ছোটপর্দা হোক বা সিনেমা, কিংবা ওয়েব সিরিজ, বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন অপরাজিতা আঢ্য। ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেত্রী ঠোঁটকাটা নামেই পরিচিত। আঠারোর গণ্ডি পার করার আগেই টলিউডে পা রেখেছিলেন অভিনেত্রী। কেরিয়ারের একদম প্রথমদিকেই বিয়ে করেন টেকনিশিয়ান অতনু হাজরার সঙ্গে। আর বিয়ের পর কী কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে তাঁকে পড়তে হয়েছিল, সবটা জানান bangla.aajtak.in-এর ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে।
অপরাজিতা আঢ্য জানিয়েছেন তিনি সম্ভ্রান্ত উকিল পরিবারে জন্মেছিলেন। তাঁর পরিবার আগাগোড়াই খুবই কট্টর প্রকৃতির ছিল। অপরাজিতা বলেন, 'সম্ভ্রান্ত উকিল পরিবারের হলেও আমার মা ছিল ইস্টবেঙ্গলের। আমাদের বাড়িতে জাত-পাত সাংঘাতিকভাবে এখনও পর্যন্ত। আমার মাকে বাবা বিয়ে করে এনেছিলে, মা সেই সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পলিটিক্যাল সায়েন্সে এমএ পাশ। মা কালো ছিলেন, সেটা আমাদের বাড়ির আর এক অপরাধ। আমার ঠাকুরদার অশৌচের মধ্যে আমার বাবা মাকে বিয়ে করে এনেছিলেন। কারণ মায়ের বাড়িতেও অশান্তি হচ্ছে মায়ের ২৪ বছর বয়স হয়ে গেছে, বিয়ে হচ্ছে না।'
অপরাজিতা বলেন, 'আমার বাবা এই সময় আমার মাকে বিয়ে করে আনেন। আমার বাবার যেহেতু সেভাবে রোজগারপাতি ছিল না, আমার মায়ের সংসারে জায়গাও ছিল না। সেই কারণে আমার মাকে আলাদা করে দেওয়া হয়। এখনও আমরা বাড়ির যে অংশে থাকি সেটা বাড়ির আউট হাউস হিসাবেই ধরা হয়।' অভিনেত্রী জানান যে আজও তাঁর সেই আত্মীয়-স্বজনরা অভিনেত্রী অপরাজিতার তাঁরা পরিজন তা বলেন না। অপরাজিতার বাড়ি এতটাই কট্টর। অভিনেত্রী আরও বলেন, 'আমিও যেহেতু ইন্টারকাস্টে বিয়ে করেছি, আমার জ্যাঠামশাই বলেছিলেন, আমি মারা যাব, কিন্তু আমাকে যেন মেয়ে দেখতে না আসে। জ্যাঠামশাই মারা যাওয়ার পর আমাকে কিন্তু দেখতে দেওয়া হয়নি, ঢুকতে দেওয়া হয়নি ওই বাড়িতে। আমার স্বামীকেও দেখতে দেওয়া হয়নি।' অভিনেত্রী বলেন, 'আমার নাম নিয়ে আমার কাকা-জ্যাঠারা কখনই সমৃদ্ধ হয়নি।' পরিবারের এই গোঁড়ামি কিছুটা অভিনেত্রীর মধ্যেও রয়েছে বলে জানান তিনি নিজে। অপরাজিতার কথায়, 'আমি খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে না বলতে পারি। যেটা না, সেটা আমার কাছে না।
একমাসের আলাপে অতনুর সঙ্গে বিয়ের পর্ব সেরেছিলেন অপরাজিতা। তারপর থেকে সুখে-দুঃখে সর্বদা পরস্পরকে আগলে থেকেছেন তাঁরা। দেখতে দেখতে দাম্পত্য জীবনের ২৭ বছর পার করে ফেলেছেন দুজনে। কঠিন সময়ে পরস্পরকে আগলে থেকেছেন। ২০২৩ সালে মাকে হারিয়েছেন অফরাজিতা। অভিনেত্রীর জীবনের অনেকটা জায়গা জুড়ে ছিলেন তাঁর মা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই জানিয়েছিলেন মা হারানোর কথা।