শুরু হয়ে গেছে উৎসবের মরসুম (Festive Season)। দোরগোড়ায় বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ দুর্গা পুজো (Durga Puja Festival)। আর পুজো মানেই খাওয়া- দাওয়া, আড্ডা, ঠাকুর দেখা, গান -বাজনা এবং প্রচুর সাজগোজ করা। চারিদিকে পুজো পুজো গন্ধ। আশ্বিনের 'শারদ প্রাতে' আলোকবেণু বাজতে আর কয়েকদিন অপেক্ষা। এবছর টলিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর (Rituparna Sengupta) পুজো দারুণ স্পেশাল। প্রথমবার মহালয়ায়, কোনও টেলিভিশনে দেবী দুর্গা (Devi Durga) সাজবেন অভিনেত্রী। কালার্স বাংলায় মহিষাসুরমর্দিনী (Mahisasuramardini) রূপে দেখা যাবে ঋতুপর্ণাকে।
কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকার তাঁকে বঙ্গভূষণ সম্মানে সম্মানিত করেছে। কয়েক যুগ ধরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করে আসলেও, এবার একেবারে নয়া ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। মহালয়ার শ্যুটের অভিজ্ঞতা থেকে পুজোর নস্টালজিয়া, আজতক বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে শেয়ার করলেন নায়িকা।
আজতক বাংলা: প্রথমবার আপনাকে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে দেখা যাবে, অভিজ্ঞতা কেমন হল?
ঋতুপর্ণা: দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি প্রথমবার মহিষাসুরমর্দিনী। যদিও এর আগে প্রচুর স্টেজ শো করেছি। তবে ছোট পর্দায় এই প্রথম।
প্রশ্ন: দুর্গা রূপে সামনে আসা মানেই তো অনেক প্রত্যাশা থাকে সকলের, একটুও টেনশন হচ্ছে?
ঋতুপর্ণা: হ্যাঁ আমি একটু নার্ভাস। তবে এই কাজটা করার সময় খুব উপভোগ করেছি। নাচ আমার খুব প্রিয়, আর তার সঙ্গে অভিনয় মিলেমিশে থাকলে তা, আরও দারুণ ব্যাপার। এই প্রোজেক্টের গোটা টিমটা খুব ভাল ছিল।
প্রশ্ন: এত বছর মহালয়ায় দুর্গা রূপে সামনে আসেননি কেন?
ঋতুপর্ণা: স্টেজ শো করেছি, তবে ছোট পর্দায় প্রথমবার। 'বেটার লেট দ্যান নেভার'! কালার্স বাংলার কাছে এই জন্যে আমি কৃতজ্ঞ, যে আমায় তারা বেছে নিয়েছেন।
প্রশ্ন: বর্তমানে বিভিন্ন কাজে অভিনেতাদের ট্রোল করা হয়, এক্ষেত্রে আপনার ট্রোলারদের কী বলবেন?
ঋতুপর্ণা: কোনও মন্তব্য করতে চাই না।
প্রশ্ন: এখনও মহালয়া শোনেন বা দেখেন?
ঋতুপর্ণা: সময় বের করা খুব কঠিন হয় আসলে। তবে এবার ভোর ৫ টায় কালার্স বাংলার 'দেবী দশমহাবিদ্যা' দেখব।
প্রশ্ন: কোনও নস্টালজিয়া আছে মহালয়া নিয়ে?
ঋতুপর্ণা: আমার সবচেয়ে ভাল স্মৃতি হল যখন ঠাকুমা প্রতি বছর অ্যালার্ম দিয়ে রাখতেন মহালয়া শোনার জন্য। ছোটবেলার স্মৃতিগুলো মনে করিয়ে দেয় এটা। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠ আমার কানে বাজতে থাকে। আমরা সেসময় সকলে জানি যে, মা আসছে এবং এভাবেই বড় হয়েছি।
প্রশ্ন: আগের থেকে বর্তমান সময়ের মহালয়া, পুজো কতটা পাল্টেছে?
ঋতুপর্ণা: অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। আগে আমাদের একটা রেডিও ছিল। গোটা পরিবারের সকলে ঘুম থেকে উঠে একসঙ্গে মহালয়া শুনতাম। এখন ছোট পরিবারে সেই একতার অনুভূতিটাই সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে গেছে।
প্রশ্ন: এবারের পুজোর প্ল্যান কী?
ঋতুপর্ণা: সিঙ্গাপুর এবং কলকাতা মিলিয়ে আমার পুজো কাটবে এবার মূলত। সেই সঙ্গে মুম্বইয়ের বেশ কিছু পুজো প্যান্ডেলের আমি ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর। তাই সেখানেও যেতে হবে।
প্রশ্ন: বাইরে থাকলে কলকাতাকে কতটা মিস করেন?
ঋতুপর্ণা: কলকাতা আমার প্রথম প্রেম। তবে হ্যাঁ কাজের প্রয়োজনে বা ঘুরতে গেলে দেশের মধ্যেই বা, কখনও বাইরেও যেতে হতে। কিন্তু কলকাতা সব সময় আমার মনের মধ্যে থাকে।
প্রশ্ন: দুর্গা পুজো মানে কী আপনার কাছে?
ঋতুপর্ণা: দুর্গা পুজো আমার জীবনের সেরা উৎসব।
প্রশ্ন: পুজোয় চিট মিল করেন? পছন্দের খাওয়া- দাওয়া কোনগুলি?
ঋতুপর্ণা: পুজোর সময় কোনও ডায়েট করি না। যা ইচ্ছে হয় তাই খাই। বছরের অন্য দিনগুলি থেকে পুজোর দিনগুলি একেবারে আলাদা।
প্রশ্ন: ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর এবারের পুজোর 'ফ্যাশন মন্ত্রা' কী?
ঋতুপর্ণা: দুর্গা পুজোয় একটাই স্টাইল, সেটা হল শাড়ি। পুজোয় শাড়ি ছাড়া কিছু পরব না।
প্রশ্ন: সকলকে কোনও বিশেষ বার্তা দেবেন?
ঋতুপর্ণা: সকলকে শারদীয়ার অনেক শুভেচ্ছা। সুস্থ থেকে চুটিয়ে আনন্দ করুন। তবে অবশ্যই সাবধানে থাকবেন। সেই সঙ্গে এই পুজোয় সকলকে অনুরোধ করব, 'দেবী দশমহাবিদ্যা' দেখতে ভোর ৫টায়।