বাংলা সিনেমার ভাগ্য ফিরেছে। বহু বছর ধরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক-প্রযোজক, অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যে চেষ্টা করে চলেছিলেন অবশেষে গত বছর সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে। বহুরূপী ও খাদান এই দুটি বাংলা ছবি দর্শকদের সিনেমা হলে ফেরাতে পেরেছে। আর এই দুই ব্লকব্লাস্টার ছবি সিনেমা হলের মালিক ও ডিস্ট্রিবিউটারদের মুখে চওড়া হাসি বজায় রাখতে সফল। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়েই এই ছবি এখনও দর্শকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
বহুরূপী সিনেমার প্রযোজনা সংস্থার এক মুখপাত্র এ প্রসঙ্গে বলেন, 'শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায়ের এই ছবিটি এখনও সিঙ্গল স্ক্রিন ও মাল্টিপ্লেক্সে রাজ করছে, গত ১৩ সপ্তাহে এই সিনেমাটি ১৭.৯৫ কোটি টাকা উপার্জন করেছে।' সম্প্রতি এই ছবির ১০০ দিনের মুক্তি উপলক্ষ্যে পরিচালক শিবপ্রসাদ বলেন, '১৩ সপ্তাহেও বহুরূপীকে দর্শকরা এতটা ভালোবাসা দিয়েছে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ। ১৩ সপ্তাহ পরও এই সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্স ভরিয়ে রাখতে সফল হয়েছে, বিশেষ করে সপ্তাহান্তের দিনগুলোতে, এটা খুবই ভাল।' প্রসঙ্গত, ব্যাঙ্ক ডাকাতি নিয়ে এক সত্য ঘটনা অবলম্বনে শিবপ্রসাদ-নন্দিনীর এই ছবি গত বছর দুর্গাপুজোর আগে অক্টোবরে মুক্তি পায়। সিনেমার গল্প, অভিনয়, আঞ্চলিক গানের প্রাধান্য থেকে শুরু করে রাজ্যে বহুরূপীদের এখন কী অবস্থা সেটাও তুলে ধরা হয় এই সিনেমায়।
আবির চট্টোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কৌশানী, ঋতাভরীর অভিনয় বারবার প্রশংসিত হয়েছে নানন মহলে। তবে এই সিনেমায় সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছেন কৌশানী মুখোপাধ্যায়। এই ছবি তাঁর কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট, সেটা বারংবার একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অভিনেত্রী। বহুরূপীর পরই নাম নিতে হয় দেব ও ইধিকা পালের খাদান ছবিটির। পরিচালক সুজিত দত্ত ও সুরিন্দর ও দেবের যৌথ প্রযোজনার এই ছবিটি প্রথম থেকেই প্রচারে অভিনবত্ব এনেছিল। ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পায় দেবের খাদান, যেটি মাত্র ৩ সপ্তাহে ১৫ কোটির ব্যবসা করে ফেলে বলে জানায় ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলার আসানসোলের কয়লা খনি-র ওপর এই সিনেমার গল্প, যেখানে রাজনীতি ও কয়লা মাফিয়াদের মধ্যেকার জটিল বিষয়গুলিকে তুলে ধরা হয় খাদান-এ। এই ছবিতে দেব ছাড়াও রয়েছেন যিশু সেনগুপ্ত, জন ভট্টাচার্য, বরখা বিস্ত ও ইধিকা পাল সহ অন্যান্যরা। দেব এই বিষয়ে বলেন, 'খাদান এখনও বক্সঅফিসে গর্জন করে যাচ্ছে।' অভিনেতা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন যে এই ছবি গোটা দেশের সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। তিনি এই সাফল্যের জন্য দর্শকদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি। সিনেমা সমালোচক সজল দত্ত এ প্রসঙ্গে বলেন, 'দুটি ছবির অভিনয়ই বাংলা সিনেমার জন্য ভালো ইঙ্গিত দেয়। কোভিড মহামারির পরে, বাংলা সিনেমার জন্য এই ধরনের বক্স অফিস সংখ্যা অভূতপূর্ব। আশা করি, মূলধারার ব্লকবাস্টার এবং সিনেমা উভয় ক্ষেত্রেই এই গতি ২০২৫ জুড়ে অব্যাহত থাকবে, অন্যান্য ঘরানার মধ্যে।'