
প্রিয় শিল্পী জুবিন গর্গের স্মৃতিতে তাঁর পদচিহ্ন রেখে দিলেন শিল্পী দিগন্ত ভারতী। সিঙ্গাপুর আকস্মিক মৃত্যুর পর রবিবার সন্ধ্যায় অসমে শেষকৃত্য হয় জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীর। দীর্ঘক্ষণ অনুরাগীদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য মরদেহ শায়িত রাখা হয়েছিল জোরহাটের কাহিলিপাড়ায় জুবিনের পৈতৃক ভিটেতে। সেখান থেকেই সংগ্রহ করা হয় তাঁর পদচিহ্ন।
অসমের 'রকস্টার' হিসেবেই পরিচিত ছিলেন জুবিন গর্গ। তাঁকে বলা হত উত্তর পূর্ব ভারতের 'রাজপুত্র'। আর তাই শিল্পীর শেষযাত্রায় জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য অনুরাগী। প্রত্যেকেই নিজেদের মতো করে শ্রদ্ধা জানান তাঁকে। জুবিনের বাড়িতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পৌঁছে গিয়েছিলেন শিল্পী দিগন্ত ভারতী। তিনিই সংগ্রহ করেন জুবিনের পদচিহ্ন। একজোড়া সাদা ধবধবে পায়ের পাতার আকৃতি জুবিনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধার চিহ্ন বলেই উল্লেখ করেন এই শিল্পী। সেই পদচিহ্ন এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যা দেখে আবেগাপ্লুত ফ্যানেরা। অনেকই সেই পদচিহ্ন নিজের নিজের ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করে রাখছেন জুবিনের স্মৃতিতে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুসংবাদ যেন অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল গোটা দেশের। সিঙ্গাপুরে শো করতে গিয়ে একটি ইয়ট পার্টিতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ইয়ট থেকে জলে নামেন। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও লাইফ জ্যাকেট খুলে ফেলেন তিনি। তারপরই ঘটে যায় বিপত্তি। আচমকাই জুবিনকে উল্টো হয়ে অস্বাভাবিক ভাবে ভেসে থাকতে দেখেন ইয়টে থাকা বাকি সকলে। তড়িঘড়ি উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তত ক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। অচেতন অবস্থায় তাঁকে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালের ICU-তে ভর্তি করা হলেও প্রাণরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর জন্মস্থান অসম, শোকে পাথর হয় গোটা দেশ। এরপর চোখের জলে প্রিয় শিল্পীকে শেষ বিদায় জানানো হয়।
২০১৯ সলে এক অনুষ্ঠানে জুবিন গর্গ জানিয়েছিলেন, তিনি চান তাঁর মৃত্যুর পর অসমের সবাই যেন 'মায়াবিনী' গানটি গায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় গায়কের বলা সেই কথা সম্প্রতি ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁকে ইন্টারভিউতে বলতে শোনা গিয়েছিল, 'মায়াবিনী গানটা আমার কল্পনার মতো। আমি যখন মারা যাব, পুরো অসমকে এই গান গাইতে হবে।' আর তাই জুবিনের শেষযাত্রায় বাজানো হয় গানটি।
গুয়াহাটির কাহিলিপাড়ায় তাঁর নিজের বাড়িতে কিছুটা সময় রাখা হয় মরদেহ। এরপর অর্জুন ভগেশ্বর বরুহা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ফ্যানেরা তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। রবিবার সন্ধ্যায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় জুবিনের।