
বামাক্ষ্যাপার চরিত্রে সকলের মন জয় করার পরে, সাধক রামপ্রসাদ রূপে ছোট পর্দায় ফিরেছিলেন সব্যসাচী চৌধুরী। ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পরে মাঝে দীর্ঘ বিরতি। অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছিলেনতাঁকে পর্দায় না দেখতে পেয়ে। তাদের জন্য রয়েছে দারুণ খবর। 'সাধক বামাক্ষ্যাপা' রূপেই ফের ফের পর্দায় ফিরছেন সব্যসাচী। তবে এবার আর টেলিভিশন নয়। বড় পর্দায় বামদেবের বেশে ধরা দেবেন অভিনেতা।
শুক্রবার এসভিএফ-এর 'গল্পের পার্বণ ১৪৩২' অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হয় এই খবর। এই প্রযোজনা সংস্থার ব্যানারেই আসছে নতুন ছবি 'সাধক বামাক্ষ্যাপা'। পরিচালনায় সায়ন্তন ঘোষাল। প্রকাশ্যে আসা ছবির পোস্টারে সব্যসাচীর ঝলক দেখা গিয়েছে। দেবী তারার বিগ্রহের সামনে, গাল ভর্তি গোঁফ-দাড়ি, গলায় রূদ্রাক্ষের মালা পরে হোম কুন্ডে হোম করছেন বামাক্ষ্যাপা-সব্যসাচী। সাধকের রহস্যময় জীবন, আধ্যাত্মিকতা ও বিশ্বাসের ছবি ফুটে উঠবে এই ছবিতে।
বামাক্ষ্যাপার জন্ম বীরভূম জেলায়। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সমসাময়িক। হিন্দু তান্ত্রিক বামাক্ষ্যাপা, মা তারার ভক্ত ছিলেন। মা তারাকে তিনি 'বড় মা' বলে ডাকতেন। তারাপীঠেই দ্বারকা নদের তীরে যোগ ও তন্ত্রসাধনা করতেন তিনি। ভক্তরা বিশ্বাস করত যে, তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা আছে। বামাক্ষ্যাপা মন্দিরের নিয়মকানুন মানতেন না। এমনকী দেবতার থালা থেকেই নৈবেদ্য তুলে খেতেন।
কথিত আছে, নাটোরের মহারানীকে স্বপ্নে দেবী তারার প্রত্যাদেশ পান যে, দেবীপুত্র বলে বামাক্ষ্যাপাকে যেন আগে খাওয়ানো হয়। এরপর থেকে মন্দিরে পুজোর আগেই বামাক্ষ্যাপাকে নৈবেদ্য প্রদান এবং তাঁকে অবাধে মন্দিরে বিচরণ করতে দেওয়া হত। আরও শোনা যায়, মা তারা ভয়ংকর বেশে বামাক্ষ্যাপাকে দর্শন দিয়েছিলেন এবং পরে মাতৃবেশে কোলে তুলে নিয়েছিলেন। তারাপীঠ শ্মশানে ও দুমকা জেলার মালুটি গ্রামের বামাক্ষ্যাপার স্মৃতিমন্দির আছে।
কথিত আছে সাধক বামাক্ষ্যাপা, ১২৭৪ বঙ্গাব্দে কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ধ্যানমগ্ন বামাক্ষ্য়াপা কৌশিকী অমাবস্যায় তারা মায়ের আবির্ভাব পান। এছাড়াও শোনা যায়, এই তিথিতে কৌশিকী রূপে মা তারা বিশেষ সন্ধিক্ষণে, শুম্ভ- নিশুম্ভ নামক অসুরদের দমন করেছিলেন।