বাংলা জীবনমুখী গান মানেই যার কথা সবার আগে মাথায় আসে, তিনি হলেন নচিকেতা চক্রবর্তী (Nachiketa Chakraborty)। নয়ের দশকের তাঁর সব গান আজও হিট। বয়স নির্বিশেষে নচিকেতার গান থাকে সব সময় বাঙালি শ্রোতাদের প্রিয় প্লে-লিস্টে।
নচিকেতা, একাধারে গায়ক, গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক হিসাবে মন জয় করেছেন অসংখ্য মানুষের। সিঙ্গেলস অ্যালবাম ছাড়াও গেয়েছেন বহু ছবির নেপথ্য সঙ্গীত। আর সবেতেই একেবারে সেরা।
ডেবিউ অ্যালবাম 'এই বেশ ভাল আছি'-র মাধ্যমে নয়ের দশকের শুরুতে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। নচিকেতার 'নীলাঞ্জনা' কিংবা 'রাজর্ষি' সিরিজ তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়।
হিট লিস্টে রয়েছে 'বৃদ্ধাশ্রম', 'একদিন ঝড় থেকে যাবে', 'অনির্বাণ', 'কুয়াশা যখন', 'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে', 'ডাক্তার' সহ আরও বহু গান।
২০২১ সালে ৫৭ বছর পূর্ণ হল তাঁর। মাঝে বহুদিন অসুস্থতার জন্য গান গাওয়া থেকে বিরতি নিয়েছিলেন। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়েই 'আগুনপাখি' ব্যাক অন অ্যাকশন।
কিছুদিন আগে আজতক বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে নিজের এক্সপেরিমেন্টাল গান নিয়ে কথা বলেছিলেন তিনি। শিল্পীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, "যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে..." আপনার তৈরি গানটি নিয়ে সেই সময়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। নিন্দুকেরা তো বারবার প্রশ্ন তোলেন যে গানগুলি এইভাবে বিকৃত করা হচ্ছে!
উত্তরে তিনি বলেন, "মানুষ যেটা গ্রহণ করেন সেটাই ঠিক? গ্রহণ না করলে এক্সপেরিমেন্ট হবে কেন? তবে লোকের বলার কোনও মানে হয় না। অনেকে এখনও গরুর দুধে সোনা খুঁজে বেড়াচ্ছেন, এখনও গোমূত্র খাচ্ছেন, তাহলে আর কী করা যাবে? এক্সপেরিমেন্ট হবেই!"
নিজেকে 'প্রাইভেট কমিউনিস্ট' বলে দাবি করেন নচিকেতা। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমি কমিউনিস্ট কিন্তু আমি 'প্রাইভেট'! আমার কোনও দল নেই।"
এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, "তার মানে আপনি বামপন্থায় বিশ্বাসী?" উত্তর আসে, "হ্যাঁ, কিন্তু আমাদের দেশের বামপন্থীদের ওপর কোনও বিশ্বাস নেই আমার! বলতে পারেন আমি মার্ক্সসিস্ট, প্রাইভেট মার্ক্সসিস্ট।"
"আগে যে কোনও সামাজিক সমস্যায় আপনার গানের মধ্যে প্রতিবাদ উঠে আসতো। বর্তমানে রাজনৈতিক হিংসা হোক বা অতিমারী, সব মিলিয়ে খুব নেগেটিভ পরিবেশ। এই সময় কি আবার নচিকেতার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর আমরা শুনতে পাবো?"
এই প্রশ্নটি নচিকেতাকে করায়, তিনি বলেন, "যদি অতিমারীর কথা বলেন তাহলে এই নেগেটিভিটির জন্য একটা বিশেষ গোষ্ঠি দায়ী। আর যদি রাজনৈতিক হিংসা বলেন, সেটাও নানা রকম ভাবে চাপিয়ে দেওয়া ঘটনা। বিভিন্ন ফেক নিউজ ছেয়ে গেছে চারিদিকে।"