scorecardresearch
 

EXCLUSIVE: 'মনে হত ওঁকে আগলে রাখি, বললেন,' অপর্ণা সেন

''১৪ বছর বয়সে আমার আলাপ ওনার সঙ্গে, যখন প্রথম শুনলাম ওনার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি। আমার ক্লাসের সমস্ত মেয়েরা পাগল ছিল ওনার প্রতি।''

Advertisement
অপর্ণা-সৌমিত্র 'বহমান' ছবির প্রমোশনে অপর্ণা-সৌমিত্র 'বহমান' ছবির প্রমোশনে
হাইলাইটস
  • ''গতকাল দীপাবলি ছিল, আজকে যেন সমস্ত আলো একসঙ্গে নিভে গেল। নতুন করে কিছু আর বলার নেই...''
  • ''১৪ বছর বয়সে আমার আলাপ ওনার সঙ্গে, যখন প্রথম শুনলাম ওনার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি''
  • ''সৌমিত্র বললেন 'দাদা তো বলতে পারো' ..... আমি বললাম কাকা থেকে দাদা হয় না''

বিশ্বজোড়া অনুরাগীদের কাঁদিয়ে, পাঁচ সপ্তাহের লড়াই শেষে দিকশূন্যপুরের দিকে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণের সঙ্গে শেষ হল ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক অধ্যায়। পরিচালক-অভিনেতা অপর্ণা সেনের প্রথম নায়ক ছিলেন তিনিই। এদিন গলা বুজে আসছিল তাঁরও। তিনি বললেন, ''যদি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় কে না পাওয়া যেত, সত্যজিৎ রায়ের পক্ষেও অপুর সংসার করা সম্ভব হত বলে আমার মনে হয় না। এখন মনে আছে যে গতকাল দীপাবলি ছিল, আজকে যেন সমস্ত আলো একসঙ্গে নিভে গেল। নতুন করে কিছু আর বলার নেই... কিন্তু আমি ইদানিংকালে ওনার সঙ্গে দুটি ছবি পরপর করলাম।''

স্মৃতিচারণায় অপর্ণা সেন বললেন, ''১৪ বছর বয়সে আমার আলাপ ওনার সঙ্গে, যখন প্রথম শুনলাম ওনার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে তখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি। আমার ক্লাসের সমস্ত মেয়েরা পাগল ছিল ওনার প্রতি। প্রথম যেদিন ওকে দেখলাম শুটিংয়ের সময়.... আমি একটা গল্পের বই নিয়ে বসে ছিলাম বারান্দায়। উনি গরুর গাড়ি চেপে আসছিলেন, মনে হল ঠিক যেন অপু আসছে, চোখাচোখি হতেই বসে পড়লাম যাতে আমাকে না দেখতে পান।''

'বসু পরিবার' ছবির একটি দৃশ্যে সৌমিত্র-অপর্ণা।
'বসু পরিবার' ছবির দৃশ্যে সৌমিত্র-অপর্ণা

অপর্ণা জানালেন, (গলাটা যেন কেঁপে উঠল) ''আমার স্বপ্নের নায়ক এগিয়ে আসছেন। আমার বাবা-মার সঙ্গে খুব ভাব ছিল। আমি সৌমিত্র কাকু বলতাম। আমাদের বাড়িতে খুব আসতেন উদার্ত কণ্ঠে কবিতা, আবৃত্তি...। আমরাও যেতাম ওদের বাড়িতে। তবে সে সময় আমাকে বেশি পাত্তা দিতেন না। ছোট মেয়ে বলেই ভাবতেন। এরপর একবার স্টেজে সৌমিত্র বললাম। তারপর উনি বললেন 'দাদা তো বলতে পারো' ..... আমি বললাম কাকা থেকে দাদা হয় না। খুব মনে পড়ছে সেসব কথা। সবচেয়ে বড় কথা উনি আমাদের এত দিয়েছেন নাটক, ছবি আঁকা, কবিতা লেখা ....। আমি বলতাম, তুমি সিনেমা পরিচালনা করো না কেন?  শুধু 'স্ত্রীরপত্র' করে ছেড়ে দিলে...।'' 

Advertisement

কিংবদন্তী এই পরিচালকের মনে হয় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষ একজন পরিচালককে হারিয়েছে শুধুমাত্র সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ডিরেকশন দিল না বলে। কান্না ভেজা গলায় পরিচালক বললেন, ''উনি বলতেন আমি নাটক করি। ওনার নাটক তো খুবই অন্য ধরনের আমি যেতাম ওনার নাটক দেখতে। পারস্পরিক শ্রদ্ধার জায়গাটা ছিল। পরে বহমান এবং বসু পরিবার করতে গিয়ে দেখলাম অসুস্থ, দুর্বল, ৪ ঘন্টা শুটিং করেন। কিছুটা আর্থিক কারণও ছিল। তখন আমার মায়া লাগতো। আমি ওঁর সম্বন্ধে প্রোটেক্টিভ হয়ে গিয়েছিলাম। শুধু মনে হতো ওঁকে আগলে রাখি। আগলে তো রাখা যায় না কেউ তো পারল না। চলে গেলেন।'',

Advertisement