বাংলার স্বর্ণযুগের সুদর্শন অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি তিনি চুটিয়ে অভিনয় করেছেন হিন্দি সিনেমাতেও। বেশ কয়েক বছর ধরেই তিনি মুম্বইতে আলাদা থাকেন। ছেলে প্রসেনজিৎ কলকাতায়। বিশ্বজিতের বয়স বাড়লেও গ্ল্যামারে কোনও ভাঁটা পড়েনি। এখনও বিশেষ ডাক পেলে নানা অনুষ্ঠানে তিনি চেষ্টা করেন অংশগ্রহণ করার। এত বড় মাপের অভিনেতা আর তাঁকে নিয়ে যে আজও উন্মাদনা তুঙ্গে তা টের পাওয়া গেল শুক্রবার। আচমকাই শুক্রবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থ হওয়ার খবর। যা শোনার পর শোরগোল পড়ে যায়। সকলেই প্রবীণ অভিনেতার স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ময়দানে নামেন খোদ প্রসেনজিৎ।
এদিন বিকেলের দিকে সকলকে স্বস্তি দিয়ে প্রসেনজিৎ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, একটা খবর ভুল ছড়িয়েছে সকাল থেকে…বর্তমানে মুম্বইয়ের বাড়িতে আমার বাপি সুস্থ আছে এবং ভালো আছে ..ভগবান এবং আপনাদের আশীর্বাদে। ছেলের কাছ থেকে বাবার সুস্থতার খবর পেয়ে সকলেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। প্রসঙ্গত, প্রবীণ অভিনেতাদের নিয়ে এই ধরনের ভুয়ো খবর মাঝে মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অনুরাগীরা। ঠিক একইভাবে এবার ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতার খবর। তবে সত্যিটা সামনে আনতে বিন্দুমাত্র দেরি করেননি প্রসেনজিৎ।
গত ১৪ ডিসেম্বর ৮৮ বছরের পা দিয়েছেন ‘বাবা তারকনাথ’ খ্যাত অভিনেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। মহানায়ক উত্তম কুমারের পরবর্তী সময়ে বাংলা ছবির অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক ছিলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ১৯৩৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর জন্ম হয় এই কিংবদন্তি নায়কের। তাঁর ফিল্মি কেরিয়ার শুরু হয়, মহানায়ক উত্তম কুমারের মায়ামৃগ (১৯৬০) ছবির হাত ধরে। এরপর ‘দুই ভাই’ (১৯৬১) ছবিতে নজর কাড়েন তিনি । এরপর বিশ্বজিৎ বোম্বেতে চলে আসেন । এরপর মুম্বই পাড়ি দেন তিনি। ১৯৬২ সালে, ‘বিশ সাল বাদ’ ছবিতে অভিনয় করেন যা প্রথমে উত্তম কুমারকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে মহানায়ক সেই ছবিটি করতে রাজি হননি। এরপর হেমন্ত কুমার প্রযোজিত প্রথম ছবি ছিল সেটি। তারপরে কোহরা , ‘বিন বাদল বরসাত’, ‘মজবুর’, ‘ক্যাসে কহু’, ‘মেরে সনম', ‘এপ্রিল ফুল’, 'শেহনাই’ এবং ‘পয়সা ইয়া প্যায়ার’ সহ বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন।১৯৭৫ সালে ‘কেহতে হ্যায় মুঝকো রাজা’ নামে একটা ছবিও বানিয়েছিলেন তিনি। এই মুহূর্তে 'অগ্নিযুগ : দ্যা ফায়ার' নামে একটি ছবি বানানোর কাজে ব্যস্ত তিনি।
৮৮ বছর বয়স তাই বয়সজনিত কারণে শারীরিক ভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন। কিন্তু প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, তাঁর বাবা গুরুতর কোনও শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন না। কিছুদিন আগেই পুত্রবধূ অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের নাটক দেখতে মুম্বইয়ের এক থিয়েটারে হাজির হয়েছিলেন বিশ্বজিৎ।