কয়েকদিন আগেই হই-হল্লোড় করে আদৃত-কৌশাম্বির বিয়েতে মজা করে এলেন টেলি অভিনেত্রী তন্বী লাহা রায়। বিয়ে থেকে রিসেপশন সবেতেই ছিল তন্বীর উজ্জ্বল উপস্থিতি। সম্প্রতি নতুন ফ্ল্যাটও কিনেছেন অভিনেত্রী। খুশির সেই রেশ কাটতে না কাটতেই পরিবারে নামল শোকের ছায়া। মাতৃহারা হলেন ছোটপর্দার তোর্সা ওরফে তন্বী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তন্বী তাঁর মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে কাটানো শেষ মুহূর্তের ছবি দিয়েছেন। সঙ্গে আবেগঘন পোস্ট।
মাকে হারানোর শোক কাটিয়ে ওঠা তন্বীর পক্ষে বেশ কঠিন। তন্বী একটি ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে মায়ের হাতে তাঁর হাত রাখা। তন্বী সেখানে লিখেছেন, 'মা ও মা! এই হাত দিয়েই তো আগলে রাখতে আমাদের। বেরলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়াতে যতক্ষণ পর্যন্ত আমার গাড়িটা দখা যেত। সবাইকে নিজের হাতে ইউনিক জিনিস বানিয়ে দিতে। এই হাতেই বছরের পর বছর স্টেরয়েড, অ্যাসিড, স্যালাইন সব সহ্য করেছ। তুমি খুব কষ্ট পেয়েছ কিন্তু, আমাদের দেখাওনি। নিজের ভাইকে ছোট বয়সে হারিয়েছ। মা, বাবাকে চলে যেতে দেখেছ। এখন তাঁদের সঙ্গেই আছো নিশ্চয়ই? মা ও মা...।'
এখানেই শেষ নয়, তন্বী খুব আবেগেতাড়িত হয়ে লেখেন, 'তুমি দেখেছ আমার প্রথম নিঃশ্বাস, আমি দেখলাম তোমার শেষ শেষ নিঃশ্বাস। অক্সিজেন মাস্কের ভিতর থেকে জোরে জোরে আওয়াজ করে নিঃশ্বাস নিতে নিতে, আসতে আসতে আওয়াজ কমল। কিন্তু, নিঃশ্বাস তখনও চলছে। ভাবলাম এই তো এবার ফিরছ বোধহয়! কিন্তু, খেয়াল করলাম চোখের পাতা পড়ছে না তোমার। কিন্তু, নিঃশ্বাস চলছে'। তন্বীর লেখাতেই জানা গিয়েছে যে ডাক্তার এসে তন্বীকে জানান যে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সব শেষ হয়ে যাবে। তন্বীর বাবা হাসপাতালের ৬৮ নম্বর রুম থেকে এটা শোনার পর বেরিয়ে যান। কারণ তিনি নিজেকে সামলাতে পারছিলেন না। তন্বী লেখেন, আমি মায়ের হাত শক্ত করে ধরে ছিলাম। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে মাকে ডাকছিলাম। দেখছি ১০ সেকেণ্ড অন্তর গলার শিড়া উঠছে। মানে মা আছে। নিঃশ্বাস নিচ্ছে। মায়ের বেডে আমার চোখের জল পড়তেই নিজেকে সামলে নিলাম। কয়েক সেকেণ্ড পরেই শিড়াটা থেমে গেল। '
মঙ্গলবার মা মারা যান তন্বীর। এই পোস্টে মিঠাই-এর সহকর্মীরা সকলেই তন্বীকে সান্তনা জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, তন্বীর মা বেশ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ভর্তি ছিলেন হাসপাতালেও। প্রসঙ্গত, মিঠাই সিরিয়াল থেকে জনপ্রিয়তা পান তন্বী। তাঁর চরিত্রের নাম ছিল তোর্সা। আদৃত-কৌশাম্বীর বিয়ের কিছুদিন আগেই নতুন ফ্ল্যাটও কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু এইভাবে যে মাকে হঠাৎ হারাতে হবে তা ভাবতেও পারেনি অভিনেত্রী।