সত্যজিত্ রায়ের জন্মদিন ২ মে। আবার ৮ মে মুক্তি পেয়েছিল 'গুপি গাইন বাঘা বাইন'। কাকতালীয়, না? আসলে সত্যজিতের জন্মদিন একটু অন্যভাবে পালন করতে চেয়েছিল bangla.aajtak.in। আর সেই প্রচেষ্টাতেই 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' নিয়ে বেশ কিছু তথ্য উঠে এল। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন, যাঁদের জানা নেই, ইন্টারেস্টিং লাগবে।
শোনা যায়, 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' ছবিটি হিন্দিতে বা বলিউডে রিমেক হওয়ার একটা কথা শুরু হয়েছিল। যা শেষ পর্যন্ত বাস্তব হয়নি। কোথায় আটকেছিল? পরিচালক ও সত্যজিত্ রায়ের পুত্র সন্দীপ রায় জানালেন, কেন 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' হিন্দিতে রিলিজ করল না।
তাঁর কথায়, 'গুলজারের সঙ্গে বাবার একটা কথা হয়েছিল এ বিষয়ে। গুলজারের ভীষণ ইচ্ছে ছিল গানগুলিকে অনুবাদ করার। কিন্তু তারপর যেটা হল, আসলে বম্বে থেকে একটা অফার এল এবং সেই অফারে কয়েকটা কাস্টিংও এসে গেল। মানে একটা প্যাকেজ ডিলের মতো। তাতে বাবা খুব একটা খুশি হননি। ওই কাস্টিংয়ে বাবার মত ছিল না। যে কারণে শেষ পর্যন্ত ওটা আর হয়নি। খুব বেশি দূর যে কথাটা এগিয়েছিল, তা কিন্তু নয়। আর তখন বাবা পরপর ছবি করে যাচ্ছে, তাই এই ইস্যুটিতে ওঁর ইন্টারেস্ট হারিয়ে যায়। গুপি-বাঘার মধ্যে যে অদ্ভূত বাঙালিয়ানাটা রয়েছে, আমার মনে হয় এক হিসেবে হয়নি, ভালই হয়েছে। ওটা বাংলা হিসেবেই থাকে।'
আরও পড়ুন: 'গুপি গাইন বাঘা বাইন নই, টাকা জোগাড় করতে হয়,' DA ইস্যুতে মমতা
১৯৬৯ সালের ৮ মে মুক্তি পেয়েছিল গুপি গাইন বাঘা বাইন ছবিটি। 'একেই বলে শ্যুটিং'-এ সত্যজিত্ রায় লিখেছিলেন, 'সিমলার কুফরি বলে একটি জায়গায় শ্যুটিং হয়েছিল গুপি গাইন বাঘা বাইনের পাহাড় ও বরফের দৃশ্যটির। এখন অবশ্য এই জায়গাটা পর্যটকদের কাছে দিব্যি পরিচিত। কিন্তু সেই সময়ে কুফরি কার্যত একটা গ্রাম ছিল। তখন গ্রীষ্মকাল। চিত্রনাট্য অনুযায়ী যে বরফ দরকার, তা পেতে উঠতে হবে পাহাড়ের অনেকটা ওপরে। কিন্তু শ্যুটিংয়ের সামগ্রী নিয়ে সেটা অসম্ভব। বরফ পেতে হবে রাস্তার ধারেই। কিছুটা যেতেই শুরু হয়ে গেল তুষারপাত। আর তারমধ্যেই খুঁজে পাওয়া গেল প্ল্যাটফর্মের মতো একটা জায়গা। সেখানেই হল শ্যুটিং। তবে গ্রামের সাধারণ ধুতি-ফতুয়ায় দুই অভিনেতাকে বরফে শ্যুটিং অনুমতি দেননি পরিচালক। ধুতি ফতুয়ার নিচে পরানো হয়েছিল শীতপোশাক। সেভাবেই শ্যুটিং হয়েছিল পাহাড়ের দৃশ্যটি। তবে বরফের গা বেয়ে গড়িয়ে পড়ার দৃশ্যটি শ্যুট করতে গিয়েই বাঁধল বিপত্তি। লাফাতে গিয়ে বরফে ডুবে হারিয়ে গেল গুপী বাঘার যাদু জুতো। অনেক বরফ সরিয়েও খোঁজ মিলল না যাদু জুতোর। বরফ না গলা পর্যন্ত সেই জুতো পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। কাজেই বাড়তি জুতো জোড়া দিয়ে করা হল বাকি শ্যুটিং।'