করোনার দ্বিতীয় প্রায় সব কিছুই ওলট-পালট করে দিয়েছে। অক্সিজেন-ওষুধের কালোবাজারি, হাসপাতালে বেড অমিল, আক্রান্ত-মৃতের মিছিলে মানুষ দিশেহারা। তাই শেষ অস্ত্র হিসাবে করোনার চেইন ভাঙতে লক ডাউনের রাস্তায় হাঁটল রাজ্য সরকার। জরুরি পরিবেষা ছাড়া সব কিছুই আগামী ১৫ দিনের জন্য বন্ধ। বন্ধ থাকবে টলিপাড়ার শুটিংও। তবে এই লকডাউনকে স্বাগত জানিয়েছেন টলিপাড়ার পরিচিত মুখরা। সিনেমা সিরিয়ালে অত্যন্ত ব্যস্ত অভিনেতা অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তী, সোহিনী সেনগুপ্ত, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নীল ভট্টাচার্য এ বিষয়ে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন আজতক বাংলাকে।
অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তী এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বলছেন, 'এটা তো অনেক আগেই হওয়ার দরকার ছিল। যা পরিস্থিতি তাতে এখটা লকডাউন প্রয়োজন ছিল। আমি পুরোপুরি এটা সমর্থন করছি। হ্যাঁ, অনেক অসুবিধা হবে জানি। আমাদের অেক টেকনিশিয়ান রয়েছেন, তাঁদের বিশেষ করে অসুবিধা হবে। তাঁদের কয়েক দিন কাজ না হলেই অসুবিধা হয়। তবে আমরা গত বছর দেখিয়ে দিয়েছি যে আমরা পারি। কাজেই একটু কষ্ট ১৫টা দিন কাটালে আমার মনে হয় অনেকগুলো প্রাণ বেঁচে যাবে।'
অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, 'মানুষকে বাঁচানোর জন্য যা করার সেটা করতে হবে। যদি সরকার ঠিক করে যে লকডাউন করে হবে, তা হলে তাই সই। হ্যআঁ আমাদের কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকবে, কিছু বাধ্যবাধকতা থাকবে, কিন্তু জীবনের চেয়ে কোনওটাই বেশই গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে একটু নয়, অনেকটা দেরি হয়ে গেল। আমার মনে হয় এর জন্য নির্বাচন কমিশনকে পুরোপুরি দায়ী করা উচিত। যখন বিজ্ঞানী বার বার বলছিলেন সেকেন্ড ওয়েভ থার্ড ওয়েভের কথা, তাঁরা সে সবে কান না দিয়ে রাজ্যে ভোটের ঘোষণা করে দিলেন। আমি কোনও দলের দোষ দেখছি না। কারণ নির্বাচন ঘোষণা হলে সব দল তার পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে জেতার জন্য। নির্বাচন যদি ৬ মাস বা এক বছর পিছিয়ে দেওয়া হত তবে এমন কী ক্ষতি হয় আমি বুঝতে পারছি না। যেখানে মানুষের বাঁচা মরা নির্ভর করছে এমন পরিস্থিতিতে। তবে বেটার লেট দ্যান নেভার।'
একই সুর অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত-র গলাতেও। তিনি বলছেন, 'করোনার চেইন কাটতে বন্ধ তো করা দরকার ছিলই। বেঁচে থাকলে তবে তো শুটিং। আর একটু আগে হলে হয়তো ভালো হত। আপাতত বেশ কয়েকদিনের শুটিং করা রয়েছে তা দিয়েই চলবে।'
কৃষ্ণকলি ধারাবাহিকের জনপ্রিয় মুখ নীল ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন অসুবিধা হলেও কঠিন সময়ে এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল। নীলের কথায়, 'অসুবিধা সকলেরই কমবেশি হবে। তবে এটা তো একটা কঠিন সময়, আমাদের সকলকে মিলে এটার সঙ্গে লড়তে হবে। আমরা জানি যে কারও কোনও চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্যা হলে কী ভাবে সমস্যা পড়তে হচ্ছে। চেইনটা ভাঙার জন্য দেশের বহু রাজ্যে লকডাউন হয়েছে। তাই এখানেও প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছি। সরকারের কাছে এ ছাড়া আর কোনও পথ খোলা ছিল বলে মনে হয় না। তা ছাড়া চেইনটা ভাঙার পরে আমরা আরও দৃঢ় ভাবে ফিরব। তত দিনে বহু মানুষের টিকাকরণও হয়ে যাবে। একটা বেটার ফিউচার ছাড়া আর কিছু আশা করছি না এ মুহূর্তে। এর চেয়ে বেশি আশা করার নেই।'