সত্যজিত্ রায়ের (Satyajit Ray) কর্মকাণ্ডকে 'দৈত্যাকার' বললে অত্যুক্তি হয় না। প্রতিটি কাজই আন্তর্জাতিক মানের। তা এহেন বহুমুখী প্রতিভার এক ব্যক্তিত্বকে নিয়ে ঘটনার শেষ নেই। তেমনই একটি ঘটনা হল পেপসির বিজ্ঞাপন। কী ঘটেছিল?
৭০-এর দশকের শেষের দিক। কোল্ডড্রিঙ্ক সংস্থা পেপসি ঠিক করে পশ্চিমবঙ্গে লঞ্চ করবে। অর্থাত্ বাংলার বাজার ধরবে। আর বাংলার বাজার ধরতে গিয়ে পেপসি কর্তৃপক্ষ বেছে নেন সত্যজিত্ রায়কে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি সত্যজিত্ রায় কি বিজ্ঞাপনটি করেছিলেন? সেই ঘটনাটি bangla.aajtak.in-কে জানালেন পরিচালক সন্দীপ রায়।
মণ্ডা-মিঠাইয়ের বদলে পেপসি পড়ার কথা ছিল
তিনি জানালেন, আকাশ থেকে মণ্ডা-মিঠাইয়ের বদলে বিজ্ঞাপনে পেপসি পড়ার কথা ছিল। এখানেই জড়িয়ে গুগাবাবা। সন্দীপ রায়ের কথায়, 'পেপসির একজন খুব বড় পদে থাকা ভদ্রলোক এলেন। যতদূর মনে পড়ছে ৭০-এর দশকে। বাবার সঙ্গে কথা হয়। বাবা কয়েকটা ছোটখাটো জিনিস লিখে দেয়। কেন হল না শেষমেশ, তা বলতে পারবো না। হয়তো বড়কর্তাদের কোনও অসুবিধা ছিল। এই প্যান্ডেমিকে বাবার সব কাগজপত্র ঘাঁটতে গিয়ে ওই স্ক্রিপ্টগুলো পেয়ে গেলাম। খুব ইন্টারেস্টিং, মন্ডা মিঠাইয়ের জায়গায় পেপসি পড়ছে। উনি নতুন করে গানও লিখেছিলেন, একটু কথা অদলবদল করে। দু তিনটে স্ক্রিপ্টও উনি করেছিলেন।'
আসলে পেপসি চেয়েছিল, গুপি-বাঘার হাত ধরেই বাংলার বাজার ধরতে। সত্যজিত্ রায়ের কাছে অফারটি এসেছিল। সত্যজিত্ রায় পেপসি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, তিনি একটি সিনেমার শ্যুটিংয়ে ভীষণ ব্যস্ত। সেটি শেষ করে তারপর পেপসি-র বিজ্ঞাপন নিয়ে ভাববেন। তপেন চট্টোপাধ্যায় ও রবি ঘোষকে সে বিষয়টি জানানো হয়। দুজনেই ভীষণ খুশি হন। তারপর সেই বিজ্ঞাপনটি আর বাস্তবে হয়নি। কেন হয়নি, তার সদুত্তর দিতে পারেননি সন্দীপ রায়।
সত্যজিত্ রায় বেঁচে থাকলে ওয়েব সিরিজ করতেন?
সন্দীপ রায়ের কথায়, 'উনি অবশ্যই করতেন। এবং আমার মনে হয়, ছোট গল্পগুলো নিয়েই কাজ করতেন। আর যিনি শঙ্কুর ক্রিয়েটার, তাঁকে একটু সায়েন্স, টেকনোলজির খেয়াল রাখতেই হবে। কিন্তু নতুন যে সব টেকনোলজি আসছে, তা নিয়ে উনি ভীষণ উত্সাহী ছিলেন, যেটা দুর্ভাগ্যবশত উনি দেখে যেতে পারলেন না। উনি কমপ্যাক্ট ডিস্ক অবধি দেখে গেছেন। আমার মনে হয়, এই টেকনোলজিটা নিয়ে বাবা একটা কিছু করতেন। যেটা আমাদের পক্ষে ভাবা সম্ভব নয়। কিন্তু নতুন কী আবিষ্কার হচ্ছে, এ বিষয়ে ভীষণ সজাগ থাকতেন। নানা রকম ম্যাগাজিন সাবস্ক্রাইব করতেন।'