scorecardresearch
 

EXCLUSIVE:'নির্বাচনের নামে সার্কাস, সেখানে ক্লাউন ইন্ডাস্ট্রির লোকজন'

নিজেদের মতো নিজেদের গান, আজকের দিনে অসম্ভব সাহসী একটি নিবেদন পরিচালকদ্বয় ঋতব্রত-ঋদ্ধির। হাজির অর্ধেক টলিউড। গানটি সদ্য মুক্তি পেয়েছে। গানের কথা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। কেন এমন গান, তা নিয়ে আজতক বাংলা-কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন মিউজিক ভিডিওর অন্যতম পরিচালক অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।

Advertisement
ঋদ্ধি সেন এবং ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। ঋদ্ধি সেন এবং ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়।
হাইলাইটস
  • নিজেদের মতো নিজেদের গান, আজকের দিনে অসম্ভব সাহসী একটি নিবেদন
  • হাজির অর্ধেক টলিউড। গানটি সদ্য মুক্তি পেয়েছে
  • গানের কথা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের

নিজেদের মতে নিজেদের গান, আজকের দিনে অসম্ভব সাহসী একটি নিবেদন পরিচালকদ্বয় ঋতব্রত-ঋদ্ধির। হাজির অর্ধেক টলিউড। গানটি সদ্য মুক্তি পেয়েছে। গানের কথা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। কেন এমন গান, তা নিয়ে আজতক বাংলা-কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন মিউজিক ভিডিওর অন্যতম পরিচালক অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়

 

প্রশ্ন: অনির্বাণ এই কবিতাটি এর আগেও কিছু অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেছেন। গান হয়ে আসতে এত সময় লাগল কেন?
ঋতব্রত: ঠিকই বলেছেন। এই কবিতাটি প্রেসিডেন্সি এবং কোরাস নামে একটি অনুষ্ঠানে অনির্বাণ দা আবৃত্তি করেছেন। তবে লাইনগুলি একটু আলাদা ছিল। গানের কথাগুলি একটি পরিবর্তিত হয়েছে। গত বছর মার্চ মাসে কোরাসের অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু তার পর পরই লকডাউন হয়ে যায়। ফলে গত বছর ভিডিও শুট করার ইচ্ছে থাকলেও করা যায়নি। তাই একটু দেরি হল। তা ছাড়া করোনার সময় আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি। ভিডিওতে রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত রয়েছেন, অরুণ মুখোপাধ্যায় রয়েছেন, সব্যসাচী চক্রবর্তী রয়েছেন, আমার বাবা, কৌশিক সেন, চন্দন সেন এঁরা সকলেই রয়েছেন। এঁদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে যতটা সম্ভব সাবধানতার সঙ্গে এগোনো প্রয়োজনছিল। সে জন্য এক বছর সময় লেগে গেল। এক দিকে ভালোই হল, নির্বাচনের নামে সার্কাস চলছে, যেখানে আমার ইন্ডাস্ট্রির বহু লোকজন একেবারে ক্লাউনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। সে সময় এমন একটা গান, এমন একটা ভিডিওর খুব প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি।

 

প্রশ্ন: গানে দেখা যাচ্ছে দেশের বড় সমস্যাগুলিকে নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন সেখানে কতটা প্রাসঙ্গিক?
ঋতব্রত: আসলে আমরা একটা বিগার পিকচার ধরতে চেয়েছি। গ্যাস বা জ্বালানির দাম বাড়লে দেশের সকলেই অসুবিধায় পড়ছেন। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ আলাদা নয়। এ রাজ্যেও অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র রাজ্যের নিরিখে করলে সেটা খুব তাৎক্ষণিক একটা ইমপাল্স থেকে করা হত এবং তার সেটার ইমপ্যাক্টও কম সময়ের জন্য থাকত বলে মনে হয়েছে আমাদের। আমাদের পরিকল্পনাই ছিল আমরা একটা বিগার পিকচার ধরব। ন্যাশনাল অ্যাপ্রোচ থাকবে। সে জন্যই আমরা ইংরেজিতে সাবটাইটেল রেখেছি। যতটা পেরেছি সমস্ত জনবিরোধী বিষয়কে ধরার চেষ্টা করেছি।

Advertisement

 

প্রশ্ন: এই ইন্ডাস্ট্রির অঙ্গ হিসাবে আজকের দিনে এমন বিষয় নিয়ে কাজ করতে ভয় করেনি?
ঋতব্রত: ভয় করেছে বলেই কাজটা করেছি। জেনারেশন আফটার জেনারেশন কারও কোনও কিছু নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই। দেশে এতকিছু হচ্ছে কারও কোনও প্রতিবাদ, হেলদোল নেই। এঁরা এতটাই পিঠ বাঁচিয়ে চলেন যে শিশু ধর্ষণের বিরুদ্ধে কোনও মিছিলে পা মেলাতেও ভয় পান। সেখানে এমন কাজ করতেই হবে। কাউকে না কাউকে তো বলতেই হবে। অভিনয় বাদ দিলেও আমি একশো রকম কাজ করতে পারি, আমি সেটা করে জীবন চালিয়ে দিতে পারব। যদি আমার স্পষ্ট মতামত থাকার কারণে কেউ কাজ না দেন, তা হলে তেমন মানুষের কাজ না করে খুব খুশি হবো। ফাঁকা কলসি মার্কা কাজ করব না।

 

প্রশ্ন: ভিডিওতে আর কাকে খুব প্রয়োজন ছিল বলে মনে হয়?
ঋতব্রত: ভীষণ ভাবে মনে করি এখানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের খুব প্রয়োজন ছিল। তিনি দেখিয়ে গিয়েছেন সুপারস্টার হয়েও আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়া যায়। পরম দার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলছিলাম, পরম দা-ও একই কথা বলেছে, ভয় করছে বলেই কাজটা করেছি। এই ভিডিওতে যাঁরা যাঁরা মুখ দেখিয়েছেন তাঁরা এই নির্বাচনী সার্কাসের অঙ্গ নন। কাউকে এ দল সে দলের জার্সি পরতে দেখা যায়নি। প্রত্যেকের একটা স্ট্যান্ড পয়েন্ট রয়েছে, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। আমরা কেমন দেশে বাস করছি একবার ভেবে দেখুন। যেখানে গত ৬-৭ মাস ধরে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধুমাত্র দলীয় প্রচার করে যাচ্ছেন। তাঁদের আর কোনও কাজ নেই? প্রায় প্রত্যেক দিন প্লেন হেলিকপ্টারে চেপে প্রচার করতে আসছেন! হাস্যকর।

 

প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন, এতটা সাহস জোগাড় করলেন কী ভাবে?
ঋতব্রত: আজকের দিনের নিরিখে বিচার করে দেখুন, পরম দা, অনির্বাণ দা, অরুণোদয় দা, অনুপম রায়, রূপঙ্কর বাগচী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, এঁদের মতো মানুষ যখন এগিয়ে এসে কাজে হাত লাগান, তখন সাহস পাই। এঁদের তো হারানোর অনেক কিছু রয়েছে। তাও যেটা ঠিক, যেটা তাঁদের স্ট্যান্ড পয়েন্ট, তার জন্য মন থেকে কাজ করেছেন। এর জন্য সাহস পেয়েছি। আমার বাবা, কৌশিক কাকা এঁরা সকলেই সাহস দিয়েছেন। কখনও পিছিয়ে যেতে বলেননি। আমার গুরু চন্দন সেন রয়েছেন ভিডিওতে। আরও অনেকে থাকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ডেটের সমস্যায় থাকতে পারেননি, এঁদের সকলের জন্য সাহস পেয়েছি। যা হবে দেখা যাবে। লাজিম হ্যায় হম ভি দেখেঙ্গে... হম দেখেঙ্গে...

 

Advertisement