
কীর্তন-কৃষ্ণনাম গেয়েই অদিতি মুন্সী ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর পা জমিয়ে ফেলেছেন। তাঁর মিষ্টি গলা শ্রোতাদের মন জয় করে নেয় নিমেষে। হিন্দি বলিউডি গান বা বাংলার লায়ে লাপ্পা গান নয় বরং অদিতির কনসার্টে মানুষ ভিড় জমান তাঁর গলায় কীর্তন, কৃষ্ণগান শোনার জন্য। গায়িকার পাশাপাশি অদিতি রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন। রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক অদিতি। নিজের কাজ থেকে একটু ছুটি পেয়ে গায়িকা বিদেশে ঘুরতে গিয়েছেন। আর সেখান থেকে ভিডিও দিতেই ট্রোলের মুখে অদিতি।
অদিতি গিয়েছেন আরবের এক প্রাচীন শহর পেত্রাতে। মুসলিম অধ্যুষিত এই দেশের সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে গায়িকাকে। বিশেষ করে এই পেত্রা শহরের ইতিহাস এবং তার স্থাপত্য থেকে চোখ ফেরাতে পারছেন না অদিতি। আর সেই ভিডিও দিতেই সমালোচনার মুখে পড়লেন তিনি। অদিতিকে এই ভিডিওতে বলতে শোনা গিয়েছে, 'ফাইনালি এখানে পৌঁছে কথা বলার মতো ক্ষমতায় নেই। এখানে আসার পরে যেটা আমরা দেখতে পাব সেটা সব কষ্ট লাঘব করবে।' এই ভিডিও পোস্টের পরই ট্রোল করতে শুরু করেন গায়িকাকে।
একজন লেখেন, 'আপনি তো আমাদের এলাকার বিধায়ক। আপনাকে সেই ভোট প্রচারের সময় প্রথম এবং শেষবারের মতো সামনে থেকে দেখেছি। ভোটে জিতে যাওয়ার পর আপনাকে এই ইনস্টা ফেসবুক এইসবেই দেখি। বেশ ভাল লাগে।' আবার আর একজন লেখেন, 'উনি বিদেশে হেঁটে বেড়াচ্ছেন...নিজের এরিয়াতে যাওয়ার সময় নেই ওনার।' আর একজন লিখেছেন, 'ভিডিওটা ভাল, কিন্তু এটা কি ঠিক যে প্যালেস্টাইন পতাকার প্রচার করছেন আপনার ভিডিওতে? আপনাকে নির্বাচনের আগে ব়্যালিতে দেখেছিলাম। আপনার কেন্দ্রে অনেক কিছু ভুলভাল হচ্ছে। দয়া করে দেখুন সেটা।' যদিও এইসব ট্রোলের জবাব দেননি অদিতি।
এর আগে আরজি কর কাণ্ড নিয়েও ট্রোলের মুখে পড়েছিলেন গায়িকা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পদযাত্রায় পা মিলিয়েছিলেন অদিতি। আর সেটার পরই ট্রোলের মুখে পড়েন গায়িকা। আর পাঁচ জনের মতো কেন পথে নেমে প্রতিবাদ করলেন না সেই নিয়ে সরব হয় নেটপাড়া। যদিও এইসব নিয়ে মাথা ঘামাননা গায়িকা। অদিতির স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তীও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
প্রসঙ্গত, রাজারহাট-গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ২০২১ সালে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে চমকে দিয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূলের দীর্ঘদিনের নেতা পূর্ণেন্দু বসুর বদলে সেবার প্রার্থী হন অদিতি মুন্সী, রাজনীতির আঙিনায় একেবারে আনকোরা মুখ। ততদিনে দেবরাজ বিধাননগরের কাউন্সিলর হয়ে গিয়েছেন। বাগুইআটি দক্ষিণপাড়ার মেয়ে অদিতি রবীন্দ্রভারতী থেকে কীর্তনে এমএ করেন। গানের স্কুলও রয়েছে তাঁর। বহু ছাত্র ছাত্রীকে গান শেখান তিনি।গানের দিদিমণি। অদিতি নিজেও নিয়মিত গানের চর্চা করেন। স্টেজ শো থাকে প্রায়ই। একটি গানের রিয়ালিটি শোয়ে প্রথম বাংলার মানুষ চিনেছিল অদিতি মুন্সীকে। ছোটখাটো চেহারা, মুখ ভরা হাসি, নিচু স্বরে কথা, হরিনামে মঞ্চ মাতাচ্ছেন। যত দিন গিয়েছে, কীর্তনকে বাঙালি শ্রোতার কাছে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।