পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে কি না, তা নিয়ে তরজা এখন তুঙ্গে টালিগঞ্জে। পরিচালক বনাম ফেডারেশনের সংঘাত ঘিরে সরগরম টলিপাড়া। এদিকে শনিবার সেটে রাহুল মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন বলে টেকনিশিয়ানরা কাজ করেননি। আর তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন টলিপাড়ার পরিচালকেরা। আর এরই মাঝে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানালেন তিনি ৯দিন ধরে ডিপ্রেশনে রয়েছেন।
শুক্রবারই ঠিক হয় যে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে ডিরেক্টরস গিল্ড। কিন্তু বেঁকে বসে ফেডারেশন। শনিবার থেকেই রাহুলের পুজোর জন্য নতুন ছবির শ্যুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় সেটে এলেও আসেননি সিনেমার অন্যান্য কলাকুশলীরা। যার ফলে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে শ্যুটিং করতে এলেও মেকআপ ভ্যানেই বসে থাকতে হয় বুম্বাদাকে। আর এরপরই ফেডারেশন বনাম পরিচালকদের সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। এখানেই এক সংবাদমাধ্যমকে প্রসেনজিৎ বলেন যে তিনি গত ৯দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছেন।
প্রসেনজিৎ বলেন, রাতে সিন পড়ছি। আর সকালে শুনছি হবে না! টেলিভিশন, ফিল্ম কিংবা ওটিটি-যেকোনও মাধ্যমেই হোক না কেন, এই যে কাজটা আমরা করি, সিনেমা বানানো, এটা বড় একটা কর্মযজ্ঞ। আমরা রাত্রিবেলা ঘুমনোর আগে একটা সিন পড়ে প্রস্তুত থাকি, পরের দিন সকাল বেলায় উঠে শুটিংটা করব বলে। এটা শিল্পী হিসেবে একটা ভালবাসার জায়গা। এক্ষেত্রে টানা আমি ৯ দিন রোজ রাতে সিন পড়ছি, আর সকালে উঠে শুনছি কাজটা হবে না। এটা একজন শিল্পীর ভাবাবেগে আঘাত লাগা। আমরা তো আবেগ দিয়েই সৃজনশীল কাজ করি, সেটাই যদি বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে শিল্পীর কাজ করার আবেগ নষ্ট হয়। এর জেরে কাজ যদি ঠিক করে না হয়, তাহলে আমি আজ ৪০ বছর ধরে কাজ করছি। দর্শকরাও আমাদের কাজ দেখবেন না। বুম্বাদা আরও বলেন, একটা টিমে কাজ করলে মান-অভিমান হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু তার জন্য ভালোবাসা কেন চলে যাচ্ছে? এখানে কারও কিছু প্রমাণ করার নেই, থেকে যাবে শুধু আমাদের সকলের কাজ। সেটা সিনেমা, সিরিজ হোক কিংবা সিরিয়াল। ইতিবাচক আলোচনার মাধ্যমে একটা পজিটিভ সিদ্ধান্তে আসা হবে বলেই আশা করছি।
তবে টলিউড সুপারস্টার দেব সকলের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যে তাঁদের এই লড়াইটাকে যেন রাজনৈতিক রং না দেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন যে টেকনিশিয়ান, ফেডারেশনের সঙ্গে সুষ্ঠ আলোচনা করে সিনেমার কাজ যত দ্রুত সম্ভব শুরু হোক। শনিবার সকালে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে একজোট হয়েছেন টলিপাড়ার পরিচালকরা। রাজ চক্রবর্তী, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। সকলেই বলছেন যেটা হচ্ছে সেটা একেবারেই উচিত নয়, অন্যায়।