Saiyaara দেখে কেন কেঁদে ভাসাচ্ছেন দর্শক? 'সাইয়ারা' শব্দের অর্থ কী? জানুন

প্রেমিকের বাহুডোরে হাপুস নয়নে কাঁদছেন কেউ। আবার কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞানও হয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। জেন জি-র এই দশা দেখে হাসছে মিলেনিয়ালরা। কিন্তু কী এমন রয়েছে অহন পাণ্ডের Saiyaara সিনেমায়? কেন সকলে কেঁদে ভাসাচ্ছেন? এই Saiyaara শব্দটির অর্থই বা কী?

Advertisement
Saiyaara দেখে কেন কেঁদে ভাসাচ্ছেন দর্শক? 'সাইয়ারা' শব্দের অর্থ কী? জানুনসাইয়ারা
হাইলাইটস
  • অহন পাণ্ডে অভিনীত 'সাইয়ারা' ছবি দেখে কেঁদে ভাসাচ্ছে জেন-জি
  • কী এমন রয়েছে এই সিনেমাটিতে?
  • 'Saiyaara' শব্দটির অর্থই বা কী?

গুগল সার্চ হোক বা ইনস্টা রিল, একটাই শব্দ চতুর্দিক থেকে ভেসে আসছে। 'সাইয়ারা'। অহন পাণ্ডের এই নয়া সিনেমা জেন জি-কে 'ক্রেজি' করে তুলেছে। কর্পোরেট কালচার আর সিচুয়েশনশিপের জটে আটকে থাকা এই জেনারেশন রুপোলি পর্দায় গদগদ লাভ স্টোরি দেখতে বেশ ভালবাসে। কিন্তু 'সাইয়ারা' ছবিটিতে আলাদা কী এমন রয়েছে যা দেখে সিনেমা হলের মধ্যেই মুহূর্মুহু মুর্ছা যাচ্ছেন তাঁরা। প্রেমিকের বাহুডোরে প্রেমিকার হাপুস নয়নে কাঁদার এমন চিত্র এখন ভাইরাল। জেন জি-এর এই সমস্ত কীর্তিকলাপকে 'পাগলামো' তকমা দিচ্ছেন কোল্ডপ্লে কিস ক্যাম নিয়ে রসিকতা করা মিলেনিয়ালরা। 

'সাইয়ারা' দেখে কেন কেঁদে ভাসাচ্ছেন সকলে?
ভোপালের একটি মাল্টিপ্লেক্সে 'সাইয়ারা' ছবিটি চলাকালীন ২৪ বছরের এক যুবক হঠাৎ শ্বাসকষ্টে ভুগতে শুরু করেন, হাত-পা কাঁপতে থাকে। শেষ পর্যন্ত অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে হয়। দিল্লির ২১ বছরের এক তরুণী সিনেমার শেষ ১৫ মিনিটে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হওয়ার উপক্রম হন, তাঁকে বের করে আনা হয়। এ সমস্ত দৃশ্য প্রায় রোজই চোখে পড়ছে ফেসবুকের ফিডে। অহন পাণ্ডে ও অনীত পদ্দা অভিনীত এই প্রেমের উপাখ্যান মনের কোন জায়গায় আঘাত করছে? কোন আবেগকে উস্কে দিচ্ছে এটি? অনেকেই ‘আশিকি ২’-এর সঙ্গে এই ছবির তুলনা করছেন। দর্শকদের বক্তব্য, বহু বছর পরে মোহিত সুরি একটি ছবি তৈরি করলেন এবং মুগ্ধ করলেন। মূলত এ ছবির মধুর সমাপ্তিই টানছে দর্শকদের। 

কী বলছেন মনোবিদরা?
সম্পর্কের ভাঙন, একাকীত্ব আর ত্যাগের গল্প শুনিয়েছে মোহিত সুরির এই ছবি। হয়তো সব জেনারেশনেরই একটা 'আশিকি' দরকার পড়ে। আর জেন জি-র কাছে 'সাইয়ারা'-ই সেই 'আশিকি'। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. সত্যকান্ত ত্রিবেদী বলেন, 'যাদের জীবনে অমীমাংসিত ট্রমা রয়েছে, তাদের জন্য এই ধরনের ছবি এক প্রবল ট্রিগারের কাজ করতে পারে। কান্না, আতঙ্ক, শ্বাসকষ্ট, এসবই সেই স্নায়ুতন্ত্রের প্রতিক্রিয়ার লক্ষণ। যারা এ সিনেমা দেখে নিজেদের রিলেট করতে পারছেন, তাদের সঙ্গেও এই স্বাভাবিক লক্ষণগুলোই হচ্ছে।' ড. অনিল সিং শেখাওয়াত আবার বলছেন, 'কিছুটা আবেগপ্রবণ হওয়া স্বাভাবিক, কিন্তু যদি মন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, সেটি বিপদের ইঙ্গিত। মানসিকভাবে অস্থির এবং অত্যন্ত স্পর্শকাতর ব্যক্তির জন্য এই ধরনের ছবি আঘাতের কারণ হতে পারে।' ড. চন্দ্র প্রকাশ (ঢাবি) মনে করেন, 'এমন সিনেমার আগে সতর্কতা দেওয়া উচিত, এতে মানসিকভাবে সংবেদনশীলদের অস্বস্তি হতে পারে।' পাশাপাশি ড. বিধি এম পিলানিয়া (কাউন্সেলিং মনোবিজ্ঞানী) বলেন, 'ট্রিগার ওয়ার্নিং সেন্সরশিপ নয়, সংবেদনশীলতার বিষয়। আগে থেকে জানলে কেউ নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে।'

Advertisement

'সাইয়ারা' শব্দের অর্থ কী?
'সাইয়ারা' শব্দের অর্থ 'প্রিয়তমা' নয়। অনেকেই গুলিয়ে ফেলছেন বিষয়টি। এটি একটি উর্দু তথা আরবি শব্দ। যার অর্থ নক্ষত্র কিংবা গ্রহ। যে নক্ষত্র বা গ্রহ সর্বদা পাক খাচ্ছে সেটিই 'সাইয়ারা'। শান্ত কিন্তু উজ্জ্বল নক্ষত্রকেই উর্দুতে 'সাইয়ারা' বলা হয়। যে নক্ষত্র একা ঘুরপাক খায় কিন্তু গোটা জগৎকে আলোকিত করে। সিনেমার টাইটেলে শব্দটিকে কাব্যিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত ইটারনাল লাভ বোঝাতেই এই শব্দের ব্যবহার করেছেন পরিচালক মোহিত সুরি। 

তবে মোদ্দা কথা ভোটার তালিকা সংশোধন, বাঙালি অস্মিতা কিংবা TCS-এর ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো গুরুগম্ভীর টপিকের ভিড়ে 'সাইয়ারা' খানিক রিলিফ দিচ্ছে, তা মানছেন কমবেশি সকলেই। 


 

POST A COMMENT
Advertisement