তারকাদের নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তার মধ্যে টলিপাড়ার নায়িকাদের জীবনে কখন কী ঘটছে, তা নিয়ে সকলের মধ্যে থাকে বাড়তি কৌতূহল। বিশেষত তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন- পরিবারের দিকে অনেকের নজর থাকে। বহু মানুষ জানতে চান তাদের পছন্দের তারকার ছেলে- মেয়েরা কী করেন, তাঁরাও কী অভিনয় পেশার সঙ্গে যুক্ত হবেন?
প্রায় দুই দশকের বেশি সময় ধরে নিজের অসামান্য অভিনয় দক্ষতার জন্য সকলের মন জয় করছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। একাধিক চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের মাধ্যমে বারবার দর্শকদের মন ছুঁয়েছেন। বড় পর্দা থেকে শুরু করে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম- টলিউডের পাশাপাশি বলিউডেও দাপিয়ে কাজ করছেন অভিনেত্রী। স্বস্তিকার এক মেয়ে। কী করেন তিনি? মায়ের মতো কি অভিনেত্রীর কন্যাও বিনোদন দুনিয়ায় পা রাখবেন?
সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল পেজে ১৪- ১৫ বছর আগের একটি ছবি শেয়ার করেছেন স্বস্তিকা। লন্ডনে মেয়ের সঙ্গে গিয়েছিলেন সেসময়। ছবির সঙ্গে নস্ট্যালজিয়া ভাগ করে নিয়েছেন সকলের সঙ্গে। জানিয়েছেন, মেয়ে কতটা কষ্ট করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। অভিনেত্রী লিখেছেন, "কত ছোট তখন আমরা মা মেয়ে দু'জনেই। আমি কাজের সূত্রে যেখানেই যেতাম, ছানার স্কুল ছুটি থাকলে সেও মায়ের সঙ্গে ড্যাং ড্যাং করতে রাজি। আমার ঠিক মনে পড়ে না, মানি একটু বড় হওয়ার পর আমি ওকে ছাড়া তেমন একটা কোথাও গেছি বলে। মানির সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল ইংল্যান্ড। এত জায়গায় গেছে বেড়াতে কিন্তু উ.কে গেলেই বলত, মা এখানে আমি একদিন পড়াশোনা করতে আসব। তারপর চাকরি করব, তুমি এখানে এসে আমার কাছে থাকবে।"
আরও পড়ুন: এগিয়ে কে? জানুন পুজোর কোন বাংলার ছবির বক্স অফিস কালেকশন কেমন
নায়িকা আরও লেখেন, "তুমি তো তখন বুড়ি হয়ে যাবে, একা একা তো থাকতে পারবে না। আমাদের দু'জনেরই মিউজিয়াম, ইউনিভার্সিটি, কলেজ এসব ঘুরে দেখার শখ। ট্যুরিস্টরা বেড়াতে গেলে বেশিরভাগ সময়ে সাইট সিইং, খাওয়া দাওয়া, কেনাকাটা এসব কে গুরুত্ব দেয়। আমরা দু'জন গন্তব্যস্থলে পৌঁছে সেখানকার মানুষদের সঙ্গে গপ্প করে ওরা কোথায় ঘুরতে যায়, ওদের দেশে সেগুলো খুঁজে বের করে সেখানে গেছি। বাস স্ট্যান্ডে অপেক্ষায় থাকা লোকালদের জিজ্ঞেস করে এমন সব জায়গা আবিষ্কার করেছি ভাবার বাইরে। একটা গোটা দিন কলেজ পাড়ায় ঘুরে বেরিয়েছি আর নিজেকে বলেছি, দেশে ফিরে আরও অনেক মন দিয়ে কাজ করতে হবে, সন্তানের যেখানে পড়ার ইচ্ছে সেটা যেন মা হয়ে পূরণ করতে পারি।"
আরও পড়ুন: বাজিমাত করে বেঙ্গল টপার জিতু- দিতিপ্রিয়ার সিরিয়াল, বাকিদের স্কোর কেমন?
অভিনেত্রী যোগ করেন, "মানি সাইকোলজি তে এম.এস. সি করে এখন কার্ডিফ থেকে লন্ডনে পাড়ি দিল। নিজের চেষ্টায় সফল হয়েছে। পড়াশোনায় ভাল রেজাল্ট করে বিশ্বের এত বড় একটা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে। মাসের পর মাস চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিয়ে দিয়ে ফাইনালি ওর মনের মতো একটা চাকরি পেয়েছে ওর প্রাণের শহরে। খালি বাড়ি আসার সময়টা বের করে ফেললেই হবে। সন্তানেরা যা হওয়ার স্বপ্ন দেখে তার দিকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে দেখাতেই সর্ব সুখ। আমার মেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে আমায় ধন্যবাদ দিতে এলেই বলি, সব তুমি করেছ মা আমার, বিদেশ বিভূইয়ে একা থেকেছ, প্রচুর পরীক্ষা দিয়েছ, অনেক খেটেছ, সবটা তোমার প্রাপ্য, মা হয়ে আমি পেছনে বট গাছের মতন ছায়া দিয়েছি খালি, ওটাই আমার কাজ, আর কিছু করিনি। সন্তানদের স্বপ্ন পূরণ হোক, ওদের জীবনে আলো থাক, আতশবাজি থাক, মায়েরা আশ্রয় হয়ে থাক, বট গাছের মতো। দুগ্গা দুগ্গা। ছবিটা ফেসবুক মনে করাল, ১৪/১৫ বছর আগের, লন্ডনে।"
আরও পড়ুন: ঘরোয়া পার্টিতে একজোট তারকারা! জমজমাট পুজোর আড্ডায় কী কী হল?
প্রসঙ্গত, মনের কথা অকপটেই বলে ফেলেন নায়িকা। সেজন্যে প্রায়শই থাকেন জল্পনার শীর্ষে। নিন্দুকরা শত কটূকথা বললেও, 'কেয়ার নট অ্যাটিটিউটই' রাখতে পছন্দ করেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। এই আচরণের জন্যেই তিনি বহু মানুষের মনের খুব কাছের। টলিউডের পাশাপাশি জমিয়ে কাজ করছেন বি- টাউনেও। এজন্যে মুম্বইতে তাঁর যাতায়াত লেগেই থাকে। মায়ানগরীতেও তাঁর কাজ যথেষ্ট প্রশংসিত। ১৯৯৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাগর সেনের ছেলে, প্রমিত সেনের সঙ্গে স্বস্তিকার বিয়ে হয়। কিন্তু বৈবাহিক জীবন একদমই সুখকর হয়নি অভিনেত্রীর। গর্ভবতী অবস্থায়ও শিকার হতে হয়েছে নির্যাতনের। বিয়ের দু' বছরের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। প্রমিত- স্বস্তিকার একমাত্র মেয়ে অন্বেষা। মা- মেয়ের নানা মুহূর্তের সাক্ষী থাকে নেটিজেনরা।