রাজনৈতিক ভাবে সঠিক কি না, তা দেখার দায় অভিনেতার নয় বলেই মনে করছেন তিনি। এমনকী এই দুঁদে অভিনেতা বলেন, 'কীকরে সিনেমাটির নাম দ্য দিল্লি ফাইলস থেকে বেঙ্গল ফাইলস হয়ে গেল তা আমার জানা নেই।'
১৯৪৬ সালের অশান্তি নিয়ে তৈরি 'দ্য বেঙ্গল ফাইলস'-এর পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং নির্মাতাদের বিরুদ্ধে একাধিক FIR দায়ের হয়েছে এ রাজ্যে। এদিকে, বিবেক অগ্নিহোত্রীর অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপের কারণে কলকাতায় লঞ্চ করতে দেওয়া হয়নি সিনেমাটির ট্রেলার।
১৯৪৬-এর দাঙ্গা রুখতে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন বাংলার গোপাল মুখোপাধ্যায়। তাঁর চরিত্র ভুল ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য এই সিনেমাটির নির্মাতাদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছেন বাংলার সেই পরিত্রাতার নাতি শান্তনু মুখোপাধ্যায়। অনেক তথ্যেরও ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
দ্য ওয়ালকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় গোটা বিতর্ক প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, 'আমি ইতিহাসবিদ নই তাই বলতে পারব না সিনেমাতে কোথায় ইতিহাসের বিকৃত করা হয়েছে কি না। আমি একজন অভিনেতা। আমি চরিত্র পছন্দ করেছিলাম এবং তাই অভিনয় করতে রাজি হয়েছি। এটাই আমার কাজ। ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে কি না, তা দেখা আমার কাজ নয়। যদি কারও মনে হয় বাংলার ইতিহাসের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে তবে আদালত যাক সঠিক তথ্য নিয়ে। অযথা বিতর্ক তৈরি করে তো কোনও লাভ নেই।'
'দ্য বেঙ্গল ফাইলস'-এ ভিলেনের ভূমিকায় দেখা যাবে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে। মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, পল্লবী যোশী এবং অন্যান্য অভিনেতারাও রয়েছেন এই ছবিতে।
পশ্চিমবঙ্গে এই ছবি মুক্তি পাবে না, সে ভয় কি রয়েছে? জবাবে অভিনেতা বলেন, 'আমি জানি না। আজকাল তো এটা ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। গোটা কাহিনি কাউকে প্রথমে বলা হয় না। কেবলমাত্র অভিনেতাকে তাঁর পার্টটুকুই জানানো হয়। তাঁর চরিত্রটুকু সম্পর্কেই ব্রিফ করা হয়। যখন আমায় আমার রোল সম্পর্কে বলা হল, চরিত্রটি খুব আকর্ষণীয় মনে হয়েছিল। ভিলেনের চরিত্র এটি এবং অনেক কম অভিনেতাই রয়েছেন যারা এমন চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান।'
শাশ্বতর দাবি, প্রথমে এই সিনেমাটির নাম 'দ্য দিল্লি ফাইলস' রাখা হয়েছিল। তবে তা পরিবর্তন হল, সে সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল নন। অভিনেতা বলেন, 'যখন শুটিং চলছিল, সিনেমাটির নাম ছিল দিল্লি ফাইলস। শুটিং শেষ হওয়ার পর আমি জানতে পারলাম নাম পরিবর্তন হয়ে দ্য বেঙ্গল ফাইলস হয়ে গিয়েছে। সেটা তো আর আমার হাতে ছিল না।' শাশ্বতর সংযোজন, 'গোটা সিনেমাটা না দেখলে তো বুঝতে পারব না, কেন এমন পরিবর্তন করা হল। কিন্তু অযথা চিৎকার-চেঁচামেচি করে তো কোনও লাভ হবে না।'