Abhishek Chatterjee: অভিষেকের মৃত্যুর ২ বছর পর কেমন আছেন স্ত্রী-কন্যা? bangla.aajtak.in-কে জানালেন সংযুক্তা

Abhishek Chatterjee: পেরিয়ে গেল দুটো বছর। নেই অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ না ফেরার দেশে চলে যান অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। রেখে যান তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে। একা হাতেই সংযুক্তা সামলাচ্ছেন তাঁর সংসার ও মেয়ে ডলকে।

Advertisement
অভিষেকের মৃত্যুর ২ বছর পর কেমন আছেন স্ত্রী-কন্যা? bangla.aajtak.in-কে জানালেন সংযুক্তাঅভিষেক চট্টোপাধ্যায়
হাইলাইটস
  • পেরিয়ে গেল দুটো বছর। নেই অভিষেক চট্টোপাধ্যায়।

পেরিয়ে গেল দুটো বছর। নেই অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ না ফেরার দেশে চলে যান অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। রেখে যান তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাকে। একা হাতেই সংযুক্তা সামলাচ্ছেন তাঁর সংসার ও মেয়ে ডলকে। যদিও সংযুক্তা ও ডল কোনও সময়ই মনে করেন না যে অভি (অভিষেক চট্টোপাধ্যায়) তাঁদের সঙ্গে নেই। বরং মা-মেয়ের এটা বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন অভিষেক। স্ত্রীর স্বপ্নে প্রায়ই আসেন অভিষেক। দুবছর কেটে গেল টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর। কেমন আছেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে, bangla.aajtak.in-কে জানালেন সংযুক্তা নিজেই।  


অভিষেক চট্টোপাধ্যায় চলে গিয়েছেন ২ বছর হল, কেমন আছ তুমি ও তোমার মেয়ে?

সংযুক্তা: আমি আর আমার মেয়ে ভালোই আছি। যে রকমটা প্রশ্নের শুরুতেই বললে যে অভিষেক চলে গেল, আমরা এটা মনেই করি না, ওহ আমাদের সঙ্গেই রয়েছে বলে আমার বিশ্বাস, অভিষেকই আমাদের ভাল রেখেছে। 

তোমাদের সঙ্গেই নাকি অভিষেক দা রয়েছে, এই বিশ্বাসটা কবে থেকে হল?

সংযুক্তা: এটা দেখো আমাদের ভগবত গীতাতেও আছে যে souls are forever living. প্রাথমিকভাবে যখন হল এটা আমার সঙ্গে, আমি তখন নিজের মধ্যে ছিলাম না। কারণ অভিষেক এতটাই আমাকে ও ডলুকে (অভিষেকের মেয়ে) ভালোবাসে, ওই ঘটনা হওয়ার পর অনেকেই অনেক কথা বলছিল, আমি তো কিছু বুঝে উঠতেই পারছিলাম না। অভিষেকের মৃত্যুর প্রথমদিন থেকেই ওকে আমি অনুভব করেছি, এটা আমার সঙ্গে হয়েছে কারণ আমি মানতে পেরেছিলাম যে অভিষেক আমাদের সঙ্গেই রয়েছে। আমি খুব ছোট বয়স থেকেই ভগবত গীতা পড়ি আর অভির সঙ্গে যখন আমার প্রথম কথা হয় ফোনে, তখন আমি একটি ব্যাঙ্কে চাকরি করি, তখন আমাকে অভি বলেছিল যে ওর একটা বাজে অভ্যাস আছে যে খুব পুজোপাঠ করে। পুজোটাই আমাদের আত্মার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করে। অভিষেক অসুস্থ ছিল সেটা আমি জানি, শ্যুটিং সেটে অসুস্থ হয়ে পড়ে সেটাও জানি। কিন্তু যে ছেলেটাকে মৃত্যুর আগের রাতেও ডিনারটা আমি খাইয়ে দিয়েছিলাম, অভিষেক ঠোঁটে খুব বোরোলিন লাগাতো সেটা এনে লাগালো, এক্সট্রা বোরোলিন আমার হাতে লাগিয়ে দিল। এগুলো সবই ঠাকুরেরই করা, না ওকে জানতে দিয়েছে না আমাকে জানতে দিয়েছে যে অভিষেকের আজকে প্রাণ চলে যাবে। বলিউডের জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার শামাক দাবারের মাসি কর্সেড ভাবনাগিরির লেখা বই 'দ্য লজ অফ দ্য স্পিরিট' কোনওভাবে আমার হাতে আসে আর সেইদিনকে অভি আমায় স্বপ্ন দেয়। সেখানে অভি আমার সঙ্গে কথা বলে। তারপর থেকেই আমি বুঝতে পারি যে অভি আমাদের সঙ্গেই রয়েছে। এটা আমাদের মধ্যেকার ভালোবসা ও আমাদের আধ্যাত্মিক ভাবনা-চিন্তা এক ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। আর আমি ও অভি প্রথমদিন থেকেই একে-অপরের ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল ছিলাম।   

Advertisement

টলিউডের জনপ্রিয় হিরো ছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, তাঁর মৃত্যুর পর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কারা কারা খোঁজ নেন?

সংযুক্তা: ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বা টলিউড থেকে কেউ কোনও খোঁজখবর এখন আর রাখে না। অভির মৃত্যুর ২-৩ মাস পর্যন্ত অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় খোঁজখবর নিয়েছিলেন, ৬ মাস পরও তিনিও টাটা বাই বাই করে দেন। 

তোমাদের আলাপ কীভাবে? বিয়েটাই বা কী করে হল?

সংযুক্তা: ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে আমার প্রোফাইল ছিল, সেখান থেকে অভি আমাকে অ্যাপ্রোচ করেছিল। আমি তখন দেখিনি। আমি তো মুম্বই থাকতাম, তারপর কলকাতায় যখন আসি, তখন এটা দেখি এবং অভি আমার সঙ্গে এই সাইটের ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করে, ওখানেই কথা হয়, ভালো লাগে, সেখান থেকে দেখা করি, বললাম না যোগাযোগটা ঠাকুর থেকে শুরু। যদিও আমি কলকাতার ফিল্মি তারকাদের অতটা চিনতাম না, আমি বলিউডের অনেককে চিনতাম ব্যাঙ্কে চাকরি করার সূত্রে। তবে অভিষেককে ভাল লাগে অভিনেতা হিসাবে নয়, বরং ওর এতটা ভাল মানুষ হওয়ার জন্য। আর যখন আমি শুনি যে অভি শ্যুটিংয়েও ঠাকুর নিয়ে যায়, এটা তো আমি কোনওদিন শুনিনি। ৩০ এপ্রিল অভির জন্মদিনের দিন আমরা দেখা করলাম আর ওইদিনই অভি ওঁর আঙুলের আংটি খুলে আমায় পরিয়ে দিল। 

এখন কোন কোন স্মৃতি মনে পড়ে অভিষেকদার?

সংযুক্তা: আসলে অভি তো আমার সঙ্গেই রয়েছে। আমি অভির সঙ্গে প্রতিটা মুহূর্তে বাঁচি। এমনকী ডলুও অনুভব করেন বাবা ওর সঙ্গেই রয়েছে। তবে এই কথাটা না বললেই নয়, আমায় অফিসে যাওয়ার জন্য টিফিনটা অভি বানিয়ে দিত। কোনও একদিন সকালে আমি অফিসে যাওয়ার তাড়ায় টিফিন না নিয়েই গাড়িতে বসে চলে গিয়েছি। কিন্তু অভি এতটাই দায়িত্বশীল, আমার টিফিন নিয়ে রীতিমতো রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে, আমার ড্রাইভারকে ফোন করে গাড়ি থামাতে বলে, এরপর আমি দেখি অভি, যে টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা, চুল উস্কো খুসকো, একটা ঘরে পড়ার টি-শার্ট আর শর্টস পরে রাস্তা ক্রস করছে আমায় টিফিন দেবে বলে। রীতিমতো ঘুম থেকে উঠলে একটা মানুষের যেমন চেহারা থাকে, অভিরও সেরকমই ছিল। এটা দেখে আমার চোখে সেদিন জল এসে গিয়েছিল আর আমি ইশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছিলাম আমায় এত ভাল স্বামী দেওয়ার জন্য। জানো, আমাদের মধ্যে কখনও ঝগড়া হত না। এটা শুনতে খুব অবাক লাগলেও এটা সত্যি হত। 

মেয়ের এখন কোন ক্লাস? কী করতে চায় সে ভবিষ্যতে?

সংযুক্তা: ডলু ক্লাস নাইনে উঠবে। এখন তো ১৪ বছর। বাবার মতো বিনোদন জগতেই আসতে চায়। 

মেয়ে বাবাকে কতটা মিস করে?

সংযুক্তা: অভি তো সারাক্ষণই আমাদের চারপাশে আছে তাই মিস করার সেই সুযোগটাই দেয় না আমাকে ও মেয়েকে।  

২৪ মার্চের দিনটা কীভাবে কাটাবে?

সংযুক্তা: আমরা সিরডি চলে যাব। ওখানেই ২৪ মার্চ সাইবাবার স্মরণে থাকব। ইশ্বরই তো আমার ও অভির মধ্যেকার যোগাযোগের সেতু।  

Advertisement

 

POST A COMMENT
Advertisement